ইসলামপুর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
(হালনাগাদ)
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''ইসলামপুর উপজেলা''' ([[জামালপুর জেলা|জামালপুর জেলা]])  আয়তন: ৩৪৩.০২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫৭´ থেকে ২৫°১০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩৮´ থেকে ৮৯°৫৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে মাদারগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলা, পূর্বে শেরপুর সদর ও শ্রীবর্দি উপজেলা, পশ্চিমে সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সারিয়াকান্দি উপজেলা।
'''ইসলামপুর উপজেলা''' ([[জামালপুর জেলা|জামালপুর জেলা]])  আয়তন: ৩৫৩.৩১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫৭´ থেকে ২৫°১০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩৮´ থেকে ৮৯°৫৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে মাদারগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলা, পূর্বে শেরপুর সদর ও শ্রীবর্দি উপজেলা, পশ্চিমে সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সারিয়াকান্দি উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ২৮৯৩৩৭; পুরুষ ১৪৮১৫৮, মহিলা ১৪১১৭৯। মুসলিম ২৮৪৯৮০, হিন্দু ৪১৮১, বৌদ্ধ ১২, খ্রিস্টান ১০ এবং অন্যান্য ১৫৪।
''জনসংখ্যা'' ২৯৮৪২৯; পুরুষ ১৪৮৪৩৯, মহিলা ১৪৯৯৯০। মুসলমান ২৯৪১৬১, হিন্দু ৪১৪৬, খ্রিষ্টান ৩ এবং অন্যান্য ১১৯।


''জলাশয়'' প্রধান নদ-নদী: যমুনা, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, বাঙ্গালী নদী। বামনা বিল, বাকর বিল, শিংভাঙ্গা বিল, হাসাল বিল, বানুর বিল, চিলমারী ও রিয়ার বিল এবং কাটাখালী ও দশানী খাল উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' প্রধান নদ-নদী: যমুনা, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, বাঙ্গালী নদী। বামনা বিল, বাকর বিল, শিংভাঙ্গা বিল, হাসাল বিল, বানুর বিল, চিলমারী ও রিয়ার বিল এবং কাটাখালী ও দশানী খাল উল্লেখযোগ্য।
১৭ নং লাইন: ১৭ নং লাইন:


|-
|-
| ১ || ১২ || ৮৬  || ১৪৩  || ৩৫৪২৭  || ২৫৩৯১০  || ৮৪৩  || ৩৯.০  || ২১.৩
| ১ || ১২ || ৭২ || ১৩০ || ৩৮৫৬৮ || ২৫৯৮৬১ || ৮৪৫ || ৪৭.|| ২৭.৩


|}
|}
২৭ নং লাইন: ২৭ নং লাইন:


|-
|-
| ১৬.৭১  || ৯ || ১৮ || ৩৫৪২৭  || ২১২০  || ৩৯.০৫
| ১৬.৬৬ || ৯ || ১৮ || ৩৮৫৬৮ || ২৩১৫ || ৪৭.


|}
|}
৩৯ নং লাইন: ৩৯ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| ইসলামপুর ৫৫ || ৫৫১৪  || ৮৯৭৯ || ৮৬৫৪  || ২১.১৭
| ইসলামপুর ৫৫ || ৩৭১৭ || ৮৬৩০ || ৮৮৭৯ || ৩০.
 
|-
|-
| কুলকান্দি ৬৩ || ৭০২৪ || ৬৯২২ || ৬৭৭০  || ২৭.২০
| কুলকান্দি ৬৩ || ৭০২৪ || ৫২২১ || ৫৬০৪ || ৩১.
 
|-
|-
| গাইবান্ধা ৩৯ || ৮৯৭১  || ১৫১৫৯ || ১৪৭১১  || ১৫.৫৬
| গাইবান্ধা ৩৯ || ৮৮৭১ || ১৬২২৫ || ১৫৫৫৫ || ২৬.
 
|-
|-
| গোয়ালের চর ৪৭ || ৬১৯১  || ১২৬০৪ || ১২০৪৩  || ১৬.৪৪
| গোয়ালের চর ৪৭ || ৭৫৯১ || ১৪৬৭৩ || ১৪৫৩৪ || ২১.
 
|-
|-
| চর গোয়ালিনী ১৫ || ৮৬৮১  || ৮৪৩৮ || ৭৮৭০  || ১১.৫৬
| চর গোয়ালিনী ১৫ || ৪৩৯২ || ৯১৭৪ || ৯১০৮ || ১৯.
 
|-
|-
| চর পুটিমারী ২৩ || ৬০০৫  || ১৪০৩৯ || ১৩১৮৭  || ১৪.৮৫
| চর পুটিমারী ২৩ || ৮৫৮৫ || ১৫০১৭ || ১৪৫৭১ || ২১.
 
|-
|-
| চীনাডুলি ৩১ || ৫৯৩৩ || ১২২৬৪ || ১২০১১  || ৩১.৮৮
| চীনাডুলি ৩১ || ৫৯৩৩ || ১২৪৮৮ || ১৩২৫৬ || ৩৪.
 
|-
|-
| নোয়ারপাড়া ৭১ || ৯৫৬৪  || ১৪৯০১ || ১৩৭৯৪  || ২১.০৭
| নোয়ারপাড়া ৭১ || ৮২১৭ || ১২৭৬৭ || ১২৮৩২ || ২৪.
 
|-
|-
| পাথর্শী ৮৭ || ৫৩৫০  || ১৩৭৪১ || ১৩২৫১  || ৩২.৯২
| পাথর্শী ৮৭ || ৮৪৫১ || ১৩৮০২ || ১৪২০৭ || ৩৮.
 
|-
|-
| পলবান্ধা ৭৯ || ৫১৯৯  || ৫৭৭২ || ৫৪৩৮  || ২৫.৪৪
| পলবান্ধা ৭৯ || ৩৭৪৪ || ৬৭৭৫ || ৬৬১৪ || ৩৫.
 
|-
|-
| বেলগাছা ১৩ || ৮৭৪৬  || ১০৭৬৫ || ১০৩৯০  || ১৯.০৪
| বেলগাছা ১৩ || ৮৩১২ || ১০০৬৬ || ১০৭৩৩ || ২৩.
 
|-
|-
| সাপধরী ৯৪ || ৭৫৮০  || ৬৪৭৪ || ৫৭৩৩  || ১৫.১৬
| সাপধরী ৯৪ || ৮৩৫২ || ৪৫৭০ || ৪৫৬০ || ১৮.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' হযরত  শাহ্ কামালের (রঃ) মাযার (দুরমুঠ), প্রদ্যোৎঠাকুরের কুঠিবাড়ি, জিউ মন্দির, কালী মন্দির, দূর্গাবাড়ি এবং ইটাপীরের মাযার।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' হযরত  শাহ্ কামালের (রঃ) মাযার (দুরমুঠ), প্রদ্যোৎঠাকুরের কুঠিবাড়ি, জিউ মন্দির, কালী মন্দির, দূর্গাবাড়ি এবং ইটাপীরের মাযার।
৮২ নং লাইন: ৭১ নং লাইন:
[[Image:IslampurUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
[[Image:IslampurUpazila.jpg|thumb|400px|right]]


''মুক্তিযুদ্ধ''  ১৯৭১ সালের এপ্রিলের শেষদিকে মুক্তিযোদ্ধাসহ উপজেলার শতাধিক ব্যক্তি প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তবে পাকবাহিনীর বিপুল অস্ত্রসহ হামলায় তারা টিকতে পারেনি। প্রতিরোধযুদ্ধে ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা পাকবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে ও নিহত হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা ব্রহ্মপুত্র নদীপথে আসা-যাওয়া করা পাকবাহিনীর নৌযান আক্রমণ করে প্রায়ই তাদের অভিযানে বিঘ্ন ঘটাতো। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধারা বুরুঙ্গি বিল ও ইসলামপুর এক্সচেঞ্জ অফিসে অভিযান পরিচালনা করে। উপজেলায় ৩টি স্থানে কুলকান্দি, উপজেলা কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে ও মোশারফগঞ্জে গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ৩ (কুলকান্দি, উপজেলা কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে, মোশারফগঞ্জ)।
''বিস্তারিত দেখুন'' ইসলামপুর উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১।
 
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৩২৫, মন্দির ১১।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ২৩.%; পুরুষ ২৭.%, মহিলা ১৯.%। কলেজ ৮,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫০, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২, কেজি স্কুল ৮, ব্র্যাক স্কুল ৭৪, মাদ্রাসা ৮৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:  ঢেংগারগড় নুরুল হুদা আলিম মাদ্রাসা (১৮৩১), ইসলামপুর নেকজাহান উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), ইসলামপুর জে জে কে এম গার্লস হাই স্কুল এন্ড কলেজ (১৯১৭), দেওয়ানগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), নীলক্ষিয়া আর.জে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৫), ইসলামপুর কলেজ (১৯৭০)।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৩২৫, মন্দির ১১।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩০.%; পুরুষ ৩৩.%, মহিলা ২৬.%। কলেজ ৮,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫০, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২, কেজি স্কুল ৮, ব্র্যাক স্কুল ৭৪, মাদ্রাসা ৮৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:  ঢেংগারগড় নুরুল হুদা আলিম মাদ্রাসা (১৮৩১), ইসলামপুর নেকজাহান উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), ইসলামপুর জে জে কে এম গার্লস হাই স্কুল এন্ড কলেজ (১৯১৭), দেওয়ানগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), নীলক্ষিয়া আর.জে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৫), ইসলামপুর কলেজ (১৯৭০)।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' সাপ্তাহিক: ঊর্মি বাংলা, সাপ্তাহিক গাঙচিল, ময়ূখ (অনিয়মিত)।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' সাপ্তাহিক: ঊর্মি বাংলা, সাপ্তাহিক গাঙচিল, ময়ূখ (অনিয়মিত)।
১০৩ নং লাইন: ৯৩ নং লাইন:
''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, নারিকেল, কলা, পেঁপে।
''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, নারিকেল, কলা, পেঁপে।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৭৭.৮৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৫.৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৩৮ কিমি; রেলপথ ২০ কিমি।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকা রাস্তা ১১৬ কিমি, আধাপাকা রাস্তা ৪ কিমি, কাঁচা রাস্তা ৪৭৮ কিমি; রেলপথ ১৫ কিমি; নৌপথ ২৫ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' সোয়ারী, পালকি, বজরা, ভেলা।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' সোয়ারী, পালকি, বজরা, ভেলা।
১১৫ নং লাইন: ১০৫ নং লাইন:
''কুটিরশিল্প'' স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, কাঁসাশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ, পাট ও তুলার কাজ।
''কুটিরশিল্প'' স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, কাঁসাশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ, পাট ও তুলার কাজ।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১১.০৪% (শহরে ২৬.৫২% এবং গ্রামে ৮.৮৪%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৮.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯১.৯১%, ট্যাপ ০.১৯%, পুকুর ০.৩৪% এবং অন্যান্য .৫৫%।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৫.%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য .%।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' ১৫.৪৮% পরিবার (শহরে ২১.১৩% এবং গ্রামে ১৪.৬৮%) স্বাস্থ্যকর এবং ৫৪.৪০% পরিবার (শহরে ৫৩.৯৬% এবং গ্রামে ৫৪.৪৬%) অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩০.১২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' ৪৬.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪১.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১২.% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, ক্লিনিক ৬, কমিউনিটি ক্লিনিক ৪০।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, ক্লিনিক ৬, কমিউনিটি ক্লিনিক ৪০।
১২৫ নং লাইন: ১১৫ নং লাইন:
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা।  [সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী]
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা।  [সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী]


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ইসলামপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ইসলামপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Islampur Upazila]]
[[en:Islampur Upazila]]

১৫:৩৬, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

ইসলামপুর উপজেলা (জামালপুর জেলা)  আয়তন: ৩৫৩.৩১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫৭´ থেকে ২৫°১০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩৮´ থেকে ৮৯°৫৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে মাদারগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলা, পূর্বে শেরপুর সদর ও শ্রীবর্দি উপজেলা, পশ্চিমে সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সারিয়াকান্দি উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৯৮৪২৯; পুরুষ ১৪৮৪৩৯, মহিলা ১৪৯৯৯০। মুসলমান ২৯৪১৬১, হিন্দু ৪১৪৬, খ্রিষ্টান ৩ এবং অন্যান্য ১১৯।

জলাশয় প্রধান নদ-নদী: যমুনা, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, বাঙ্গালী নদী। বামনা বিল, বাকর বিল, শিংভাঙ্গা বিল, হাসাল বিল, বানুর বিল, চিলমারী ও রিয়ার বিল এবং কাটাখালী ও দশানী খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ইসলামপুর  থানা গঠিত হয় ১৯১৪ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১২ ৭২ ১৩০ ৩৮৫৬৮ ২৫৯৮৬১ ৮৪৫ ৪৭.৯ ২৭.৩
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৬.৬৬ ১৮ ৩৮৫৬৮ ২৩১৫ ৪৭.৯
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
ইসলামপুর ৫৫ ৩৭১৭ ৮৬৩০ ৮৮৭৯ ৩০.৩
কুলকান্দি ৬৩ ৭০২৪ ৫২২১ ৫৬০৪ ৩১.০
গাইবান্ধা ৩৯ ৮৮৭১ ১৬২২৫ ১৫৫৫৫ ২৬.৫
গোয়ালের চর ৪৭ ৭৫৯১ ১৪৬৭৩ ১৪৫৩৪ ২১.৩
চর গোয়ালিনী ১৫ ৪৩৯২ ৯১৭৪ ৯১০৮ ১৯.১
চর পুটিমারী ২৩ ৮৫৮৫ ১৫০১৭ ১৪৫৭১ ২১.৮
চীনাডুলি ৩১ ৫৯৩৩ ১২৪৮৮ ১৩২৫৬ ৩৪.৯
নোয়ারপাড়া ৭১ ৮২১৭ ১২৭৬৭ ১২৮৩২ ২৪.০
পাথর্শী ৮৭ ৮৪৫১ ১৩৮০২ ১৪২০৭ ৩৮.৭
পলবান্ধা ৭৯ ৩৭৪৪ ৬৭৭৫ ৬৬১৪ ৩৫.৮
বেলগাছা ১৩ ৮৩১২ ১০০৬৬ ১০৭৩৩ ২৩.২
সাপধরী ৯৪ ৮৩৫২ ৪৫৭০ ৪৫৬০ ১৮.৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ হযরত  শাহ্ কামালের (রঃ) মাযার (দুরমুঠ), প্রদ্যোৎঠাকুরের কুঠিবাড়ি, জিউ মন্দির, কালী মন্দির, দূর্গাবাড়ি এবং ইটাপীরের মাযার।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে বাংলার সুবাদার ইসলাম খান একসময় এ এলাকায় আসেন। ধারণা করা হয় তাঁরই নামানুসারে এ স্থানের নামকরণ হয় ইসলামপুর।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের এপ্রিলের শেষদিকে মুক্তিযোদ্ধাসহ উপজেলার শতাধিক ব্যক্তি প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তবে পাকবাহিনীর বিপুল অস্ত্রসহ হামলায় তারা টিকতে পারেনি। প্রতিরোধযুদ্ধে ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা পাকবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে ও নিহত হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা ব্রহ্মপুত্র নদীপথে আসা-যাওয়া করা পাকবাহিনীর নৌযান আক্রমণ করে প্রায়ই তাদের অভিযানে বিঘ্ন ঘটাতো। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধারা বুরুঙ্গি বিল ও ইসলামপুর এক্সচেঞ্জ অফিসে অভিযান পরিচালনা করে। উপজেলায় ৩টি স্থানে কুলকান্দি, উপজেলা কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে ও মোশারফগঞ্জে গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে।

বিস্তারিত দেখুন ইসলামপুর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩২৫, মন্দির ১১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩০.১%; পুরুষ ৩৩.৫%, মহিলা ২৬.৭%। কলেজ ৮,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫০, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২, কেজি স্কুল ৮, ব্র্যাক স্কুল ৭৪, মাদ্রাসা ৮৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:  ঢেংগারগড় নুরুল হুদা আলিম মাদ্রাসা (১৮৩১), ইসলামপুর নেকজাহান উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), ইসলামপুর জে জে কে এম গার্লস হাই স্কুল এন্ড কলেজ (১৯১৭), দেওয়ানগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), নীলক্ষিয়া আর.জে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৫), ইসলামপুর কলেজ (১৯৭০)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: ঊর্মি বাংলা, সাপ্তাহিক গাঙচিল, ময়ূখ (অনিয়মিত)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গ্রন্থাগার ৩৬, ক্লাব ৫৫, সিনেমা হল ১, নাট্যদল ১, মহিলা সংগঠন ২, খেলার মাঠ ১৭। হাসান হাফিজুর রহমান স্মৃতি সংঘ পাঠাগার (১৯৮৪), শহীদ মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীরোত্তম স্মৃতি সংসদ (১৯৯৫) উল্লেখযোগ্য।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৮.৮৩%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৪৫%, ব্যবসা ১০.৬৯%, চাকরি ৪.২৭%, নির্মাণ ০.৬১%, ধর্মীয় সেবা ০.২১%, শিল্প ০.৫৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৪%, পরিবহন ও যোগাযোগ ২.২১% এবং অন্যান্য ৮.৯৩%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৪.৫০%, ভূমিহীন ৪৫.৫০%। শহরে ৩৬.০১% এবং গ্রামে ৫৭.৪১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, সরিষা, আখ, আলু, ডাল, বেগুন, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি চীনাবাদাম, কাউন, ভুট্টা।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, নারিকেল, কলা, পেঁপে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকা রাস্তা ১১৬ কিমি, আধাপাকা রাস্তা ৪ কিমি, কাঁচা রাস্তা ৪৭৮ কিমি; রেলপথ ১৫ কিমি; নৌপথ ২৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন সোয়ারী, পালকি, বজরা, ভেলা।

হাটবাজার ও মেলা ৮। ধর্মকুঁড়া, গুঠাইল, ইসলামপুর উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   চাল, পাট, আখ, আলু, বেগুন।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, কাঁসাশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ, পাট ও তুলার কাজ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৮.৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৮%, ট্যাপ ০.১% এবং অন্যান্য ৪.১%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা ৪৬.৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪১.২% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১২.২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, ক্লিনিক ৬, কমিউনিটি ক্লিনিক ৪০।

এনজিও ব্র্যাক, আশা।  [সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ইসলামপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।