মাসুম খান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
(Text replacement - "\[মুয়ায্যম হুসায়ন খান\]" to "[মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]")
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''মাসুম খান'''  পূর্ববঙ্গের জমিদার। তিনি ভাটি অঞ্চলের অধিপতি [[মুসা খান মসনদ-ই-আলা|মুসা খান]] মসনদ-ই-আলার পুত্র ও উত্তরাধিকারী। মুসা খানের পতন ও মুগলদের নিকট আত্মসমর্পণের (১৬১১) পর তিনি পরিবার পরিজনসহ জাহাঙ্গীরনগরে মুগল সুবাহদারের লোকদের কড়া নজরদারিতে বসবাস করছিলেন। মাসুম খানের বয়স ছিল তখন সাত বছর। মুগল সুবাহদার  [[ইবরাহিম খান ফতেহ জঙ্গ|ইবরাহিম খান ফতেহ জঙ্গ]] এর উদার ও সমঝোতা নীতির ফলে মুসা খান ১৬১৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলার অপরাপর জমিদারসহ মুক্তিলাভ করেন। ১৬২৩ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে মুসা খানের মৃত্যুর পর ইবরাহিম খান ফতেহ জঙ্গ তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র মাসুম খানকে পিতার জমিদারির উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। মাসুম খানের বয়স তখন আঠারো বা উনিশ বছর। ইবরাহিম খান তাঁর প্রতি খুবই সদয় ছিলেন।
'''মাসুম খান'''  পূর্ববঙ্গের জমিদার। তিনি ভাটি অঞ্চলের অধিপতি [[মুসা খান মসনদ-ই-আলা|মুসা খান]] মসনদ-ই-আলার পুত্র ও উত্তরাধিকারী। মুসা খানের পতন ও মুগলদের নিকট আত্মসমর্পণের (১৬১১) পর তিনি পরিবার পরিজনসহ জাহাঙ্গীরনগরে মুগল সুবাহদারের লোকদের কড়া নজরদারিতে বসবাস করছিলেন। মাসুম খানের বয়স ছিল তখন সাত বছর। মুগল সুবাহদার  [[ইবরাহিম খান ফতেহ জঙ্গ|ইবরাহিম খান ফতেহ জঙ্গ]] এর উদার ও সমঝোতা নীতির ফলে মুসা খান ১৬১৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলার অপরাপর জমিদারসহ মুক্তিলাভ করেন। ১৬২৩ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে মুসা খানের মৃত্যুর পর ইবরাহিম খান ফতেহ জঙ্গ তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র মাসুম খানকে পিতার জমিদারির উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। মাসুম খানের বয়স তখন আঠারো বা উনিশ বছর। ইবরাহিম খান তাঁর প্রতি খুবই সদয় ছিলেন।


মাসুম খান ছিলেন মুগলদের প্রতি অনুগত জমিদার। মুগল বাহিনী কর্তৃক হুগলি অবরোধকালে (১৬৩২) মাসুম খান এক বিশাল নৌবহরের অধিনায়ক হিসেবে পর্তুগিজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। হুগলি অবরোধের প্রাক্কালে তিনি এক বিশাল নৌবহর নিয়ে ঢাকার দক্ষিণে অবস্থিত শ্রীপুর থেকে সাংক্রাইলের (কলকাতা থেকে ১৬ কিলোমিটার দক্ষিণে) উদ্দেশ্যে রওনা হন এবং অচিরেই গঙ্গার প্রবেশমুখ বন্ধ করে দেন। গঙ্গা নদীর অপেক্ষাকৃত কম প্রশস্ত অংশে তিনি তাঁর নৌবহর মোতায়েন করে গঙ্গার উপর কার্যত একটি নৌসেতু গড়ে তোলেন। খাজা শেরের অধীনে মুগল রাজকীয় নৌবহর এবং মাসুম খানের নেতৃত্বে পূর্ববাংলার অনুগত জমিদারদের সম্মিলিত রণনৌবহর এসে পৌঁছার পূর্ব পর্যন্ত কার্যত মুগলদের হুগলি আক্রমণ স্থগিত রাখা হয়েছিল। ১৬৩৬ খ্রিস্টাব্দে মুগলদের আসাম অভিযানে যেসব সেনাপতি প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তাদের অন্যতম ছিলেন মাসুম খান।  [[পাদশাহনামা|পাদশাহনামা]] গ্রন্থে বর্ণিত সমরনায়কদের তালিকায় মাসুম খানের নাম রয়েছে।  [মুয়ায্যম হুসায়ন খান]
মাসুম খান ছিলেন মুগলদের প্রতি অনুগত জমিদার। মুগল বাহিনী কর্তৃক হুগলি অবরোধকালে (১৬৩২) মাসুম খান এক বিশাল নৌবহরের অধিনায়ক হিসেবে পর্তুগিজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। হুগলি অবরোধের প্রাক্কালে তিনি এক বিশাল নৌবহর নিয়ে ঢাকার দক্ষিণে অবস্থিত শ্রীপুর থেকে সাংক্রাইলের (কলকাতা থেকে ১৬ কিলোমিটার দক্ষিণে) উদ্দেশ্যে রওনা হন এবং অচিরেই গঙ্গার প্রবেশমুখ বন্ধ করে দেন। গঙ্গা নদীর অপেক্ষাকৃত কম প্রশস্ত অংশে তিনি তাঁর নৌবহর মোতায়েন করে গঙ্গার উপর কার্যত একটি নৌসেতু গড়ে তোলেন। খাজা শেরের অধীনে মুগল রাজকীয় নৌবহর এবং মাসুম খানের নেতৃত্বে পূর্ববাংলার অনুগত জমিদারদের সম্মিলিত রণনৌবহর এসে পৌঁছার পূর্ব পর্যন্ত কার্যত মুগলদের হুগলি আক্রমণ স্থগিত রাখা হয়েছিল। ১৬৩৬ খ্রিস্টাব্দে মুগলদের আসাম অভিযানে যেসব সেনাপতি প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তাদের অন্যতম ছিলেন মাসুম খান।  [[পাদশাহনামা|পাদশাহনামা]] গ্রন্থে বর্ণিত সমরনায়কদের তালিকায় মাসুম খানের নাম রয়েছে।  [মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]


[[en:Masum Khan]]
[[en:Masum Khan]]

১৬:২১, ১৭ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মাসুম খান  পূর্ববঙ্গের জমিদার। তিনি ভাটি অঞ্চলের অধিপতি মুসা খান মসনদ-ই-আলার পুত্র ও উত্তরাধিকারী। মুসা খানের পতন ও মুগলদের নিকট আত্মসমর্পণের (১৬১১) পর তিনি পরিবার পরিজনসহ জাহাঙ্গীরনগরে মুগল সুবাহদারের লোকদের কড়া নজরদারিতে বসবাস করছিলেন। মাসুম খানের বয়স ছিল তখন সাত বছর। মুগল সুবাহদার  ইবরাহিম খান ফতেহ জঙ্গ এর উদার ও সমঝোতা নীতির ফলে মুসা খান ১৬১৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলার অপরাপর জমিদারসহ মুক্তিলাভ করেন। ১৬২৩ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে মুসা খানের মৃত্যুর পর ইবরাহিম খান ফতেহ জঙ্গ তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র মাসুম খানকে পিতার জমিদারির উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। মাসুম খানের বয়স তখন আঠারো বা উনিশ বছর। ইবরাহিম খান তাঁর প্রতি খুবই সদয় ছিলেন।

মাসুম খান ছিলেন মুগলদের প্রতি অনুগত জমিদার। মুগল বাহিনী কর্তৃক হুগলি অবরোধকালে (১৬৩২) মাসুম খান এক বিশাল নৌবহরের অধিনায়ক হিসেবে পর্তুগিজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। হুগলি অবরোধের প্রাক্কালে তিনি এক বিশাল নৌবহর নিয়ে ঢাকার দক্ষিণে অবস্থিত শ্রীপুর থেকে সাংক্রাইলের (কলকাতা থেকে ১৬ কিলোমিটার দক্ষিণে) উদ্দেশ্যে রওনা হন এবং অচিরেই গঙ্গার প্রবেশমুখ বন্ধ করে দেন। গঙ্গা নদীর অপেক্ষাকৃত কম প্রশস্ত অংশে তিনি তাঁর নৌবহর মোতায়েন করে গঙ্গার উপর কার্যত একটি নৌসেতু গড়ে তোলেন। খাজা শেরের অধীনে মুগল রাজকীয় নৌবহর এবং মাসুম খানের নেতৃত্বে পূর্ববাংলার অনুগত জমিদারদের সম্মিলিত রণনৌবহর এসে পৌঁছার পূর্ব পর্যন্ত কার্যত মুগলদের হুগলি আক্রমণ স্থগিত রাখা হয়েছিল। ১৬৩৬ খ্রিস্টাব্দে মুগলদের আসাম অভিযানে যেসব সেনাপতি প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তাদের অন্যতম ছিলেন মাসুম খান।  পাদশাহনামা গ্রন্থে বর্ণিত সমরনায়কদের তালিকায় মাসুম খানের নাম রয়েছে।  [মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]