চট্টগ্রাম জেলা

চট্টগ্রাম জেলা (চট্টগ্রাম বিভাগ)  আয়তন: ৫২৮২.৯৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৫৪´ থেকে ২২°৫৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৭´ থেকে ৯২°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে খাগড়ছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলা এবং ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে কক্সবাজার জেলা, পূর্বে বান্দরবান, রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়ি জেলা, পশ্চিমে নোয়াখালী জেলা ও বঙ্গোপসাগর। পাহাড়, নদী, সমুদ্র, নদী, অরণ্য, উপত্যাকা প্রভৃতি প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের জন্য এ জেলা অন্যান্য জেলা থেকে স্বতন্ত্র।

জনসংখ্যা ৬৬১২১৪০; পুরুষ ৩৪৭৭১৭৮, মহিলা ৩১৩৪৯৬২। মুসলিম ৫৬৬১৩৯৬, হিন্দু ৮১৭৭৪৫, বৌদ্ধ ৭৯৫৯, খ্রিস্টান ১১৮৪৩৫ এবং অন্যান্য।

জলাশয় প্রধান নদী: কর্ণুফুলি, হালদা।

চট্টগ্রাম শহর  কর্ণফূলি নদীর মোহনায় অবস্থিত বাংলাদেশের প্রধান সামুদ্রিক বন্দর শহর। এ শহরকে বাণিজ্যিক রাজধানীও বলা হয়। বাংলাদেশের প্রথম এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (১৯৮৩) এ শহরে অবস্থিত। ১৮৬০ সালে চট্টগ্রাম পৌরসভা সংগঠিত হয়। এটিকে বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তর করা হয়েছে।

প্রশাসন ১৬৬৬ সালে চট্টগ্রাম জেলা গঠিত হয়। তিন পার্বত্য জেলা এ জেলার অন্তর্ভূক্ত ছিল। ১৮৬০ সালে পার্বত্য এলাকা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা গঠন করা হয়। পরবর্তীতে এ জেলা ভেঙ্গে কক্সবাজার জেলা গঠিত হয়।

জেলা
আয়তন(বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
৫২৮২.৯৮ ১৪ ১৯৪ ৯৮৫ ১৩১০ ৩৩৮১৭২৩ ৩২৩০৪১৭ ১২৫২ ৫৫.৫৫
সিটি কর্পোরেশন
সিটি কর্পোরেশন মেট্রোপলিটন থানা ওয়ার্ড মহল্লা
১২ ৪১ ২০৭
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন থানা
মেট্রোপলিটন থানার নাম ও জিও কোড আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন মহল্লা ও মৌজা জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
কর্ণফুলি ৩৯ ১৩৬.৫৯ ৭+১ (আংশিক) ২৭ ১৭৯১৪৮ ১৩১২ ৪৫.৭০
কোতোয়ালী ৪১ ৭.৬৮ ৯+১ (আংশিক) ২৩ ২৮২৯৭৫ ৩৬৮৪৬ ৭৯.৬০
খুলশী ৪৩ ১৩.১২ ৩+১ (আংশিক) ৪৫ ২৪৩৩৫১ ১৮৫৪৮ ৬০.৩০
চাঁদগাঁও ১৯ ২৫.৩২ ১১ ১৭৮৩৯০ ৭০৪৫ ৬২.৭০
ডবলমুরিং ২৮ ৮.১২ ৫+১ (আংশিক) ৪১ ২৫৯১৮১ ৩১৯১৯ ৬৩.১০
পাঁচলাইশ ৫৭ ৮.৩০ ১+১ (আংশিক) ১২ ১৪৮১২০ ১৭৮৪৬ ৬৯.২০
পাহাড়তলী ৫৫ ১৩.৩১ ১৪ ১২৭২৪৩ ৯৫৬০ ৬৭.৩০
বন্দর ২০ ২০.০৪ ১১ ২১৩৫৯৮ ১০৬৫৯ ৭২.৬০
বাকলিয়া ১০ ১২.৩৩ ৩+১ (আংশিক) ১৯৬৮৭৭ ১৫৯৬৭ ৫০.৫
বায়েজিদ বোস্তামী ১৬ ১৭.৫৮ ১২ ১৬৮০৫১ ৯৫৫৯ ৫৯.৫০
হালিশহর ৩৫ ৯.৬৪ ২+১ (আংশিক) ২৬ ১২৫২৫৫ ১২৯৯৩ ৬২.৪০
জেলার অন্যান্য তথ্য
উপজেলার নাম ও জিও কোড আয়তন (বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
আনোয়ারা ০৪ ১৬৪.১৩ - ৮৫ ৭৫ ২২৮৫৩০ ১৩৯২ ৪৭.২
চন্দনাইশ ১৮ ২০১.৯৯ ১০ ৪৪ ৫৫ ১৯২৬০০ ৯৫৩ ৫৬.৫
পটিয়া ৬১ ২১১.৭০ ১৬ ১০২ ১০৪ ৩২৩৮৪৮ ১৫৩০ ৫৯.১
ফটিকছড়ি ৩৩ ৭৭৩.৫৫ - ২০ ১০২ ২০৬ ৪৪১৮৬৩ ৫৭১ ৪৩.২
বাঁশখালী ০৮ ৩৭৬.৯০ ১৫ ৭২ ১১৩ ৩৯১৩২০ ১০৩৮ ২৯.৫
বোয়ালখালী ১২ ১২৬.৪৬ - ৩১ ৩০ ২০১৫৯০ ১৫৯৪ ৭১.৮
মিরসরাই ৫৩ ৪৮২.৮৮ ১৬ ১১৩ ২০৯ ৩৬৮৯৫০ ৭৬৪ ৫২.০
রাউজান ৭৪ ২৪৬.৫৮ ১৪ ৬৪ ৬৬ ৩২৫৩৮৯ ১৩২০ ৬৪.১
রাঙ্গুনিয়া ৭০ ৩৬১.৫৪ ১২ ৭৩ ১৩৩ ২৯৮৩৭০ ৮২৫ ৫৪.৩
লোহাগাড়া ৪৭ ২৫৮.৮৭ - ৪০ ৪৩ ২৬৬৭৪১ ১০৩০ ৪৪.৬
সন্দ্বীপ ৭৮ ৭৬২.৪২ ১৪ ৪৬ ৩৪ ২৯২৭৭৩ ৩৮৪ ৪৬.১
সাতকানিয়া ৮২ ২৮০.৯৯ ১৭ ৭৩ ৯৮ ৩৩৮৫৬৩ ১২০৫ ৪৬.২
সীতাকুন্ড ৮৬ ৪৮৩.৯৭ ১০ ৬৯ ৫৯ ৩৩৫১৭৮ ৬৯৩ ৫৪.৬
হাটহাজারী ৩৭ ২৪৬.৩২ - ১৫ ৪৮ ৫৯ ৪০৩৭৮৮ ১৬৩৯ ৫৭.৯

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি প্রাচীনকাল থেকে চট্টগ্রাম ছিল একটি আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর। খ্রিস্টিয় নবম শতক থেকে আরব বণিকগণ চট্টগ্রামের সাথে বাণিজ্যিক যোগাযোগ স্থাপন করে। ষষ্ঠ ও সপ্তম শতকে চট্টগ্রাম অঞ্চল আরাকান রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত ছিল। মুসলিম বিজয়ের পূর্বে চট্টগ্রাম কখনও আরাকান রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত আবার কখনও বার্মার রাজার শাসনাধীন ছিল। সোনারগাঁয়ের সুলতান ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ (১৩৩৮-১৩৪৯) ১৩৪০ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম অধিকার করে তাঁর রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত করেন। শেরশাহের নিকট সুলতান গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ শাহের পতনের পর ১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দে আরাকানিরা পুনরায় চট্টগ্রাম অধিকার করে। এ সময় থেকে মুগলদের চট্টগ্রাম বিজয়ের পূর্ব পর্যন্ত চট্টগ্রাম পর্তুগিজ ও মগ জলদস্যুদের আওতাধীন ছিল। ১৬৬৬ সালে মোগল সেনাপতি বুজুর্গ উমেদ খান পতুর্গিজদের বিতাড়িত করে চট্টগ্রামে মুগল কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। মুগলরা এ অঞ্চলের নাম দেন ইসলামাবাদ। ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল মাষ্টার দা সূর্যসেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করা হয়। এ সময় বিপ্লবী নারী বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, বীনা দাস, লীলা রায়, কল্পনা দত্ত প্রমূখ। কালার পোল সংঘর্ষে বিপ্লবী স্বদেশ রায় ইংরেজ সেনাদের গুলিতে নিহত হন এবং আহত দেবুপ্রসাদ, রজতসেন ও মনোরঞ্জন সেন আত্মসমর্পণ এড়াতে আত্মহত্যা করেন। ১৯৩৩ সালে গড়লা গ্রামে ক্ষীরোদপ্রভা বিশ্বাসের বাড়িতে বিপ্লবী দলের অধিনায়ক মাস্টারদা সূর্যসেন ও কল্পনা দত্তসহ অনেকে আত্মগোপন করেছিলেন। এ সময় সূর্যসেন ও ব্রজেন্দ্রসেন ইংরেজ সৈন্যদের হাতে ধরা পড়েন।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ কালুরঘাটে অবস্থিত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর পক্ষে মেজর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ২০ এপ্রিল ক্যাপ্টেন অলি আহমদের নেতৃত্বে মিরসরাই সদরের দক্ষিণে ফেনাফুনি ব্রীজের পাশে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড যুদ্ধ হয় এবং যুদ্ধে পাকবাহিনীর প্রায় ১০০ সৈন্য নিহত হয়। ১৩ এপ্রিল পাকবাহিনী পাহাড়তলী ইউনিয়নের ঊনসত্তরপাড়ায় ৪৮ জন এবং জগৎমল্লাপাড়ার ৩৫ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করে। আনোয়ারা উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর কাফকো, কালীগঞ্জ, পড়ইকুরা প্রভৃতি স্থানে সংঘটিত লড়াইয়ে প্রায় ৫৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং অনেক পাকসেনা হতাহত হয়। পাকসেনারা আমিরাবাদ বণিক পাড়ায় ১৫ জন গ্রামবাসীকে নৃসংশভাবে হত্যা করে এবং মুক্তিযোদ্ধারা জোটপুকুরিয়ায় ১৭ জন রাজাকারকে হত্যা করে। পটিয়া সদরে পাকবাহিনীর দুটি বোমারু বিমান থেকে কয়েকদফা বোমা হামলা চালালে কিছুসংখ্যক বেসামরিক লোক হতাহত হয়। ৩ মে এ উপজেলার মুজাফফরাবাদ গ্রামে পাকবাহিনী অসংখ্য ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় এবং নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। পাকবাহিনী ১৯ মে বাঁশখালীতে ৭৫ জন নারী-পুরুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং অক্টোবর মাসে নাপোড়া গ্রামে ৮৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। বাড়বকুন্ড ক্যামিক্যালস ব্রিজের কাছে পাকবাহিনীর সাথে লড়াইয়ে দুইজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৩ অক্টোবর কধুরখীল দূর্গাবাড়ি প্রাঙ্গণে পাকবাহিনী গণহত্যা চালায় এবং নাজিরহাট বাসস্টান্ড এলাকায় ১১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। যুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম শহর থেকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র দোহাজারীতে স্থানান্তর করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ৯ (পিটিআই প্রাঙ্গন, নাজিরহাট, করেরহাট, লেলাং চা বাগান, দরবার শরীফ, বাগানবাড়ি, দাঁদমারা উল্টোবিঠ, বাঁশখালী, জোটপুকুরিয়া); বধ্যভূমি ১৩; স্মৃতিস্তম্ভ ৯।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৫.৫৫%; পুরুষ ৫৯.৭৯%, মহিলা ৫০.৮৩%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬৬), চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬৮), স্যার আশুতোষ ডিগ্রি কলেজ (১৯৩৯), সাতকানিয়া কলেজ (১৯৪৯), পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৪৫), বাণীগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৮১), রামগতি রামধন আব্দুল বারী চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৮), আদর্শ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০২), আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), রাঙ্গুনিয়া আদর্শ বহুমুখী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), সাতকানিয়া গারাংগিয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা (১৯২০), শাহ চাঁন্দ আউলিয়া আলিয়া মাদ্রাসা (১৯২৮), উত্তর আমিরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩২), ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ (১৯৫৮), ড. খস্তগীর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, ইস্পাহানি স্কুল এন্ড কলেজ, চট্টগ্রাম সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল, মোহসীন কলেজ এবং চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৩৩.৫৩%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৩০%, ব্যবসা ১৬.২২%, শিল্প ০.৯৯%, চাকরি ১৭.৬১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৪৩%, নির্মাণ ১.৩২%, ধর্মীয় সেবা ০.৪৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৮.৪৮% এবং অন্যান্য ১৩.৬৮%।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী বর্তমান: দৈনিক আজাদী, দৈনিক পূর্বকোন, ডেইলী লাইফ, দৈনিক কর্ণফুলি, সাপ্তাহিক চট্টলা, মাসিক সুপ্রভাত রাউজান, মাসিক বাঁশখালী বার্তা, চন্দনাইশ দর্পণ, মাসিক পটিয়া, পাক্ষিক আলোকিত বোয়ালখালি, সাপ্তাহিক চলমান সীতাকুন্ড, মাসিক রাঙ্গুনীয়া কণ্ঠ, মাসিক হাটহাজারী কণ্ঠ, মাসিক মিরসরাই। অবলুপ্ত: মাসিক সংশোধনী, পূরবী, মুকুলিকা, সীমান্ত, সাপ্তাহিক জ্যোতি, সাপ্তাহিক ছোলতান, দৈনিক জ্যোতি, দৈনিক রাষ্ট্রবার্তা, দৈনিক পূর্ব পাকিস্তান, দৈনিক আযান।

লোকসংস্কৃতি মুসলমান সম্প্রদায়ের মেজবান, হিন্দুদের মহধেশ্বরী পূজা, আদিবাসী সম্প্রদায়ের নববর্ষ উপলক্ষে বৈসাবী উৎসব এবং বুদ্ধ পূর্ণিমা, প্রবারণা পূর্ণিমা, কঠিন চীবর দানোৎসব, শিবলী পূজা, অষ্ট উপকরণ দানানুষ্ঠান ও দূর্গাপূজা প্রভৃতি প্রচলিত। এছাড়া বিয়ে, চৈত্র সংক্রান্তি ও বর্ষবরণ, হালখাতা, পূণ্যাহ, নবান্ন, পৌষ পার্বন, অন্ন প্রাশন উপলক্ষে এ জেলার জনগোষ্ঠী লোকজ অনুষ্ঠান পালন করে। বিভিন্ন উৎসবে জেলার আদিবাসীরা ময়ূর নৃত্য, জেলে নৃত্য, সাপুড়ে নৃত্য, ভইয়া নৃত্য, বোতল নৃত্য, থালা নৃত্য ও বাঁশ নৃত্যের অনুষ্ঠান করে।

পর্যটন কেন্দ্র বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বিশ্বশান্তি প্যাগোডা (হাটহাজারী), কড়লডাঙ্গা পাহাড় (বোয়ালখালী), হলুদিয়া প্রান্তিক লেক (সাতকানিয়া), চুনতি অভয়ারণ্য (লোহাগাড়া), বাটালি পাহাড়, ওয়ার সিমেট্রি, পারকি সী বিচ (আনোয়ারা উপজেলা) পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, মেরিন একাডেমী, ইকো পার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেন, চন্দ্রনাথ পাহাড়, মহামুনি মন্দির (রাউজান), চাকমা রাজবাড়ী, বেতাগী পাল আমলের বুদ্ধমূর্তি (রাঙ্গুনিয়া), ব্রোঞ্জ মূর্তি (আনোয়ারা), মুসা খাঁ মসজিদ (১৬৫৮), কদম মোবারক মসজিদ (১৭১৯), আন্দর কিল্লা মসজিদ, ওয়ালি খাঁ মসজিদ (১৭৯০), বদর আউলিয়া দরগাহ, বখশি হামিদ মসজিদ, বাঁশখালী (১৫৬৮), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (১৮৯৩), জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর (১৯৭৪), ফয়’জ লেক (পাহাড়তলী), ছুটি খাঁ মসজিদ, হযরত শাহ আমানতের (রঃ) মাযার, বারো আউলিয়ার মাযার (সীতাকুন্ড), সীতাকুন্ড শংকর মঠ, ধর্মচক্র বৌদ্ধবিহার, করইয়ানগর ও সোনাকানিয়া বৌদ্ধবিহার। [জসীম উদ্দীন হারুন]

আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; চট্টগ্রাম জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; চট্টগ্রাম জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।