ঘোষ, পান্নালাল

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২০:৩০, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

ঘোষ, পান্নালাল (১৯১১-১৯৬০)  বংশীবাদক। বরিশাল শহরে এক সঙ্গীতশিল্পী পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতামহ হরকুমার ঘোষ ছিলেন প্রখ্যাত ধ্রুপদশিল্পী এবং পিতা অক্ষয়কুমার ঘোষ ছিলেন প্রসিদ্ধ সেতারবাদক। তাই পরিবারের সাঙ্গীতিক পরিবেশ পান্নালালকে সঙ্গীতের প্রতি বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করে।

পান্নালালের সঙ্গীত শিক্ষার শুরু পিতা অক্ষয়কুমারের নিকট। চৌদ্দ বছর বয়সে পান্নালাল  বাঁশি শিখতে শুরু করেন। স্বীয় অধ্যাবসায় বলে সাফল্য অর্জন করেন। কিছুকাল পরে তিনি  কলকাতা চলে যান এবং এক ছায়াচিত্র কোম্পানিতে চাকরি নেন। সেখানে অমৃতসরের প্রসিদ্ধ হারমোনিয়ামবাদক খুশী আহমদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় এবং তাঁর নিকট তিনি সঙ্গীতে তালিম নেন। ১৯৩৮ সালে ‘সরই-কলা-নৃত্য’ দলের সঙ্গে পান্নালাল বিদেশ ভ্রমণ করেন। বিদেশ থেকে ফিরে তিনি সঙ্গীতাচার্য গিরিজাশঙ্কর চক্রবর্তী এবং ১৯৪৭ সালে বিশ্বখ্যাত সঙ্গীতসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।

কর্মজীবনে পান্নালাল আকাশবাণী দিল্লি কেন্দ্রে  সঙ্গীত নির্দেশক হিসেবে যুক্ত ছিলেন। তিনি ভারতীয় বাদ্যযন্ত্রসমূহের যথেষ্ট সংস্কার সাধন করে খ্যাতি অর্জন করেন।  খেয়াল অঙ্গের বাদনে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। তাঁর একটি বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি বিভিন্ন সপ্তকের জন্য তিনটি বাঁশি ব্যবহার করতেন। তাঁর একাধিক  গ্রামোফোন রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছে।

পান্নালাল একজন মহান যন্ত্রশিল্পী ছিলেন। রাগসঙ্গীতে বাঁশির সমূহ সম্ভাবনার পথ তিনিই উন্মুক্ত করেন। রাগসঙ্গীতের গভীর আবেগ প্রকাশে তাঁর অসাধারণ ক্ষমতা ছিল। মানুষের যেকোন কণ্ঠস্বরকে তিনি অনায়াসে বাঁশিতে রূপায়িত করতে পারতেন। পান্নালাল কলকাতার নিউ থিয়েটার্স-এর বৃন্দবাদনে বাঁশি বাজাতেন। তাঁর শিষ্যদের মধ্যে বংশীবাদক গৌর গোস্বামীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯৬০ সালের ২০ এপ্রিল পান্নালালের মৃত্যু হয়।  [মোবারক হোসেন খান]