খান, ফিল্ড মার্শাল মোহাম্মদ আইয়ুব

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৭:০০, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
মোহাম্মদ আইয়ুব খান

খান, ফিল্ড মার্শাল মোহাম্মদ আইয়ুব (১৯০৮-১৯৭৪)  পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও সামরিক শাসক। আইয়ুব খান ১৯০৮ সালে উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের এবোটাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের স্যান্ডহার্স্ট রয়্যাল মিলিটারী কলেজে শিক্ষা লাভ করেন। ১৯২৮ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৪৮ সালের ডিসেম্বর মাসে তাঁকে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে পূর্ববঙ্গ প্রদেশে জেনারেল অফিসার কম্যান্ডিং (জি ও সি) নিয়োগ করা হয়। ১৯৫৪ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্জার সাথে যোগসাজশে সেনাবাহিনী প্রধান আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর পাকিস্তানে সামরিক আইন জারী করেন এবং সংবিধান রহিত করেন। প্রেসিডেন্ট মির্জা কর্তৃক আইয়ুব খান ৮ অক্টোবর প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত হন। কিন্তু কয়েকদিন পরই (২৭ অক্টোবর) তিনি ইস্কান্দার মির্জাকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করে নিজেকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন।

আইয়ুব খানের সামরিক শাসনব্যবস্থা ছিল এক ধরনের প্রতিনিধিত্বমূলক একনায়কতন্ত্র এবং তিনি ১৯৫৯ সালে  মৌলিক গণতন্ত্র নামে একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চালু করেন। মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠানসমূহকে পাঁচটি স্তরে বিন্যস্ত করা হয়েছিল। ইউনিয়ন পরিষদ ছিল সর্বনিম্ন স্তর এবং এর সদস্যদের বলা হতো মৌলিক গণতন্ত্রী। পৌর এলাকায় একই ধরনের ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল। এক্ষেত্রে কতগুলো ছোট ইউনিয়ন পরিষদকে একত্রিত করে মিউনিসিপ্যাল কমিটি গঠন করা হতো এবং তারা একই ধরনের কাজ করত। ১৯৬০ সালে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্যরাই আইয়ুব খানের প্রেসিডেন্ট পদ সুনিশ্চিত করেন। ১৯৬২ সালের সংবিধান অনুযায়ী তাদের নিয়েই একটি নির্বাচকমন্ডলী গঠিত হয়। এই নির্বাচকমন্ডলীর ভোটে প্রেসিডেন্ট এবং জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যগেণ নির্বাচিত হতেন। আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থা দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পায় নি এবং আইয়ুব খানের স্বপ্নও সফল হয় নি। ১৯৬৯ সালে আইয়ুব খানের পতন হয় এবং তাঁর পতনের সঙ্গে সঙ্গে মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থারও অবসান ঘটে।

১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান এবং তাঁর অনুগত অফিসাররা রাজনীতিবিদদের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করার সিদ্ধান্ত নেন এবং কোনো রক্তপাত ছাড়াই তা সম্ভব হয়। অতঃপর তিনি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশেষ করে ভূমি প্রশাসনে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। একজন ব্যক্তির জন্য ভূমির সর্বোচ্চ সীমা তেত্রিশ হেক্টর থেকে বাড়িয়ে আটচল্লিশ হেক্টরে উন্নীত করা হয়। জমির মালিকগণ সামাজিক পরিমন্ডলে তাদের আধিপত্য অক্ষুন্ন রেখেছিল। ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৯ সালের মধ্যে প্রায় ৪০ লক্ষ হেক্টর জমি জনগণের ব্যবহারের জন্য অবমুক্ত করা হয় যার অধিকাংশই ছিল সিন্ধুতে এবং জমিগুলি মূলত সামরিক এবং বেসামরিক আমলাদের মধ্যেই বিক্রয় করা হয়। এভাবে মাঝারি পর্যায়ের নতুন এক শ্রেণির খামার মালিকের উদ্ভব ঘটে। পরবর্তী সময়ে এই খামারগুলোই কৃষি উন্নয়নে অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু প্রকৃত কৃষককূল এতে আদৌ উপকৃত হয় নি।

১৯৫৮ সালে পারিবারিক এবং বিবাহ সংক্রান্ত আইন সংস্কারের লক্ষ্যে পরামর্শ দানের জন্য একটি আইন কমিশন গঠন করা হয়। উক্ত কমিশনের রিপোর্ট পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আইয়ুব খান ১৯৬১ সালে পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ জারী করেন। এ আইন দ্বারা বহুবিবাহের সুযোগ সীমিত করা হয় এবং বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদকে নিয়ন্ত্রন করা হয়। এ আইন নারীদের পুরুষের সঙ্গে অধিকতর সমঅধিকার প্রদান করে। পাকিস্তানের নারী সংগঠনগুলো এ মানবিক পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে। জারীকৃত পরিবার পরিকল্পনা আইনের মতোই এ আইনও প্রয়োগের ক্ষেত্রে অনেকটা শৈথিল্য প্রদর্শিত হয় এবং এতে করে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় তেমন কোনো পরিবর্তন সাধিত হয় নি।

আইয়ুব খান অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন যার ফলে অচিরেই অর্থনেতিক প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি পায়। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসস্পূর্ণ করার লক্ষ্যে ভূমি সংস্কার, ভূমি একত্রীকরণ, মজুতদারীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ, পল্লীঋণ কর্মসূচী ও কর্মসংস্থান প্রকল্প, কৃষিপণ্যের সংগ্রহমূল্য বৃদ্ধি, কৃষিখাতে বর্ধিতহারে বরাদ্দ এবং উন্নতমানের বীজ সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই ব্যবস্থাকে ‘সবুজ বিপ্লব’ নামে অভিহিত করা হয়েছিল। রপ্তানি বোনাস ভাউচার স্কীম (১৯৫৯) এবং কর সুবিধা ও নতুন শিল্প উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের উৎসাহিত করে। বোনাস ভাউচার ব্যবস্থা শিল্পের যন্ত্রপাতি এবং কাঁচামাল আমদানিতে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবহার সহজতর করে। স্বল্পোন্নত এলাকায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর রেয়াত সুবিধা দেওয়া হয়। শিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে এ পদক্ষেপগুলির গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ছিল এবং এতে করে একটি নতুন ক্ষুদ্র শিল্পপতি শ্রেণির উত্থান ঘটে।

১৯৬২ সালের ১ মার্চ আইযুব খান রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থা ভিত্তিক একটি সংবিধান বহাল করেন এবং এতে করে তিনি দেশে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হন। ১৯৬৪ সালের নভেম্বর মাসে পাকিস্তানের উভয় অংশেই মৌলিক গণতন্ত্রীদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬৫ সালের ২ জানুয়ারি পরোক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থায় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ইতিপূর্বে নির্বাচিত ৮০,০০০ মৌলিক গণতন্ত্রী এই নির্বাচনে নির্বাচকমন্ডলী হিসেবে কাজ করে। বিরোধীদলীয় প্রার্থী ফাতেমা জিন্নাহকে পরাজিত করে আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

আইয়ুব খান তাঁর  Friends not Masters  শীর্ষক আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থে বিভিন্ন সময়ে স্বীয় অনুসৃত পররাষ্ট্র নীতির কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর লক্ষ্যসমূহের মধ্যে ছিল পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও  উন্নয়ন এবং স্বীয় রাজনৈতিক মতাদর্শ অনুযায়ী পাকিস্তানের আদর্শ সমুন্নত রাখা। এ লক্ষ্যে তিনি পাকিস্তানের নিকটতম প্রতিবেশী এবং বৃহৎ রাষ্ট্র ভারত, চীন ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন অথবা স্বাভাবিকীকরণের উদ্যোগ নেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মৈত্রী বহাল এবং নবায়ণের ক্ষেত্রে আইয়ুব খান তাবেদারীর চেয়ে বন্ধুত্বের উপর বেশি গুরুত্ব দেন এবং পাকিস্তানের অনুকূলে অধিকতর সুবিধা আদায়ের জোর প্রচেষ্টা চালান। পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে আদর্শগত এবং কাশ্মীর বিরোধ ছাড়াও দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্বের মূল উৎস ছিল সিন্ধু নদীর পানি বণ্টন। পঞ্চাশের দশকে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের চাহিদার উপযোগী একটি সমঝোতা প্রক্রিয়ার পদক্ষেপ নেয়া হলেও ১৯৬০ সালে আইয়ুব খান ও জওহরলাল নেহেরুর সমঝোতায় উপনীত না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যার সঠিক সমাধান সম্ভব হয় নি। মোটামুটিভাবে পাকিস্তানের ব্যবহারের জন্য পশ্চিমাঞ্চলের তিনটি নদী (সিন্ধু এবং এর শাখা নদী ঝিলাম ও চেনাব) এবং ভারতের ব্যবহারের জন্য পূর্বাঞ্চলে সিন্ধুর তিনটি শাখা নদী (শতদ্রু, বিপাশা, ইরাবতী) বণ্টন করা হয়। চুক্তির মধ্যে সাময়িক ব্যবস্থা, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, জলাবদ্ধতা এবং পাকিস্তানের লবণাক্ততা সমস্যা সম্পর্কিত বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত ছিল। বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় সিন্ধু অববাহিকা উন্নয়ন তহবিল গঠিত হয়।

১৯৫৯ সালে চীন কর্তৃক তিববত দখল এবং দালাই লামার ভারতে আশ্রয় গ্রহণের কারণে ভারত ও চীনের মধ্যকার পাঁচ বছর মেয়াদী বন্ধুত্বের চুক্তিতে চীর ধরে। ফলে চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা দেখা দেয়। এর ফলে চীন ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক তিক্ততর হয় এবং তার চূড়ান্ত পরিণতি ঘটে ১৯৬২ সালের সীমান্ত যুদ্ধে। পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে এই অনানুষ্ঠানিক মৈত্রীই পাকিস্তানের বৈদেশিক নীতির চাবিকাঠিতে পরিনত হয় এবং ১৯৬৩ সালের মার্চ মাসে একটি সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কারাকোরাম গিরিপথে সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে দুদেশের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপিত হয়; বাণিজ্য চুক্তি, চীনের আর্থিক সহায়তা এবং সামরিক সরঞ্জামাদি প্রদানের চুক্তি সম্পাদিত হয়। পরবর্তী সময়ে পারমানবিক প্রযুক্তি বিনিময়ের বিষয়টিও এই চুক্তির অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে ধারণা করা হয়। কাশ্মীর নিয়ে ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় চীনের কূটনৈতিক সমর্থন এবং সামরিক সরঞ্জমাদি প্রেরণ পাকিস্তানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন জোরালোভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের মৈত্রীর বিরোধিতা করলেও মস্কো পাকিস্তান ও ভারত উভয় দেশের সঙ্গে সম্পর্কের পথ খোলা রাখার নীতি অনুসরণে আগ্রহী ছিল। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় আইয়ুব খান সোভিয়েত ইউনিয়নের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হন।

আইয়ুব খান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক বিদ্যমান রেখে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারণ করেন। তাঁর এই নীতির বড় ধরনের প্রথম পদক্ষেপ ছিল ১৯৫৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও সামরিক চুক্তি স্বাক্ষর করা। তথাপি, যুক্তরাষ্ট্র যতটুকু সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব করে, আইয়ুব খানের প্রত্যাশা ছিল তার চেয়েও বেশি এবং এভাবেই দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকে তিনি সহজভাবে মেনে নিতে পারেন নি। বিশেষত ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিরপেক্ষ ভূমিকা পাকিস্তানের জন্য বিব্রতকর ছিল। পাকিস্তান ১৯৫৯ সালে স্বাক্ষরিত দশ বৎসর মেয়াদী চুক্তি নবায়ন করে নি।

দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে কচ্ছের অনির্ধারিত সীমানা সহ কতিপয় সীমান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ১৯৬৫ সালের এপ্রিলে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয় এবং শীঘ্রই তা কাশ্মীরের যুদ্ধ বিরতি রেখা বরাবর ছড়িয়ে পড়ে। পারস্পরিক সম্মতিতে এবং ব্রিটেনের মধ্যস্থতা ও পৃষ্ঠপোষকতায় কচ্ছের রান অঞ্চলের সংঘর্ষের সমাধান হলেও কাশ্মীর বিরোধ মারাত্মক এবং ব্যাপক আকার ধারণ করে। উভয় দেশেরই লক্ষ্য ছিল সীমিত এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন কর্তৃক উভয় দেশে সামরিক সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় কোনো দেশেরই দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য ছিল না। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে সেপ্টেম্বর মাসের ২৩ তারিখে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করা হয়। আইয়ুব খান এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ১৯৬৬ সালের জানুয়ারিতে তাসখন্দ চুক্তি স্বাক্ষর করেন। ফলে দুদেশের মধ্যে বিরোধের আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি ঘটে এবং পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে উভয় দেশের প্রতি সেনা প্রত্যাহারের আহবান জানানো হয়।

১৯৬৫ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর পাক-ভারত যুদ্ধ শুরু হলে আইয়ুব খান নিজেকে ফিল্ড মার্শাল হিসেবে পদোন্নতি দান করেন। অতঃপর ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের জন্য যখন  আওয়ামী লীগ কর্তৃক ছয় দফা দাবী উত্থাপিত হয় তখন তিনি তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার পথ বেছে নেন। দলের প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের গ্রেফতার করা হয়। ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৮ সময়কালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আইয়ুব খান ১৯৬৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাওয়ালপিন্ডিতে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের এক গোলটেবিল বৈঠক আহবান করেন। কিন্তু এই সম্মেলন সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হলে  আইয়ুব খান ১৯৬৯ সালের ২৪ মার্চ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খানের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করে রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালের ২০ এপ্রিল তাঁর মৃত্যু হয়। [হেলাল উদ্দিন আহমেদ]