আহমদ, আবুল মনসুর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(Text replacement - "সোহ্রাওয়ার্দী" to "সোহ্‌রাওয়ার্দী")
 
১১ নং লাইন: ১১ নং লাইন:
কংগ্রেস দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নীতির বিরুদ্ধে। তিনি [[দাশ, চিত্তরঞ্জন|চিত্তরঞ্জন দাশ ]]এর (১৮৭০-১৯২৫) স্বরাজ্য পার্টির রাজনীতি সমর্থন করেন এবং ১৯২৩ সালের [[বেঙ্গল প্যাক্ট, ১৯২৩|বেঙ্গল প্যাক্ট]] এর মাধ্যমে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির যে প্রচেষ্টা চলে সে ব্যাপারে উৎসাহী ছিলেন। এর পর ১৯২৯ সালে আবুল মনসুর বাংলার প্রজা পার্টিতে যোগ দেন এবং ময়মনসিংহ জেলায় দক্ষতার সঙ্গে কৃষক প্রজা সমিতি সংগঠনের কাজ করেন। একই সময় তিনি ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা কংগ্রেস কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট।
কংগ্রেস দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নীতির বিরুদ্ধে। তিনি [[দাশ, চিত্তরঞ্জন|চিত্তরঞ্জন দাশ ]]এর (১৮৭০-১৯২৫) স্বরাজ্য পার্টির রাজনীতি সমর্থন করেন এবং ১৯২৩ সালের [[বেঙ্গল প্যাক্ট, ১৯২৩|বেঙ্গল প্যাক্ট]] এর মাধ্যমে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির যে প্রচেষ্টা চলে সে ব্যাপারে উৎসাহী ছিলেন। এর পর ১৯২৯ সালে আবুল মনসুর বাংলার প্রজা পার্টিতে যোগ দেন এবং ময়মনসিংহ জেলায় দক্ষতার সঙ্গে কৃষক প্রজা সমিতি সংগঠনের কাজ করেন। একই সময় তিনি ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা কংগ্রেস কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট।


আবুল মনসুর বামপন্থি কংগ্রেস সমর্থিত ‘কিষাণ সভা’ ও ‘কিষাণ সমিতি’র কার্যক্রমের সমালোচনা করেন। ১৯৩৭ সালে নির্বাচনে  [[কৃষক প্রজা পার্টি|কৃষক প্রজা পার্টি]] যথেষ্ট ভালো ফল করে এবং এ পার্টির নেতা একে ফজলুল হক আশা করেন [[ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস|ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস]] (১৮৭৩-১৯৬২) বাংলায় একটি কোয়ালিশন সরকার গঠনে সমর্থন পাওয়া যাবে। কিন্তু কংগ্রেস কৃষক প্রজা দলের সঙ্গে কোয়ালিশন সরকার গঠনে রাজি হয়নি। তখন ফজলুল হক মুসলিম লীগের সঙ্গে কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে বাধ্য হন। কংগ্রেসের এ মনোভাবকে অনেকেই ভালোভাবে নিতে পারেননি। এ ঘটনার ফলে আবুল মনসুর আহমদ কংগ্রেসের সদস্যপদ ত্যাগ করেন এবং মুসলিম লীগের রাজনীতির প্রতি ঝুঁকে পড়েন। ১৯৪০ সালের মার্চ মাসে লাহোরে ভারতের মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাস ভূমির দাবি করা হয়। আবুল মনসুর আহমদ এ দাবি যুক্তিসঙ্গত মনে করেন। ১৯৪৪ সালে তিনি ইস্ট পাকিস্তান রেনেসাঁ সোসাইটির সম্মেলনে বলেন যে,  সাংস্কৃতিক স্বতন্ত্রতার কারণে পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার প্রয়োজন যুক্তিসঙ্গত। তিনি ভারতে দু’অঞ্চলে দুইটি মুসলিম প্রধান অঞ্চল নিয়ে দুইটি পৃথক স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্রের সৃষ্টির দাবি সমর্থন করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বাঙালি সংস্কৃতির স্বতন্ত্রতার বিষয়টির উপর জোর দেন। ১৯৪৬-৪৭ সালে  [[সোহ্রাওয়ার্দী, হোসেন শহীদ|হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী]]র সাথে একযোগে ‘স্বাধীন যুক্ত বাংলা’ সৃষ্টির দাবি তোলেন। সে দাবি বাস্তবতা লাভ করেনি এবং ১৯৪৭ সালে বাংলা প্রদেশও বিভক্ত হয়ে যায়। তখন তিনি কলকাতাকে পূর্ব বাংলায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করেন। কিন্তু সে দাবিও উপেক্ষিত হয়।
আবুল মনসুর বামপন্থি কংগ্রেস সমর্থিত ‘কিষাণ সভা’ ও ‘কিষাণ সমিতি’র কার্যক্রমের সমালোচনা করেন। ১৯৩৭ সালে নির্বাচনে  [[কৃষক প্রজা পার্টি|কৃষক প্রজা পার্টি]] যথেষ্ট ভালো ফল করে এবং এ পার্টির নেতা একে ফজলুল হক আশা করেন [[ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস|ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস]] (১৮৭৩-১৯৬২) বাংলায় একটি কোয়ালিশন সরকার গঠনে সমর্থন পাওয়া যাবে। কিন্তু কংগ্রেস কৃষক প্রজা দলের সঙ্গে কোয়ালিশন সরকার গঠনে রাজি হয়নি। তখন ফজলুল হক মুসলিম লীগের সঙ্গে কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে বাধ্য হন। কংগ্রেসের এ মনোভাবকে অনেকেই ভালোভাবে নিতে পারেননি। এ ঘটনার ফলে আবুল মনসুর আহমদ কংগ্রেসের সদস্যপদ ত্যাগ করেন এবং মুসলিম লীগের রাজনীতির প্রতি ঝুঁকে পড়েন। ১৯৪০ সালের মার্চ মাসে লাহোরে ভারতের মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাস ভূমির দাবি করা হয়। আবুল মনসুর আহমদ এ দাবি যুক্তিসঙ্গত মনে করেন। ১৯৪৪ সালে তিনি ইস্ট পাকিস্তান রেনেসাঁ সোসাইটির সম্মেলনে বলেন যে,  সাংস্কৃতিক স্বতন্ত্রতার কারণে পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার প্রয়োজন যুক্তিসঙ্গত। তিনি ভারতে দু’অঞ্চলে দুইটি মুসলিম প্রধান অঞ্চল নিয়ে দুইটি পৃথক স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্রের সৃষ্টির দাবি সমর্থন করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বাঙালি সংস্কৃতির স্বতন্ত্রতার বিষয়টির উপর জোর দেন। ১৯৪৬-৪৭ সালে  [[সোহ্‌রাওয়ার্দী, হোসেন শহীদ|হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী]]র সাথে একযোগে ‘স্বাধীন যুক্ত বাংলা’ সৃষ্টির দাবি তোলেন। সে দাবি বাস্তবতা লাভ করেনি এবং ১৯৪৭ সালে বাংলা প্রদেশও বিভক্ত হয়ে যায়। তখন তিনি কলকাতাকে পূর্ব বাংলায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করেন। কিন্তু সে দাবিও উপেক্ষিত হয়।


১৯৪৯ সালে আবুল মনসুর আহমদ আওয়ামী মুসলিম লীগ দল প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত আওয়ামী মুসলিম লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি [[যুক্তফ্রণ্ট|যুক্তফ্রন্ট]] এর নির্বাচনী কর্মসূচি ২১-দফার অন্যতম প্রণেতা ছিলেন। তিনি ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের মনোনয়নে পূর্ববঙ্গ পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৫৪ সালে তিনি ফজলুল হক মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রী নিযুক্ত হন।
১৯৪৯ সালে আবুল মনসুর আহমদ আওয়ামী মুসলিম লীগ দল প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত আওয়ামী মুসলিম লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি [[যুক্তফ্রণ্ট|যুক্তফ্রন্ট]] এর নির্বাচনী কর্মসূচি ২১-দফার অন্যতম প্রণেতা ছিলেন। তিনি ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের মনোনয়নে পূর্ববঙ্গ পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৫৪ সালে তিনি ফজলুল হক মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রী নিযুক্ত হন।

১৬:১৬, ১৭ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

আহমদ, আবুল মনসুর (১৮৯৮-১৯৭৯)  সাংবাদিক, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, সাহিত্যিক। তাঁর জন্ম ১৮৯৮ সালে ময়মনসিংহ জেলার ধানিখোলা গ্রামে। পিতার নাম আবদুর রহিম ফরায়জী এবং মাতার নাম মীর জাহান বেগম। তিনি ১৯১৭ সালে নাসিরাবাদ মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক, ১৯১৯ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে আই.এ এবং ১৯২১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে বি.এ পাস করেন। এরপর তিনি ১৯২৬ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত কলকাতা রিপন ল’ কলেজে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং বি.এল পাস করেন। এ বছরেই তিনি ময়মনসিংহে আইনব্যবসা শুরু করেন এবং সেখানে তিনি ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত তাঁর পেশায় নিয়োজিত থাকেন।

আবুল মনসুর আহমদ

আবুল মনসুর আহমদ একজন পেশাদার সাংবাদিক ছিলেন। তিনি যে সকল সাময়িক পত্রিকায় কাজ করেন, সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য  সোলতান, মোহাম্মদী, দি মুসলমান, কৃষক, নবযুগ ও ইত্তেহাদ। তিনি সাপ্তাহিক সোলতান ও মোহাম্মদীর সহকারী সম্পাদক ছিলেন (১৯২৩-১৯২৬)। তিনি দি মুসলমান পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন ১৯২৬ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত। আবুল মনসুর ১৯৩৮ সালের ডিসেম্বর মাসে দৈনিক কৃষক পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৪১ সালের অক্টোবর মাসে নবযুগ পত্রিকার সম্পাদনা বিভাগে চাকরি লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত দৈনিক ইত্তেহাদ পত্রিকার সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনীতিতেও আবুল মনসুর আহমদ এর ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। তাঁর রাজনৈতিক জীবন খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে যোগদানের মধ্য দিয়ে শুরু হলেও তিনি এ আন্দোলনের বাস্তবতা সম্পর্কে বেশ সন্দিহান ছিলেন।

একটি অভারতীয় বিষয়কে কেন্দ্র করে সর্বভারতীয় পর্যায়ে আন্দোলন এবং সে আন্দোলনে গান্ধীর অসহযোগ-এর ডাক ও স্বরাজ আদায়ের লক্ষ্য সম্পর্কে আবুল মনসুর আহমদ তেমন একটা খুশি ছিলেন না। তিনি গান্ধীর এ পদক্ষেপকে অবাস্তব মনে করেছেন।

কংগ্রেস দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নীতির বিরুদ্ধে। তিনি চিত্তরঞ্জন দাশ এর (১৮৭০-১৯২৫) স্বরাজ্য পার্টির রাজনীতি সমর্থন করেন এবং ১৯২৩ সালের বেঙ্গল প্যাক্ট এর মাধ্যমে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির যে প্রচেষ্টা চলে সে ব্যাপারে উৎসাহী ছিলেন। এর পর ১৯২৯ সালে আবুল মনসুর বাংলার প্রজা পার্টিতে যোগ দেন এবং ময়মনসিংহ জেলায় দক্ষতার সঙ্গে কৃষক প্রজা সমিতি সংগঠনের কাজ করেন। একই সময় তিনি ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা কংগ্রেস কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট।

আবুল মনসুর বামপন্থি কংগ্রেস সমর্থিত ‘কিষাণ সভা’ ও ‘কিষাণ সমিতি’র কার্যক্রমের সমালোচনা করেন। ১৯৩৭ সালে নির্বাচনে  কৃষক প্রজা পার্টি যথেষ্ট ভালো ফল করে এবং এ পার্টির নেতা একে ফজলুল হক আশা করেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (১৮৭৩-১৯৬২) বাংলায় একটি কোয়ালিশন সরকার গঠনে সমর্থন পাওয়া যাবে। কিন্তু কংগ্রেস কৃষক প্রজা দলের সঙ্গে কোয়ালিশন সরকার গঠনে রাজি হয়নি। তখন ফজলুল হক মুসলিম লীগের সঙ্গে কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে বাধ্য হন। কংগ্রেসের এ মনোভাবকে অনেকেই ভালোভাবে নিতে পারেননি। এ ঘটনার ফলে আবুল মনসুর আহমদ কংগ্রেসের সদস্যপদ ত্যাগ করেন এবং মুসলিম লীগের রাজনীতির প্রতি ঝুঁকে পড়েন। ১৯৪০ সালের মার্চ মাসে লাহোরে ভারতের মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাস ভূমির দাবি করা হয়। আবুল মনসুর আহমদ এ দাবি যুক্তিসঙ্গত মনে করেন। ১৯৪৪ সালে তিনি ইস্ট পাকিস্তান রেনেসাঁ সোসাইটির সম্মেলনে বলেন যে,  সাংস্কৃতিক স্বতন্ত্রতার কারণে পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার প্রয়োজন যুক্তিসঙ্গত। তিনি ভারতে দু’অঞ্চলে দুইটি মুসলিম প্রধান অঞ্চল নিয়ে দুইটি পৃথক স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্রের সৃষ্টির দাবি সমর্থন করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বাঙালি সংস্কৃতির স্বতন্ত্রতার বিষয়টির উপর জোর দেন। ১৯৪৬-৪৭ সালে  হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে একযোগে ‘স্বাধীন যুক্ত বাংলা’ সৃষ্টির দাবি তোলেন। সে দাবি বাস্তবতা লাভ করেনি এবং ১৯৪৭ সালে বাংলা প্রদেশও বিভক্ত হয়ে যায়। তখন তিনি কলকাতাকে পূর্ব বাংলায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করেন। কিন্তু সে দাবিও উপেক্ষিত হয়।

১৯৪৯ সালে আবুল মনসুর আহমদ আওয়ামী মুসলিম লীগ দল প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত আওয়ামী মুসলিম লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি যুক্তফ্রন্ট এর নির্বাচনী কর্মসূচি ২১-দফার অন্যতম প্রণেতা ছিলেন। তিনি ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের মনোনয়নে পূর্ববঙ্গ পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৫৪ সালে তিনি ফজলুল হক মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রী নিযুক্ত হন।

আবুল মনসুর আহমদ ১৯৫৫ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পূর্ববঙ্গ পরিষদের সদস্যদের ভোটে পাকিস্তান গণপরিষদ এর সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৫৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানের যুক্তফ্রন্ট সরকারের শিক্ষামন্ত্রী এবং ১৯৫৬-৫৭ সালে বণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান কর্তৃক সামরিক শাসন জারি হওয়ার পর তিনি কারারুদ্ধ হন এবং ১৯৬২ সালে মুক্তি পান। এরপর তিনি রাজনৈতিক জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

আবুল মনসুর আহমদ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকলেও বিদ্রুপাত্মক রচনার লেখক হিসেবেই তিনি সমধিক পরিচিত। তাঁর বিখ্যাত বিদ্রুপাত্মক রচনা হচ্ছে: আয়না (১৯৩৬-১৯৩৭) ও ফুড কনফারেন্স (১৯৪৪)। তাঁর রচিত উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে, সত্যমিথ্যা (১৯৫৩), জীবন ক্ষুধা (১৯৫৫) ও আবে-হায়াৎ (১৯৬৪)। আর স্মৃতিকথা, আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর (১৯৬৯), শের-ই-বাংলা থেকে বঙ্গবন্ধু (১৯৭২) এবং তাঁর আত্মচরিত হল আত্মকথা (১৯৭৮)। সাহিত্যে অবদানের জন্য তাঁকে বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬০), স্বাধীনতা দিবস পদক (১৯৭৯) ও নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদকে ভূষিত করা হয়। ১৯৭৯ সালের ১৮ মার্চ আবুল মনসুর আহমদের মৃত্যু হয়।  [রাণা রাজ্জাক]