বুড়িচং উপজেলা

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৬:২৭, ৬ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))

বুড়িচং উপজেলা (কুমিল্লা জেলা)  আয়তন: ১৬৩.৭৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°২৮´ থেকে ২৩°৩৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°০২´ থেকে ৯১°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে কুমিল্লা আদর্শ সদর, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ও কুমিল্লা আদর্শ সদর, পশ্চিমে দেবীদ্বার ও চান্দিনা উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৫৯২৬৫; পুরুষ ১৩৩৪৬৯, মহিলা ১২৫৭৯৬। মুসলিম ২৪৯২১৩, হিন্দু ৯৯৮১ এবং অন্যান্য ৭১।

জলাশয় প্রধান নদী: গোমতী, ঘুংঘুর। চান্দলা, নাগিসাবিলা, উত্তর বড়খোলা, মারজোড়া ও হাবিলার খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন বুড়িচং থানা গঠিত হয় ১৯১৬ সালে। বর্তমানে এটি উপজেলা।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১৫০ ১৭২ ৯২৬৯ ২৪৯৯৯৬ ১৫৮৩ ৬১.৪১ ৪৯.৩১
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৩.৭৩ ৯২৬৯ ২৪৮৫ ৬১.৪১
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
পীরযাত্রাপুর ৭২ ২৭৬৮ ১০৩২৮ ১০০৮৫ ৪৪.৯৫
বাকশিমাইল ০৬ ৬১০২ ১৩৯২২ ১৩৭৩৪ ৫২.৮৪
বুড়িচং ৩১ ৩৯৭৫ ১৬৮৮৫ ১৫৯৩৯ ৫০.৯০
ভারেল্লা ১২ ৪৯১৮ ২২২০০ ১৯৪১৯ ৪৫.৩৬
ময়নামতি ৬৩ ৫০৭০ ১৭৭৬৭ ১৬৭৭১ ৫৭.২১
মোকাম ৬৯ ৬১০৫ ২২৩১৯ ২০২৯১ ৪১.৪৬
রাজাপুর ৭৫ ৫৪৯৯ ১৪০৬০ ১৩৯৩৬ ৫৫.১০
ষোলনল ৯৪ ৬০৩০ ১৫৯৮৮ ১৫৬২১ ৫৩.০৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ রাজা মানিকচন্দ্রের স্ত্রী রাণী ময়নামতির ‘রানীরবাংলো’, বৌদ্ধ মূর্তি, পোড়ামাটির ফলক, বৌদ্ধ ধর্মীয় নিদর্শন, শিবমূর্তি।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলা ২ নং সেক্টরের অধীন ছিল। এসময় মুক্তিযোদ্ধারা থানা আক্রমণ করলে পাকবাহিনীর সঙ্গে তাদের লড়াইয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাছাড়া পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘটিত একাধিক লড়াইয়ে ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ৯ জন আহত হন।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ২৯০, মন্দির ২৩, মাযার ৯, তীর্থস্থান ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৯.৭৫%; পুরুষ ৫৩.৬৬%, মহিলা ৪৫.৬৩%। কলেজ ৯, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬৯, মাদ্রাসা ৪০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বুড়িচং আনন্দ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২০), ফকির বাজার উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪১), মিথিলাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৮), শ্রীপুর ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৩২)।

বুড়িচং উপজেলা

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী পাক্ষিক: ব্রাহ্মণপাড়া বুড়িচং; মাসিক: কৃতি ব্রাহ্মণপাড়া বুড়িচং (অনিয়মিত)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ৪২, প্রেসক্লাব ১, মহিলা সংগঠন ৮, সিনেমা হল ২, খেলার মাঠ ১৮।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৫.৫৬%, অকৃষি শ্রমিক ১.৭৯%, শিল্প ০.৬৫%, ব্যবসা ১৪.৯৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৯৫%, চাকরি ১০.৬২%, নির্মাণ ১.৫৬%, ধর্মীয় সেবা ০.২৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.০৬% এবং অন্যান্য ৯.৬%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৭১.২৩%, ভূমিহীন ২৮.৭৭%। শহরে ৭১.০৫% এবং গ্রামে ৭১.২৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, গম, সরিষা, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, তিসি, আখ, মিষ্টিআলু, পাট, তামাক।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১৭১, হাঁস-মুরগি ৪১০, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ১, কৃত্রিম প্রজনন পয়েন্ট ৫, নার্সারি ২১।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১১৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪২৫ কিমি; রেলপথ ৭ কিমি। রেলস্টেশন ১; কালভার্ট ৭৬১; হ্যালিপ্যাড ১।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা রেশমশিল্প, সুতাকল, তেলকল, ধানকল, করাতকল, ওয়েল্ডিং কারখানা, পেপারবোর্ড কারখানা,  হিমাগার।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, দারুশিল্প, সূচিশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৯, মেলা ১। কংশনগর হাট, নানুয়ার বাজার হাট, সাহেব বাজার হাট, ফকির বাজার হাট এবং ময়নামতি মেলা ও  নানুয়ার বাজার বৈশাখী মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   তাঁতবস্ত্র, আলু, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৮.৩২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.৬১%, ট্যাপ ০.৬৭%, পুকুর ০.৮৫% এবং অন্যান্য ৩.৮৭%। এ উপজেলায় অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪৮.৬৮% (গ্রামে ৪৮.৪৮% ও শহরে ৫৪.২৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৯.৭১% (গ্রামে ৩৯.৫৪% ও শহরে ৪৪.৪২%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১১.৬১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬, ইপিআই কেন্দ্র ১৯২, পোলিও ভ্যাকসিন কেন্দ্র ৯২, ক্লিনিক ২, কমিউনিটি ক্লিনিক ২০, পশু হাসপাতাল ১, পশুসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র ১।

এনজিও ব্র্যাক, আশা।  [মো. মাহফুজুর রহমান]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বুড়িচং উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।