পাতিশিয়াল

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:০৮, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

পাতিশিয়াল (Jackal)  Carnivora বর্গের Canidae গোত্রের Canis গণের নেকড়ে বা খেঁকশিয়ালসদৃশ স্তন্যপায়ী প্রজাতি। দাঁতের বিন্যাস, গর্ভধারণকাল ও স্বভাবের দিক থেকে পাতিশিয়াল নেকড়ে ও কুকুরের সাথে অনেক মিল রয়েছে। একাধারে বর্জ্যভুক ও শিকারি এই জন্তুরা আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের শুষ্ক ও উন্মুক্ত অঞ্চলের বাসিন্দা। এদের দৈর্ঘ্য সর্বাধিক ৮০ সেমি, লোম ধূসর-বাদামি, লেজ ঝোপালো। দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ ইউরোপ ও উত্তর আফ্রিকার সোনালি পাতিশিয়াল ৬০ সেমি লম্বা ও ৪৫ সেমি উঁচু, ওজন ৭-১৪ কেজি। রং ধূসর-হলুদ, পিঠ কালো।

পাতিশিয়াল নিশাচর, সন্ধ্যার পূর্ব পর্যন্ত বন-জঙ্গল বা অন্য কোন গুপ্তস্থানে লুকিয়ে থাকে। অন্ধকারে তারা ক্ষেত-খামার ও গ্রামে খাবারের সন্ধানে বের হয়। ছোট স্তন্যপায়ী ও হাঁস-মুরগিই বেশি খোঁজে, না পেলে সব ধরনের বর্জ্য খায়। বাঘের শিকারের ভুক্তাবশেষ খাওয়ার উদ্দেশ্যে এরা বাঘের কাছাকাছি থাকে। হায়নার তুলনায় শিয়ালের চিৎকার অনেক বেশি আতঙ্কজনক। সাধারণত সন্ধ্যার পরপরই এরা দলবদ্ধভাবে চিৎকার শুরু করে। খেঁকশিয়ালের মতো এটিরও লেজের গোড়ায় একটি গ্রন্থি আছে এবং তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়।


এশীয় পাতিশিয়াল


বাংলাদেশের একমাত্র পাতিশিয়াল প্রজাতি এশীয় পাতিশিয়াল বা সোনালি পাতিশিয়াল নামেও পরিচিত Canis aureus। মাথা লম্বাটে, হাঁটে পায়ের আঙুলের উপর ভর দিয়ে, পেছনের পায়ে ৪টি ও সামনের পায়ে ৫টি আঙুল। বুক ও পেট কিছুটা ফ্যাকাশে, কখনও সাদা। লেজ লালচে বাদামি, আগা কালো। প্রধানত নিশাচর হলেও দিনের বেলায়ও দেখা যায়। ছোটখাটো স্তন্যপায়ী, কীটপতঙ্গ ও টিকটিকি শিকার করে। মাধেমধ্যে পরিত্যক্ত হাড়গোড়ও খেয়ে থাকে। ফলের মধ্যে কুল অধিক পছন্দসই। আখ এবং ভুট্টাও খায়। যশোর, রাজশাহী, ঈশ্বরদী, রংপুর, সিতাবগঞ্জ ও জয়পুরহাটের মতো আখ আবাদি এলাকায় পাতিশিয়াল বেশি দেখা যায় এবং আখের অন্যতম প্রধান ক্ষতিকর জন্তু। এরা একা বা কখনও দলবদ্ধভাবে থাকে। এদের গর্ভধারণকাল ৬২ দিন। শাবকের সংখ্যা ৩-৮।

[মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম]