নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ
নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ নড়াইলের জমিদার রতন রায় ১৮৫৭ সালে নড়াইল কলেজিয়েট স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর পুত্র চন্দ্র রায় চিত্রা নদীর তীরে নড়াইল শহরের সন্নিকটে রূপগঞ্জ এলাকায় প্রতিষ্ঠিত এ স্কুলের ভবনেই ১৮৮৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন নড়াইল কলেজ। তিনি এ প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি ও আর্থিক সহায়তা দেন। মহারানী ভিক্টোরিয়ার নামানুসারে এ কলেজের নামকরণ হয় নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ। কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন যোগেন্দ্রনাথ সেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট ১৮৮৬ সালে এ কলেজে এফ.এ কোর্স (বর্তমান এইচএসসি) চালু করার অনুমতি দেয়। ১৮৯০ সালে কলেজ থেকে স্কুলকে পৃথক করা হয়। ঐ বছরই চালু হয় স্নাতক (মানবিক) শাখা। ১৯২৪ সালে আই.এসসি কোর্স চালু হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর কলেজটি কিছুকালের জন্য আর্থিক ও অন্যান্য দুর্দশায় পতিত হলেও কতিপয় সুহূদ ব্যক্তির সহায়তায় ধীরে ধীরে তা কাটিয়ে ওঠে।
১৯৬৪ সালে চালু হয় আই.কম, ১৯৬৬ সালে বি.কম এবং ১৯৬৭ সালে বি.এসসি কোর্স। ১৯৮০ সালের ১ মার্চ কলেজটি সরকারিকরণ হয়। তখন থেকে কলেজটির নাম হয় ‘নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ’।
বর্তমানে (২০১০) কলেজের ছাত্র সংখ্যা ৪২০০। এর শতকরা ৪০ ভাগ ছাত্রী। চালু বিভাগগুলি হলো: আই.এ, আই.এসসি, আই.কম, স্নাতক-কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান। ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে বাংলা, দর্শন, ব্যবস্থাপনা ও গণিত এবং ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক সম্মান কোর্স চালু হয়েছে। তবে কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে এখনও মাস্টার্স কোর্স চালু হয় নি। কর্মরত শিক্ষকশিক্ষিকার সংখ্যা ৪৫ এবং কর্মচারীর সংখ্যা ৪০।#চিত্র:নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ html 88407781.png
- নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ
কলেজের জমির পরিমাণ ১৩ একর ৮৫ শতক। ভবন সংখ্যা ১২টি। এর মধ্যে ২টি ছাত্রাবাস (১টি ছাত্রদের ও ১টি ছাত্রীদের), ১টি করে মাল্টিপারপাস হল, বিজ্ঞান ভবন, প্রশাসনিক ভবন, লাইব্রেরি, বাণিজ্য ভবন, এবং আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব এবং ৩টি একাডেমিক ভবন রয়েছে। এছাড়াও আছে জমিদার আমলে নির্মিত কারুকার্য খচিত একটি গ্যালারি ভবন। এখানে আছে ক্রীড়া বিভাগ, সাহিত্য বিভাগ, নাট্য বিভাগ, পত্রিকা বিভাগ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিভাগ। কলেজে নিয়মিত সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা হয়, এছাড়াও খেলাধুলা, বিতর্ক, বিএনসিসি-র কার্যক্রম চালু রয়েছে। [পরিমল মজুমদার]