ধূমকেতু

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২১:৫১, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

ধূমকেতু কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত অর্ধ-সাপ্তাহিক পত্রিকা। বিপ্লবীদের মুখপত্র এ পত্রিকাটি ১৩২৯ বঙ্গাব্দের ২৬ শ্রাবণ (১১ আগস্ট ১৯২২) আত্মপ্রকাশ করে। এর প্রথম সংখ্যায় নজরুলের অনলবর্ষী দীর্ঘ কবিতা ‘ধূমকেতু’ প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটি শুরুতে ফুলস্কেপ কাগজের চার পৃষ্ঠায় এবং পরে আট পৃষ্ঠায় মুদ্রিত হতো।  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি বাণী দিয়ে ধূমকেতুকে অভিনন্দন জানান, যা প্রতি সংখ্যায় পত্রিকার শিরোনামের নিচে ছাপা হতো। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়সহ অনেক দেশবরেণ্য ব্যক্তি এবং অমৃতবাজার পত্রিকা ধূমকেতুর আবির্ভাবকে উষ্ণ অভিনন্দন জানান। শরৎচন্দ্রের কিছু নিবন্ধও এতে প্রকাশিত হয়। বিপ্লব, কৃষক-মজদুর ও মধ্যবিত্তের জাগৃতি ছিল এর মূল লক্ষ্য।

ধূমকেতুতে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রবন্ধ ও কবিতার মাধ্যমে নজরুল অকুতোভয়ে স্বরাজ ও স্বাধীনতার দাবি ঘোষণা করেন। তাঁর অগ্নিঝরা ভাষা ও নির্ভীক বক্তব্যের জন্য পত্রিকাটি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং বিক্রয়ের দিক থেকে সেকালের সকল পত্রিকাকে ছাড়িয়ে যায়। পত্রিকায় বিপ্লবী বক্তব্য প্রচারের কারণে নজরুল রাজদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত হন এবং ১৯২৩ সালের ২৩ জানুয়ারি এক বছরের জন্য কারারুদ্ধ হন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ জানুয়ারি সংখ্যাটি ‘নজরুল সংখ্যা’ হিসেবে প্রকাশিত হয়। পরে কিছুদিনের জন্য বন্ধ থেকে পত্রিকাটি বীরেন সেনগুপ্ত ও অমরেশ কাঞ্জিলালের সম্পাদনায় পুনরায় প্রকাশিত হয়, কিন্তু অনিয়মিতভাবে চলে এবং এ বছরেরই মার্চ মাসে চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।

নজরুলের প্রচেষ্টায় পত্রিকার কয়েকটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল। সেগুলির মধ্যে ২০ পৃষ্ঠার ‘মোহররম সংখ্যা’ (৭ম সংখ্যা, ১৬ ভাদ্র ১৩২৯/ আগস্ট ১৯২২), ১২ পৃষ্ঠার ‘আগমনী সংখ্যা’ (১২শ সংখ্যা, ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯২২), ১২ পৃষ্ঠার ‘দেওয়ালী সংখ্যা’ (১৫শ সংখ্যা, ২০ অক্টোবর ১৯২২) এবং ‘কংগ্রেস সংখ্যা’ (৩০তম সংখ্যা, ২৭ ডিসেম্বর ১৯২২) ছিল উল্লেখযোগ্য।#চিত্র:ধূমকেতু html 88407781.png

  1. ধূমকেতর প্রথম সংখ্যার প্রচ্ছদ

মোহররম সংখ্যাটি প্রচুর ছবিসহ প্রকাশিত হয়েছিল, যার একটি ছিল বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর। আগমনী সংখ্যায় নজরুলের প্রচ্ছন্ন রাজনীতি-সম্পৃক্ত কবিতা ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ প্রকাশিত হলে ৮ নভেম্বর পত্রিকার ওই সংখ্যাটি নিষিদ্ধ করা হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়। দেওয়ালী সংখ্যায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর তুরস্কনীতি ও রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক নমনীয়তার কঠোর সমালোচনা করা হয়।

[আলি নওয়াজ]