দবির-ই-খাস
দবির-ই-খাস দিল্লি সুলতানের অধীনে একজন উচ্চপদস্থ রাজকীয় কর্মকর্তা। সুলতানি আমলে সুলতানের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ দফতর ছিল দীউয়ান-ই-ইনশা। এই দফতরের দায়িত্ব ছিল শাহী ফরমান ও রাষ্ট্রীয় পত্রালাপ সম্পর্কিত ব্যবস্থাদি নিয়ন্ত্রণ ও সম্পাদন করা। দবির-ই-খাস এই বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করতেন। এ বিভাগে সুলতানের ফরমানের প্রতিটি খসড়া তৈরি হতো এবং রাজকীয় অনুমোদন লাভের পর তা একটি নিবন্ধগ্রন্থে লিপিবদ্ধ করা হতো। এরপর ফরমানটি জারি করা হতো। খসড়া রচনার দায়িত্ব অর্পিত ছিল দবির-ই-খাসের উপর। কালক্রমে এই বিভাগের কার্যক্রম বেড়ে যাওয়ার ফলে দবির নামক কিছুসংখ্যক সহকারি নিয়োগ করা হয়। রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের সঙ্গে দবির-ই-খাস এতটাই সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন যে, তার পদকে কখনও কখনও উজির পদে পদোন্নতির সোপান বলে মনে করা হতো। বাংলায়ও দবির-ই-খাস নামে একজন কর্মকর্তার পদ চালু ছিল। ষোল শতকের বাংলা সাহিত্যে প্রায়শ দবির-ই-খাস পদের উল্লেখ পাওয়া যায়। বৃন্দাবনদাসের চৈতন্যভাগবতে সুলতান আলাউদ্দীন হোসেন শাহের (১৪৯৩ খ্রি-১৫১৯ খি) দবির-ই-খাস হিসেবে রূপ গোস্বামীর নামের উল্লেখ রয়েছে। [আবদুল করিম]