তান্ত্রিকবাদ

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২১:২৬, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

তান্ত্রিকবাদ  একটি ধর্মীয় আন্দোলন। খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে ভারতবর্ষে এর উদ্ভব হয় এবং ক্রমশ তা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় বিস্তার লাভ করে। তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্ম হিসেবে এ মতবাদ এক সময় সমগ্র পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।

তন্ত্র বলতে একজাতীয় পবিত্র গ্রন্থ এবং তান্ত্রিক বলতে এ মতের অনুসারীদের বোঝায়, যারা বেদবিরোধী। তান্ত্রিক মতবাদের সূত্রপাত মনে করা হয় এশিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশ ও আসামে কিংবা পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমের সোয়াত উপত্যকায়। সবচেয়ে প্রাচীন তন্ত্রগ্রন্থ হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মীয় মহাভৈরোচনা সূত্র ('Mahabhairocana Sutra, ৬০০ খ্রি.)। বেদে যেসব মত ও পথের কথা বলা হয়েছে সে সবেরই একটি বর্ধিত রূপ হচ্ছে তান্ত্রিকবাদ। তবে হয়ত এতে স্থানীয় বা বিদেশি অন্য ধর্মের প্রভাব যুক্ত হয়েছে।

তান্ত্রিকবাদের এ আন্দোলন বর্তমান বাংলাদেশ ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিস্তার লাভ করে পাল শাসন আমলে (৮ম-১২শ শতক)। এ সময় তান্ত্রিক বৌদ্ধ মতবাদের অনেক উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ রচিত হয়। তান্ত্রিক মতবাদের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পার্থিব জীবন ও মোক্ষের দ্বৈততা বর্জন। এ কারণে তান্ত্রিকরা বর্ণবাদ এবং বেদের বিধি-নিষেধ ও ব্রাহ্মণ্য গোড়ামিকে স্বীকার করে না। এ মতবাদের ফলে কোনো কোনো তান্ত্রিক দল নিষিদ্ধ যৌনমিলনে ব্রতী হয় এবং নারী-পুরুষের এ মিলনের প্রতীকে দ্বৈততার অবিদ্যমানতা প্রকাশ পায়। এসব ছাড়া তান্ত্রিকবাদে আছে কিছু আচার-আচরণ, যার একটি শক্তিশালী অঙ্গ হচ্ছে জাদু। আচারগুলি পালন করা হয় মন্ত্রোচ্চারণ, মুদ্রা, মন্ডল ও যজ্ঞের মাধ্যমে।  [রবার্ট এ ইয়েলে]