তাড়াস উপজেলা
তাড়াস উপজেলা (সিরাজগঞ্জ জেলা) আয়তন: ২৯৭.২০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২০´ থেকে ২৪°৩৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°১৫´ থেকে ৮৯°২৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে শেরপুর (বগুড়া) উপজেলা, দক্ষিণে ভাঙ্গুরা ও চাটমোহর উপজেলা, পূর্বে রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে গুরুদাসপুর ও সিংড়া উপজেলা।
জনসংখ্যা ১৬৭৬৪৭; পুরুষ ৮৪৮৯৬, মহিলা ৮২৭৫১। মুসলিম ১৫১৯০৩, হিন্দু ১৫৫০৯, বৌদ্ধ ২০৪ এবং অন্যান্য ৩১।
প্রশাসন তাড়াস থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ৮ | ১৭৮ | ২৫২ | ৬৩৯৭ | ১৬১২৫০ | ৫৬৪ | ৫৫.২ | ৩৪.২ |
উপজেলা শহর | ||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
৫.০৯ | ১ | ৬৩৯৭ | ১২৫৭ | ৫৫.২৩ |
ইউনিয়ন | ||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন(একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার(%) | |
</nowiki>পুরুষ | মহিলা | |||
তাড়াস ৮৪ | ৭১২৪ | ১১৪৪৭ | ১০৮১৯ | ৩৬.৫৬ |
তালম ৭৩ | ৯৫২৩ | ৯৮৭৭ | ৯৬০২ | ৩৮.৬৩ |
দেশীগ্রাম ২১ | ৯৩২৪ | ৯১৪২ | ৯২২১ | ২৮.৫০ |
নওগাঁ ৫২ | ৭১৪৯ | ১১৬৮৯ | ১১৪৯৩ | ৩৫.৯৯ |
বারুহাস ১০ | ১১৯৭৬ | ১১৭৭২ | ১১০৬৯ | ৩৯.৫৪ |
মাগুরা বিনোদ ৪২ | ৮৯১৪ | ১০৩৪৪ | ১০০৮৫ | ৩৩.৯১ |
মাধাইনগর ৩১ | ৮৪৩৬ | ১০১০৪ | ৯৯৭৮ | ৩৩.২৩ |
সগুনা ৬৩ | ১০৯৯২ | ১০৫২১ | ১০৪৮৪ | ৩২.৮১ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ ভাগনের মসজিদ (নবগ্রাম, ১৪৫৪), শাহী মসজিদ (নবগ্রাম, ১৫২৬), গদাই সরকার মসজিদ (বারুহাস), সান্দুরিয়া জামে মসজিদ (তাড়াস), বারুহাস মসজিদ (১৩২০), ইসলামপুর জামে মসজিদ (তাড়াস, ১৮০২) ও তাড়াস শিবমন্দির।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর এ উপজেলার নওগাঁয় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ১৩০ জন পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয়।
চিত্র:তাড়াস উপজেলা html 88407781.png
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১ (মাগুড়া ইউনিয়ন, আসবাড়িয়া গ্রাম)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৪৮, মন্দির ৫, মাযার ১, গির্জা ২, তীর্থস্থান ১।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৫.০৪%; পুরুষ ৪১.৪০%, মহিলা ২৮.৫৬%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৫, কারিগরি বিদ্যালয় ২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৪, মাদ্রাসা ১৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: তাড়াস ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ২০, লাইব্রেরি ১, সিনেমা হল ১, নাট্যমঞ্চ ১, মহিলা সংগঠন ৪।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৮৪.৭৫%, অকৃষি শ্রমিক ১.৬২%, শিল্প ০.২৬%, ব্যবসা ৪.৯০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৯৯%, চাকরি ২.৭৪%, নির্মাণ ০.৪১%, ধর্মীয় সেবা ০.১৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৭% এবং অন্যান্য ৪.১২%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৪.১১%, ভূমিহীন ৩৫.৮৯%। শহরে ৫৮.২৯% এবং গ্রামে ৬৪.৩২% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, সরিষা, ভূট্টা, ডাল, রসুন, পিঁয়াজ, কলাই।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, পাট।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, তরমুজ, পেঁপে, কলা।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৫০ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা বরফকল।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, নকশিকাঁথা শিল্প, চাটাই, বাঁশ ও বেতের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২২, মেলা ৩। তাড়াস হাট, উলিপুর হাট, বোয়ালিয়া হাট, বারুহাস হাট, বীনশারা হাট, গুলটা বাজার এবং বেহুলার মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, চাল, মাছ, তরমুজ।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসুচির আওতাধীন। তবে ২০.৯৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৪৮%, ট্যাপ ০.২১%, পুকুর ০.১৮% এবং অন্যান্য ৪.১৩%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলায় ১৮.৯৬% (গ্রামে ১৭.৩৭% ও শহরে ৬৪.০৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭১.৮৫% (গ্রামে ৭৩.২৯% ও শহরে ৩১.০৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৯.১৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৮৯৭, ১৯৪৩ ও ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এছাড়া ১৮৮৫ ও ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে এ উপজেলার ঘরবাড়ি ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, ওয়ার্ল্ড ভিশন। [এম.জি নেওয়াজ]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; তাড়াস উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।