জৈব মৃত্তিকা
জৈব মৃত্তিকা (Organic Soil) জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ মৃত্তিকা। পিট (আংশিক বিয়োজিত) ও মাক (অধিক বিয়োজিত) জৈব মৃত্তিকার উদাহরণ। মৃত্তিকার শ্রেণিবিন্যাসে জৈব মৃত্তিকাকে হিস্টোসল বর্গে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যথেষ্ট পরিমাণে জৈব পদার্থের উপস্থিতির কারণে শাক-সবজি ও অগভীর শিকড়বিশিষ্ট গাছপালা ও অনুজীবের জন্য এ মৃত্তিকা অনুকূল ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব অবস্থা সৃষ্টি করে। এসব মৃত্তিকাতে তাৎপর্যপূর্ণ পরিমাণে নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও সালফার সাধারণত জৈব যৌগ হিসেবে অবস্থান করে। সুতরাং জৈব মৃত্তিকা এসব পুষ্টি উপাদানে অবশ্যই সমৃদ্ধ থাকে। প্রাণরাসায়নিক দিক থেকে জৈব মৃত্তিকা অত্যধিক বাফার ক্ষমতাসম্পন্ন, অর্থাৎ চুন প্রয়োগের ফলে সৃষ্ট ক্ষারত্ব ও সার প্রয়োগের ফলে সৃষ্ট অম্লত্বের মান যাতে দ্রুত পরিবর্তন না হয় তা প্রতিরোধে সক্ষম।
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় বদ্বীপ অববাহিকা এলাকাতে জৈব মৃত্তিকা (পিট) ব্যাপক আকারে বিস্তৃত। এসব মৃত্তিকা ভূ-পৃষ্ঠে অবস্থান করতে পারে বা এঁটেল প্রকৃতির পৃষ্ঠমৃত্তিকা দ্বারা ঢাকাও থাকতে পারে। আর্দ্র অবস্থায় এসব মৃত্তিকার বিক্রিয়া নিরপেক্ষ কিন্তু যদি এদেরকে শুকাতে দেওয়া হয় তবে বিক্রিয়া মধ্যম থেকে প্রবল অম্ল হয়ে থাকে। খুলনার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থিত কিছু মৃত্তিকাকে যদি নিষ্কাশন করা হয় তবে এদের অম্লমাত্রা (পি.এইচ ৪.০-এর চেয়ে কম) বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে। জৈব মৃত্তিকা কিছু কিছু চুনহীন গাঢ় ধূসর পললভূমি মৃত্তিকার পৃষ্ঠে, এসিড বেসিন এঁটেল এবং এসব মৃত্তিকা বা অন্যান্য পললভূমি মৃত্তিকাতে আবৃত পিট স্তর হিসেবে বিদ্যমান থাকে। [রামেশ্বর মন্ডল]