দুপচাঁচিয়া উপজেলা
দুপচাঁচিয়া উপজেলা (বগুড়া জেলা) আয়তন: ১৬২.৪৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৪৮´ থেকে ২৪°৫৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০৫´ থেকে ৮৯°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ক্ষেতলাল উপজেলা, দক্ষিণে আদমদীঘি ও কাহালু উপজেলা, পূর্বে শিবগঞ্জ ও কাহালু উপজেলা, পশ্চিমে আদমদীঘি ও আক্কেলপুর উপজেলা।
জনসংখ্যা ১৬০৮৯৪; পুরুষ ৮১৬০৪, মহিলা ৭৯২৯০। মুসলিম ১৪৭৪০৫, হিন্দু ১৩৩৮৭ এবং অন্যান্য ১০২।
জলাশয় প্রধান নদী: ইছামতি, নাগর।
প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৮৮০ সালে এবং থানা উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৯৮৩ সালে। দুপচাঁচিয়া পৌরসভা গঠিত হয় ২০০০ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ৬ | ১১৫ | ২১২ | ২১৭৬১ | ১৩৯১৩৩ | ৯৯০ | ৫২.৬ | ৪৪.৩ |
পৌরসভা | |||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
১০.২১ | ৯ | ৩৭ | ১৭৬০৯ | ১৭২৫ | ৫১.১ |
পৌরসভার বাইরে উপজেলা শহর | |||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
১.২৮ | ১ | ৪১৫২ | ৩২৪৪ | ৫৮.৭ | |
ইউনিয়ন | |||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন(একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার(%) | ||
</nowiki>পুরুষ | মহিলা | ||||
গুনাহার ৫৪ | ৭২১০ | ১৩০৪৩ | ১২৭৯৯ | ৪৪.৯০ | |
গোবিন্দপুর ৪০ | ৭২০৫ | ১৪৪০৬ | ১৪২৪৩ | ৪৭.৮৭ | |
চামরুল ১৩ | ৭৯৪৮ | ১৩২৯৭ | ১৩০৯০ | ৪০.০৫ | |
জিয়ানগর ৮১ | ৫৪৬২ | ৯৯৭৪ | ৯৫৯৪ | ৪২.৫৯ | |
তালোড়া ৬৭ | ৫৬৬৪ | ১৩১০৫ | ১২৫৮৬ | ৪৯.১০ | |
দুপচাঁচিয়া ২৭ | ৬৬৫০ | ৮৬৬৩ | ৮৪৮৫ | ৪২.১৮ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ গয়াবন্ধ মাযার, পীর জিয়াউদ্দীনের মাযার, গোবিন্দপুর মন্দির (গোবিন্দপুর)।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল পাকবাহিনী প্রথম এ উপজেলায় প্রবেশ করে। ১১ এপ্রিল তারা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ১ জন এবং জমিদার ক্ষিতিশ চন্দ্র চৌধুরীর বাড়িতে ৯ জনকে হত্যা করে। আগস্ট মাসের প্রথমদিকে মুক্তিযোদ্ধারা এ উপজেলার বড় চাপড়া রেলওয়ে ব্রিজ এবং আগস্ট মাসের শেষদিকে জিয়ানগরের আক্কেলপুর রায়কালী রাস্তার ওপরে কাহালু ব্রিজ ধ্বংস করে। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে ২ জন ইপিআর সদস্য নিহত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১ (তালোড়া দুপচাঁচিয়া সড়কের পাশে পদ্মপুকুর নামক স্থানে)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৪৬, মন্দির ৫২, মাযার ৪।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৫.৪%; পুরুষ ৫১.৬%, মহিলা ৩৯.১%। কলেজ ৫, কারিগরি কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১, মাদ্রাসা ২২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: তালোড়া আলতাফ আলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), দুপচাঁচিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৩), দুপচাঁচিয়া পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৪)।
চিত্র:দুপচাঁচিয়া উপজেলা html 88407781.png
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী কলমের ছোঁয়া।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ৫৯, লাইব্রেরি ১, শিল্পকলা একাডেমী ১, ক্লাব ১, সিনেমা হল ৪, মিলনায়তন ১, কমিউিনিটি সেন্টার ৪।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৬.৪৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.৭৭%, শিল্প ০.৭৪%, ব্যবসা ১৩.৮৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৯৭%, চাকরি ৪.৪৩%, নির্মাণ ০.৬৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৬৫% এবং অন্যান্য ৬.৩৯%।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আলু, সরিষা, গম।
বিলুপ্ত ও বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, অড়হর।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, তাল।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৭৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৪০ কিমি; রেলপথ ১০ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা রাইসমিল, তেলমিল, স’মিল, খেলনা শিল্প, এলুমিনিয়াম ফ্যাক্টরি, সার কারখানা, বিস্কুট ফ্যাক্টরি, আইসক্রিম ফ্যাক্টরি।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, বুননশিল্প।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৫, মেলা ১৩। ধাপের হাট, জিয়ানগর হাট, তালোড়া হাট, সাহারপুকুর হাট এবং ধাপের মেলা, গয়াবান্দা মেলা, নবান্ন মেলা ও বিজয় মেলা।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, চাল, বিস্কুট, মাছ, দুধ।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩২.০২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬%, ট্যাপ ০.৪৯%, পুকুর ০.০৮% এবং অন্যান্য ৩.৪৪%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৮.৫৯% (গ্রামে ২৪.৮০% ও শহরে ৫৪.৯০%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৪.৬৪% (গ্রামে ২৫.৩৫% ও শহরে ১৯.৭০%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৪৬.৭৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পল্লী স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র ৩, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৫, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১, ক্লিনিক ৪, ডায়াগ্নস্টিক সেন্টার ১।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ২০০৪ সালের এপ্রিলে ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলার ধাপসুলতানগঞ্জ, খোলাশ, মোস্তফাপুর ও নিমাইকোলা গ্রামের প্রায় ২ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয় এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এনজিও আশা, ব্র্যাক, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ, এসডিও, সেবা। [মো খায়রুল আলম পুলক]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; দুপচাঁচিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।