সয়াবিন
সয়াবিন (Soybean) Leguminosae গোত্রের উদ্ভিদ প্রজাতি Glycine max। এটি চীনের স্থানীয় উদ্ভিদ। আধুনিক যুগের আগে সয়াবিন চীন থেকে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এখন কমবেশি সারা পৃথিবীতে সয়াবিনের চাষ হয়। চাষের আওতাধীন সয়াবিনের জাতের সংখ্যা ২,৫০০ বা ততোধিক।
১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে (প্রধানত নোয়াখালী ও ফেনী জেলায়) সয়াবিন চাষ শুরু হয়। যেকোন ঋতুতেই চাষ করা যায়, হেক্টর প্রতি উৎপাদন ৯০০-১৩০০ কেজি। সয়াবিন গাছ ৩০ থেকে ৯০ সেন্টিমিটার উঁচু হয়। এর শেকড়গুচ্ছ মাটির এক মিটার নিচে পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারে। গাছের কান্ডে ফুল হয়। ফুল সচরাচর সাদা, গোলাপি ও বেগুনি রঙের হয়ে থাকে। একটি শুঁটিতে খোসায় সর্বোচ্চ তিনটি পর্যন্ত বীজ জন্মে। আর এই বীজগুলিকেই সয়াবিন বলা হয়।
সয়াবিনের বীজ অত্যন্ত পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। এর বীজ ভোজ্য তেলের প্রধান উৎস। পূর্ব-এশিয়ায় কচি ও শুকনো বীজ যথাক্রমে সবজি ও ডাল হিসেবে ব্যবহূত হয়। পরিণত বীজ থেকে শিশুখাদ্য, সয়া-দুধ, দই ও পনির, আর গাঁজানো বীজ থেকে সয়া-স্যস তৈরি হয়। শুষ্ক বীজে আছে ১৮-২০% চর্বি, প্রায় ৩৫% শর্করা ও ৪৪% প্রোটিন। গিসারিন, রং, সাবান, পাস্টিক, মুদ্রণের কালি ইত্যাদি দ্রব্য উৎপাদনের ক্ষেত্রেও সয়াবিন একটি অপরিহার্য উপাদান। কাঁচা সয়াবিন গাছ গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার্য। এর শুকনো খড় জমির উর্বরতা বাড়ায়। সয়াবিনের উচ্চ পুষ্টিগুণ এবং স্বল্প উৎপাদন ব্যয়ের কারণে এর ব্যবহার সম্প্রতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। [মোস্তফা কামাল পাশা]