রহমান, ফজলুর
রহমান, ফজলুর (১৯০৫-১৯৬৬) রাজনীতিক। ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার সাইনপুকুর গ্রামে ১৯০৫ সালে তাঁর জন্ম। মাধ্যমিক পর্যায়ের লেখাপড়া সম্পন্ন করেন ভারগা উচ্চ বিদ্যালয়ে। তিনি ১৯২৯ সালে ইতিহাস বিষয়ে এম.এ এবং ১৯৩৩ সালে বি. এল ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি আইন ব্যবসায়ে নিয়োজিত হন। ফজলুর রহমান তাঁর কর্মজীবনের শুরুতেই মুসলিম লীগে যোগ দেন। তিনি ছিলেন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য এবং নিখিল পাকিস্তান মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তিনি ঢাকা শহর থেকে ১৯৩৭ সালে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৪৩ সালে ফজলুর রহমান ব্যবস্থাপক সভার চিফ হুইপ এবং ১৯৪৬ সালে বঙ্গীয় সরকারের রাজস্ব মন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯৪৬ সালে পুনরায় তিনি ব্যবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তিনি লিয়াকত আলী খানের কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা, বাণিজ্য ও শরণার্থী বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫১-১৯৫৩ সালে তিনি খাজা নাজিমউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার শিক্ষা ও বাণিজ্য মন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের প্রাথী হিসেবে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৫৫ সালে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের ভোটে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পাকিস্তান দ্বিতীয় গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৭ সালে তিনি আই.আই চুন্দ্রীগড়ের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বাণিজ্য, অর্থ ও আইন বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ফজলুর রহমান ছিলেন বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তি। তিনি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহি পরিষদের সদস্য, বঙ্গীয় রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য, পাকিস্তান হিস্টোরিক্যাল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট।
পাকিস্তানের ভাবাদর্শ ও তাহজীব তমদ্দুনের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ বিশ্বাস ও আস্থা। পাকিস্তান আন্দোলনে তাঁর অবদান উলেখযোগ্য। উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার এবং আরবি হরফে বাংলা লেখার অন্যতম প্রবক্তা ছিলেন ফজলুর রহমান। আইয়ুব খানের সামরিক সরকার কর্তৃক ১৯৬০ সালে তাঁর ওপর এবডো আইন প্রয়োগ করা হয়। ১৯৬৬ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। [মোহাম্মদ কবিরুল হাসান]