সার্ভে অব বাংলাদেশ
সার্ভে অব বাংলাদেশ বাংলাদেশের জাতীয় জরিপ ও মানচিত্র অঙ্কনকারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি বেঙ্গল সার্ভে নামে ১৭৬৭ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ বাংলায় কাজ করে আসছিল। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ভারত বিভক্তির পর প্রতিষ্ঠানটি সার্ভে অব পাকিস্তান নাম নিয়ে এর ঢাকাস্থ আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ শুরু করে। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর এই আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সার্ভে অব বাংলাদেশ নাম ধারণ করে। এর প্রধান নির্বাহী একজন মহাপরিচালক যার পদ সার্ভেয়র জেনারেল অব বাংলাদেশ।
এই প্রতিষ্ঠানের মুখ্য উদ্দেশ্য ও দায়িত্ব হলো: ত্রিকোণোমিতিক এবং প্রাথমিক জিওডেটিক নিয়ন্ত্রণ নেটওয়ার্ক স্থাপন; ভূমি জরিপ ও বিভিন্ন আয়তনের মানচিত্র অঙ্কন, সংস্করণ ও নবায়ন করা; দেশের আর্ন্তজাতিক সীমানা নির্ধারণ; ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক মানচিত্র প্রস্ত্তত করা; আকাশ থেকে ছবি উঠানো ও তার নিয়ন্ত্রণ, মুদ্রণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং নেগেটিভ সংরক্ষণ করা; ভূসংস্থানিক ও অন্যান্য থিমাটিক মানচিত্র তৈরি করা।
বাংলাদেশে আকাশ থেকে ছবি প্রণয়নে সার্ভে অব বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত ‘Rules for Classification, Custody and Issue of Aerial Photographs’ অনুসরণ করে। সার্বিকভাবে এগুলি কৌশলগত (classified photographs) এবং সাধারণ (public photographs) এই দুই ভাগে বিভক্ত। সর্বশেষ ১৯৯৮-২০০০ সালে আকাশ থেকে ছবি তোলা হয়। নিরাপত্তা সংস্থার ছাড়পত্র নিয়ে জাতীয় উন্নয়ন কর্মকান্ডে নিয়োজিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব ছবি ব্যবহার করতে পারে। সার্ভে অব বাংলাদেশ ২০০৪ সালের মধ্যে সমগ্র বাংলাদেশের উপাত্ত সংগ্রহের লক্ষ্যে ১:৫০,০০০ স্কেলে জিআইএস প্রযুক্তিতে টপোগ্রাফিক্যাল ডাটাবেজ তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।
ঊনিশ শতকের শেষভাগে ১:৫০,০০০ স্কেলে বঙ্গদেশের টপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্র তৈরি করা হয়েছিল। মানচিত্র আধুনিকায়ন একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। প্রতি ৫-৭ বছর পর পর তা সংশোধিত হয়। বর্তমানে সার্ভে অব বাংলাদেশ ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাংলাদেশের মানচিত্র হালনাগাদ করে, নিজস্ব অপসেট ছাপাখানায় সকল মানচিত্র ছাপানোর কাজ করে এবং তেজগাঁও-এ নিজস্ব ভবনে অবস্থিত বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে বিক্রয় করে। [মাসুদ হাসান চৌধুরী]