সুন্নী
সুন্নী আরবী সুন্না শব্দের সম্বন্ধবাচক বিশেষ্য। সুন্না অর্থ পদ্ধতি রীতি, প্রথা, বিধান, আচরণ ইত্যাদি। সাহাবীগণ হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর বাণী, কর্ম ও নির্দেশাদি পূর্ণরূপে অনুসরণ করেছেন বলে তাঁদের উক্তি, কাজ এবং নির্দেশাদিও সুন্নাহ্র অন্তর্ভুক্ত, মহানবী (স.) ও সাহাবীদের সুন্নাহ্র অনুসারিগণই সুন্নী। তাঁরা সাধারণত ‘আহলু’স্-সুন্না: ওয়া’ল-জমা‘আ’ নামে অভিহিত হন। সুন্নীগণ নিজেদেরকে ‘আল-ফির্কাতু’ন-নাজিয়্যা:’ অর্থাৎ ত্রাণপ্রাপ্ত দল বলে ধারণা করেন। তাঁদের মতে এদলের প্রথম সারিতে আছেন সাহাবীগণ।
পরে মুসলিম মিল্লাত কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়। উল্লেখযোগ্য দলগুলো হলো খারিজী, শী’আ, মু’তাযিলী ও সুন্নী। সুন্নীগণই সংখ্যায় অধিক।
বাংলাদেশে অধিকাংশ মুসলমান সুন্নী। সুন্নী (আহ্লু’স-সুন্না: ওয়া’ল-জমা’আ:) নামটির উদ্ভব হয় ‘আববাসী খলীফা আল-মুতাওয়াক্কিলের আমলে (২৩২-৪৭ হি.)। খলীফা আল-মুতাওয়াক্কিল নিজে সুন্নী ছিলেন। তাঁকে ‘মুহ্য়ুস-সুন্না:’ (সুন্না:র পুনরুজ্জীবন সাধনকারী) খেতাবে ভূষিত করা হয়েছিল। পরে সুন্নীদলটি খলীফা ও বাদশাহগণের পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেছে। সুন্নী ‘আকীদা ও মতবাদের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণে বিশেষ অবদান রেখেছেন আবুল-হাসান আল আশ্‘আরী (মৃ.হি. ৩২৪) ও আবূমানসূর আল-মাতুরীদী (মৃ. হি. ৩৩৩)।
সুন্নীগণ কয়েকটি দলে বিভক্ত; ১ মুকাল্লিদ-ফিক্হী ইমামদের (যেমন চার মায্হাবের ইমামদের) অনুসারীগণ, ২. গায়র মুকাল্লিদ-মায্হাব অস্বীকারকারী - এঁরা সালাফী ও আহ্ল-ই-হাদীস নামে পরিচিত, এবং ৩. আহ্লু’য-যাহিব, আল কুরআন ও হাদীসের কেবল প্রকাশ্য অর্থগ্রহণকারী আরও কিছু অপধান দল। [আ.ত.ম মুছলেহউদ্দীন]