মাটিরাঙ্গা উপজেলা
মাটিরাঙ্গা উপজেলা (খাগড়াছড়ি জেলা) আয়তন: ৪৯৫.৩৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫৬´ থেকে ২৩°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৪৪´ থেকে ৯১°৫৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তর ও পশ্চিমে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে রামগড় উপজেলা, পূর্বে পানছড়ি, খাগড়াছড়ি সদর ও মহালছড়ি উপজেলা।
জনসংখ্যা ১০৬৩২২; পুরুষ ৫৫৩৭০, মহিলা ৫০৯৫২। মুসলিম ৭১০৫৫, হিন্দু ২৩৩০৩, বৌদ্ধ ১৭৮, খ্রিস্টান ১১৬৯০ এবং অন্যান্য ৯৬। এ উপজেলায় ত্রিপুরা, চাকমা, মারমা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
জলাশয় গোমতি, পিলাক ও ফেনী নদী এবং ধলিয়া খাল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন মাটিরাঙ্গা থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮০ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ৭ | ২৮ | ৩৪২ | ৮৩০৬ | ৯৮০১৬ | ২১৫ | ৫৭.৮ | ৩৬.১ |
উপজেলা শহর | ||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
২.৫৯ | ১ | ৮৩০৬ | ৩২০৭ | ৫৭.৮৩ |
ইউনিয়ন | ||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |
পুরুষ | মহিলা | |||
গুইমারা ৩৫ | ২২৪০০ | ৮৩৬৭ | ৭৫১৫ | ৩৮.২৭ |
গুমতি ৪৭ | ২৫৬০০ | ৮৬৩৬ | ৮১৬৭ | ৩৫.২৪ |
তবলছড়ি ৭৬ | ৭৬৮০ | ৮১৩৯ | ৭৬৭৩ | ৩৫.৪৯ |
তাইনডং ৮৩ | ১০৮৮০ | ৬৫৪৫ | ৬৪৫৯ | ৩৭.৬৯ |
বড়নালা ১১ | ৯৬০০ | ৪৮৭৭ | ৪১৫৩ | ৪১.৬১ |
বেলছড়ি ২৩ | ১১৫২০ | ৫৫৯১ | ৫১৪৫ | ৩৯.৬৯ |
মাটিরাঙ্গা ৫৯ | ৩৩৯২০ | ১৩২১৫ | ১১৮৪০ | ৩৯.০৩ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ আলুটিলা চৈত্য বৌদ্ধ বিহার, ভগবান টিলা।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৫৫, মন্দির ২৭, প্যাগোডা ২৫, তীর্থস্থান ১ (মাতাই পুখিরি)। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মাটিরাঙ্গা জামে মসজিদ, তৈলাফাং শিব মন্দির, গুমতি শিব মন্দির।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৭.৯%; পুরুষ ৪৬.১%, মহিলা ২৯%। কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৫, কমিউনিটি স্কুল ১২, বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র ৪, মাদ্রাসা ৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মাটিরাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯২), মাটিরাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মাটিরাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তবলছড়ি টি.কে উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫২), তবলছড়ি কদমতলি হাইস্কুল (১৯৫৯), মাটিরাঙ্গা কারিগরি ইনস্টিটিউট, তাইনডং ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৮২)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: পার্বত্য বাণী।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, সিনেমা হল ৫, মহিলা সংগঠন ৪, খেলার মাঠ ২০, ক্লাব ১০।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬০.৫%, অকৃষি শ্রমিক ৯.৭৯%, শিল্প ০.৪৬%, ব্যবসা ১১.৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৫৩%, চাকরি ৫.৪৯%, নির্মাণ ০.৫৬%, ধর্মীয় সেবা ০.২৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৫% এবং অন্যান্য ১০.২৯%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৩৬.৯২%, ভূমিহীন ৬৩.০৮%। শহরে ২৬.৭৯% এবং গ্রামে ৩৭.৬৮% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, রাবার, আখ, আলু, ভূট্টা, তুলা, অড়হর, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি পাট, কাউন, সরিষা, তিল, মানকচু।
প্রধান ফল-ফলাদিব কাঁঠাল, কলা, আম, জাম, লিচু, পেঁপে, লেবু, আনারস, কুল, আতা, পেয়ারা, কামরাঙা, বেল, বাতাবি লেবু।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৬৩, হাঁস-মুরগি ৪০, হ্যাচারি ১।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা স’মিল, আটাকল, প্লাইউড ফ্যাক্টরি, ব্রিকফিল্ড।
কুটিরশিল্প মৃৎশিল্প, সূচিশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ, কাঠের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা মাটিরাঙ্গা হাট, গুইমারা হাট, তবলছড়ি হাট, বেলছড়ি হাট, গুমতি হাট, তাইনডং হাট ও ক্যাজরী চৌধুরীর মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য কাঠ, ধান, তুলা, কলা, পেঁপে।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৮.১৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৫৬.৮%, ট্যাপ ০.২৬%, পুকুর ৪.৬৬% এবং অন্যান্য ৩৮.২৮%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ১৯.৮৬% (গ্রামে ১৫.৭১% এবং শহরে ৭৫.৭৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬৪.৮১% (গ্রামে ৬৮.০৩% এবং শহরে ২১.৩৬%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ১৫.৩৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৮, পল্লীস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩।
এনজিও ব্র্যাক। [প্রশান্ত কুমার ত্রিপুরা]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মাটিরাঙ্গা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।