ভাসমান হাসপাতাল
ভাসমান হাসপাতাল একটি জাহাজের ওপর প্রতিষ্ঠিত দাতব্য হাসপাতাল। গ্রামের মানুষের চিকিৎসা এবং পঙ্গুত্বরোধের জন্য ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (IFB) নামের একটি বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক এটি চালু হয়। সংস্থাটি ১৯৯৩ সালের ২৫ জুলাই ট্রাস্ট হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে। ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ১৯৯৯ সালের এপ্রিল মাসে ‘জীবন তরী’ নামে পরিচিত বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ ধরনের একটি ভাসমান হাসপাতাল চালু করে। দেশের প্রধান প্রধান নদীর ধারের মানুষ, যারা শহর বা নগরে খুব কমই যেতে পারে, তাদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এ হাসপাতালটিতে তিন শয্যাবিশিষ্ট অপারেশন-পরবর্তী রোগীদের জন্য একটি কক্ষ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি অপারেশন থিয়েটার, রোগীদের জন্য ১২টি পৃথক শয্যা, এক্স-রে এবং প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের জন্য আলাদা কক্ষ এবং বহির্বিভাগীয় রোগীদের জন্য অপেক্ষা করার একটি কক্ষ রয়েছে।
‘জীবন তরী’ ভাসমান হাসপাতালটি সাধারণ চিকিৎসা এবং শল্য চিকিৎসা দুধরনেরই স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও সেবা প্রদান করে। এখানে জটিল চক্ষুরোগ এবং নাক-কান-গলা (ENT)-র চিকিৎসার জন্য অস্ত্রোপচার ও পঙ্গুত্বরোধের জন্য অর্থোপেডিক রোগ সংক্রান্ত শল্য চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন জরুরি অবস্থায় এটি ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল হিসেবেও সেবাদান করে থাকে। একজন প্রশাসক ছাড়াও তিনজন সার্বক্ষণিক চিকিৎসক (চক্ষু, অর্থোপেডিক এবং নাক-কান-গলা), ছয়জন নার্স, প্যাথলজি ও রেডিওলজির জন্য টেকনিশিয়ান, প্রশাসনিক সহকারী, স্বাস্থ্য শিক্ষক, রক্ষণাবেক্ষণ তত্ত্বাবধায়ক এবং চারজন সাহায্যকারী কর্মচারী এই হাসপাতালটিতে কর্মরত।
‘জীবন তরী’ হাসপাতালটি অক্টোবর ২০০০ পর্যন্ত ৫৬,৬৭২ জনকে বিভিন্ন চিকিৎসা এবং ৩,৭৮৭ জনকে শল্য চিকিৎসা প্রদান করেছে। এ হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। প্রচুর সংখ্যক শারীরিক প্রতিবন্ধী দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে আসে। [এস.এম হুমায়ুন কবির]