লিচু

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:৫৮, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
লিচু

লিচু (Litchi)  Sapindaceae গোত্রের Litchi chinensis গাছের ফল। লিচু ফলের বাকল পাতলা, শাঁস নরম ও মিষ্টি এবং বীজ একটি। মূল আবাস চীন দেশে, বার্মা ও ভারতে পৌঁছয় ১৭শ শতকে। বাংলাদেশের সবগুলি জেলায়ই লিচু ফলানো সম্ভব, তবে এখনও রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, যশোর, কুষ্টিয়া ও ময়মনসিংহ জেলাগুলিতেই চাষ মূলত সীমিত। দেশের বৃক্ষজাত ফলের মধ্যে আমের পরই লিচুর স্থান।

লিচু পর্যাপ্ত ডালপালাসহ মাঝারি থেকে বড় গাছ, ১২ মিটার পর্যন্ত উঁচু, উপরিভাগ গোল, চিরসবুজ। পাতা পক্ষাকার যৌগিক, পত্রিকা ৪-৭, ওপর চকচকে, নিচ হালকা সবুজ। কচিপাতা তামাটে, মাঝে মধ্যে থোকা থোকা গজায়। মঞ্জরি যৌগ-রেসিম (raceme), তাতে একলিঙ্গ বা দ্বিলিঙ্গবিশিষ্ট ছোট ছোট সাদাটে ফুল।

ফল একবীজীয় নাট (nut), ধরে থোকা থোকা, আকার ও আকৃতি বিবিধ। পীড়কাময় (papillate), গোলাপী লাল ত্বকের নিচেই ফলের খাবারযোগ্য অংশ- অ্যারিল (aril), তার নিচে থাকে গাঢ় বাদামি তেলতেলে একক বীজ।

লিচুর জন্য উষ্ণ আর্দ্র জলবায়ু আবশ্যক। শুকনো গরম বাতাস ফলের জন্য ক্ষতিকর। গভীর দোঅাঁশ মাটি লিচু চাষের জন্য সর্বোত্তম। জলাবদ্ধতা সহ্য করতে না পারলেও ভেজা মাটিই পছন্দ, কেননা তাতে শিকড়ে দ্রুত সহযোগী ছত্রাকযোগ (mycorrhiza) গড়ে ওঠে। বিভিন্ন দেশে ফলানো বহু জাতের লিচুর অধিকাংশই চীন দেশে উদ্ভূত। অনেক দেশেই বীজ থেকে উৎপন্ন নির্বাচিত লিচুগাছে যথেষ্ট উচ্চমানের ফল ফলে। বাংলাদেশে তেমন কোন নামী জাতের লিচু নেই। কিন্তু ব্যবসায়িক গুণসম্পন্ন অনেকগুলি স্থানীয় জাতের লিচু আছে যেগুলি দুই শ্রেণিতে বিভক্ত- দেশী ও বোম্বাই। ফলের খাবার উপযোগী অংশে (ফলের ওজনের ৫০-৭০%) আছে প্রধানত শর্করা (চিনি), প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন ‘বি’ এবং ‘সি’, ক্যালসিয়াম ও লোহা। লিচু তাজাই খাওয়া হয়, তবে এ দিয়ে চমৎকার শরবত ও টিনজাত সামগ্রীও তৈরি করা যায়। চীনাদের মধ্যে ‘লিচু-বাদাম’ নামের শুকনো লিচু খুবই জনপ্রিয়।

[মো. নূরুল আমীন]

আরও দেখুন ফল।