মির্জা জান তাপিশ
মির্জা জান তাপিশ (?-১৮১৪) উর্দু ও ফারসি ভাষার কবি, লেখক। তাঁর প্রকৃত নাম মির্জা মোহাম্মদ ইসমাইল; ‘তাপিশ’ (উত্তাপ) তাঁর কাব্যনাম এবং সাহিত্যাঙ্গনে তিনি মির্জা জান তাপিশ নামেই সমধিক পরিচিত।
তাপিশের পিতা মির্জা ইউসুফ বেগ বোখারা থেকে দিল্লিতে এসে সেনাবাহিনীতে চাকরি নেন। তাপিশও কর্মজীবনের শুরুতে পিতার ন্যায় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন; পরে জীবিকার সন্ধানে মুর্শিদাবাদে এসে ঢাকার নবাব শামসদ্দৌলার সাহচর্য ও পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন। নবাবের সঙ্গী হিসেবে তিনি কিছুকাল ঢাকায় অবস্থান করেন।
তাপিশ ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে শামসদ্দৌলার সঙ্গে বন্দি হন এবং কলকাতায় কারাদন্ড ভোগ করেন। পরে মুক্ত হয়ে তিনি ফোর্ট উইলিয়ম কলেজে ফারসি ভাষায় নথি ও পান্ডুলিপি লেখকের চাকরি নেন।
মির্জা জান তাপিশ তাঁর প্রথম রচনা শামসুল বায়ান ফি মুসতাহালাত-ই-হিন্দোস্তান (১৭৯২) গ্রন্থের শিরোনামে বন্ধুত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ শামসদ্দৌলার নাম যুক্ত করেন। এটি বাগ্ধারা, প্রবাদ ও পরিভাষা বিষয়ক একটি ফারসি গ্রন্থ। গ্রন্থটি ১৮৩৯ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়। ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইনায়েতুল্লাহ বাঙ্গালীর মসনবি বাহার-ই-দানিশ নামক ফারসি গদ্যগ্রন্থের উর্দু পদ্যানুবাদ করেন। ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর উর্দু কবিতা-সংকলন কুল্লিয়াত-ই-তাপিশ। ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় তাঁর মৃত্যু হয়। [ওয়াকিল আহমদ]