বেঙ্গল মুসলিম পার্টি
বেঙ্গল মুসলিম পার্টি ১৯২৬ সালের প্রথম দিকে স্যার আবদুর রহিম কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত। ওই বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠেয় প্রাদেশিক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার উদ্দেশ্যে তিনি দলটি প্রতিষ্ঠা করেন। স্যার আবদুর রহিম গভর্নরের একিজকিউটিভ কাউন্সিলের (১৯২০-২৫) সদস্য হিসেবে বাংলা সরকারে যোগ দেওয়ার জন্য মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ হতে ১৯২০ সালে পদত্যাগ করেন। বেঙ্গল মুসলিম পার্টির উদ্দেশ্যাবলির মধ্যে ছিল ১৯১৯ সালের সংস্কার কার্যকর করা, স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশসমূহের ফেডারেশনের ভিত্তিতে ভারতের জন্য একটি সংবিধান লাভ করা। এ সংবিধান মোতাবেক ফেডারেল সরকারের নিয়ন্ত্রণ শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় চাকরি, যোগাযোগ, মুদ্রা, পররাষ্ট্র এবং আন্তঃপ্রাদেশিক বিষয়সমূহের ওপর সীমিত থাকবে। ইশতেহার অনুযায়ী এর অন্যান্য অঙ্গীকারের মধ্যে ছিল ‘জনগণের সরকার এবং জনগণের জন্য সরকার’-এ গণতান্ত্রিক আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করা এবং অজ্ঞতার পথ পরিহার করে ভারতকে প্রগতির পথে পরিচালনা করা। যদিও প্রকাশ্যে দলটি ছিল মুসলমান সম্প্রদায়ের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নিয়োজিত একটি সম্প্রদায় ভিত্তিক দল, তথাপি এটি সাম্প্রদায়িকতা পরিহার করে।
ডোমিনিয়ন মর্যাদাসহ পূর্ণ দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা এ দলের ঘোষিত রাজনৈতিক লক্ষ্য ছিল। আইনসভাসহ সকল নির্বাচিত সংস্থায় সংখ্যালঘুদের কার্যকর প্রতিনিধিত্ব বজায় রাখার জন্য কোন প্রদেশে মুসলমানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা যাতে সংখ্যালঘুতে বা এমনকি সমতায় হ্রাস না পায়, সে জন্য ভবিষ্যতে যুগ্ম নির্বাচকমন্ডলী বেছে নেওয়ার সুযোগসহ এ দল পৃথক নির্বাচকমন্ডলী অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে। ১৯৩০-এর প্রথম ভাগ পর্যন্ত দলটির অস্তিত্ব বজায় ছিল। [বি.আর খান]