ভাঙ্গা উপজেলা
ভাঙ্গা উপজেলা (ফরিদপুর জেলা) আয়তন: ২১৬.৩৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°১৭´ থেকে ২৩°২৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৫´ থেকে ৯০°০৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সদরপুর ও নগরকান্দা উপজেলা, দক্ষিণে মুকসুদপুর ও রাজৈর উপজেলা, পূর্বে শিবচর ও সদরপুর উপজেলা, পশ্চিমে নগরকান্দা ও মুকসুদপুর উপজেলা।
জনসংখ্যা ২৩২৩৮৬; পুরুষ ১১৭২৪৮, মহিলা ১১৫১৩৮। মুসলিম ২১৩৩৯০, হিন্দু ১৮৯৬৩, খ্রিস্টান ১১ এবং অন্যান্য ২২।
জলাশয় প্রধান নদী: আড়িয়াল খাঁ, কুমার, শীতলক্ষ্যা।
প্রশাসন ভাঙ্গা থানা গঠিত হয় ১৯০৮ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১২ | ১৩৬ | ২০৫ | ৩৯৭৪৩ | ১৯২৬৪৩ | ১০৭৪ | ৪৬.৮ | ৩৬.৩ |
পৌরসভা | |||||
আয়তন (বর্গকিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার(%) |
১৮.৩০ | ৯ | ২৬ | ২৮০৫৭ | ১৫৩৩ | ৫১.৬৬ |
পৌরসভার বাইরে উপজেলা শহর | |||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
১৭.০৩ | ২ | ১১৬৮৬ | ৬৮৬ | ৩৫.০ |
ইউনিয়ন | ||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |
পুরুষ | মহিলা | |||
আজিমনগরগর ১৫ | ৩৯৯৬ | ৭৬৯৩ | ৭৮২১ | ৩৫.৬৮ া |
লগীগী ১৩ | ৭০৫১ | ১৩৯৫৭ | ১৩২২১ | ৩১.৮১ া |
উলীবেড়াড়া ৬৩ | ৫১৪৯ | ৯৩১৭ | ৯৪৭৭ | ৩৫.৫১ া |
লামৃধাধা ৫৫ | ৩৭৮২ | ৭৭৪৯ | ৭৭৪৮ | ৩৬.৪৮ |
ঘারুয়ায়া ৩৯ | ৬১৮৬ | ১১৯২৯ | ১১৮০৬ | ৩২.৮৬ |
চন্দ্রাদা ৩১ | ২৮৯৬ | ৬৬৫৭ | ৬৭৫১ | ৩৩.২৮ |
চুমুরদিদি ২৫ | ৪৪৮৪ | ৪৭৮০ | ৪৮০০ | ৪১.৩৬ |
তুজারপুরুর ৯৪ | ৩৫৭৫ | ৬৫৯০ | ৬৫৩৫ | ৩২.৭৫ |
নাসিরাবাদাদ ৭৯ | ৩২২৬ | ৬৫৪৭ | ৬৯৮৪ | ৪১.৮৮ |
নুরুল্লাগঞ্জগ্ম ৮৭ | ৪৬০০ | ৮৯৪৭ | ৮৬৪৩ | ৩৫.৮৭ |
মানিকদহদহ ৭১ | ৪৫৬৪ | ৯৩৭২ | ৯২৩১ | ৩৮.৬৬ |
হামিরদিদি ৪৭ | ৩৯৫৪ | ৯০১৬ | ৮৭৫৮ | ৪৩.৯৩ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ পাতরাইল মসজিদ (১৪৯৩-১৫১৯), পাতরাইল দীঘি, মজলিশ আবদুল্লাহ খানের মাযার, রায়নগর মসজিদ (মুগল আমলে নির্মিত), খাটরার বাসুদেব মন্দির, ভাঙ্গার সিদ্ধেশ্বরী নাট্যমঞ্চ।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১ (নওয়াপাড়া)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৮৪, মন্দির ৩৯, তীর্থস্থান ১ (খাটরা)। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: পাতরাইল মসজিদ, রায়নগর মসজিদ, ঘারুয়া জামে মসজিদ, ভাঙ্গা বাজার জামে মসজিদ, বাসুদেব মন্দির।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৮.১%; পুরুষ ৪২.৬%, মহিলা ৩৩.৬%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৩, মাদ্রাসা ১০, এতিমখানা ৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ভাঙ্গা পাইলট স্কুল (১৮৮৯), সদরদী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), কালামৃধা গোবিন্দ হাইস্কুল (১৯২৭)।
পত্র-পত্রিকাওসাময়িকীসাপ্তাহিকভাঙ্গাখবর।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ২, সিনেমা হল ১, মহিলা সংগঠন ১, নাট্যদল ১, শিল্পকলা একাডেমি ১।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৫.৫১%, অকৃষি শ্রমিক ২.৭৯%, শিল্প ১.৩৬%, ব্যবসা ২০.৩২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৭৭%, চাকরি ৬.১২%, নির্মাণ ১.২২%, ধর্মীয় সেবা ০.২২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.৫০% এবং অন্যান্য ৭.১৯%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৮.৬৬%, ভূমিহীন ৪১.৩৪%। শহরে ৪৮.৩৬% এবং গ্রামে ৬০.৭৫% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, পিঁয়াজ, সরিষা, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, কাউন।
প্রধান ফল-ফলাদিব আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, তাল, পেঁপে, সফেদা, নারিকেল।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২৪৫, গবাদিপশু ৬০, হাঁস-মুরগি ৬৪।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১০০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪০০ কিমি; নৌপথ ২৬ নটিক্যাল মাইল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা চালকল, আটাকল, তেলকল, বরফকল, সার কারখানা, বিস্কুট কারখানা।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, ছাতাশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৪৫, মেলা ৪। ভাঙ্গা হাট, দেওড়া হাট, চৌকিঘাটা হাট, মালীগ্রাম হাট, কাউলীবেড়া হাট, মনসুরাবাদ হাট, ঘারুয়া হাট, পুকুরিয়া হাট এবং মুকডোবা মেলা, ভাঙ্গা চৈত্র সংক্রান্তি মেলা ও ভাদ্র মেলা, খাটরা মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, গম, তালের গুড়, পিঁয়াজ বীজ, শাকসবজি, নারিকেল, সফেদা।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৮.৬২% (শহরে ৩৪.১০% এবং গ্রামে ১৫.৪৭%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.০৩%, ট্যাপ ০.৩১%, পুকুর ১.০৬% এবং অন্যান্য ৩.৫৯%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪১.৭৮% (শহরে ৫৬.৬৫% এবং গ্রামে ৩৮.৭৬%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫১.৭৮% (শহরে ৩৭.৭২% এবং গ্রামে ৫৪.৬৩%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬.৪৪% (শহরে ৫.৬৩% এবং গ্রামে ৬.৬০%) পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৩, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৮, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, কমিউনিটি ক্লিনিক ২৭, ক্লিনিক ৪।
এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা, এসইডিপি।
[প্রফুল্ল কুমার নন্দী]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভাঙ্গা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।