বামনডাঙ্গা জমিদারি
বামনডাঙ্গা জমিদারি বামনডাঙ্গা জমিদারির প্রতিষ্ঠাতা রামেশ্বর মুস্তোফী একজন রাঢ়ীয় ব্রাহ্মণ। মুগলদের কোচবিহার অভিযানের সময় তিনি কোচবিহার মহারাজার মুস্তোফীর (সেক্রেটারি) পদে বহাল ছিলেন। তাঁর পূর্বপুরুষেরাও বংশানুক্রমিকভাবে কোচবিহার রাজ্যে মুস্তোফীর পদে নিয়োজিত ছিলেন। রামেশ্বর জমিদারি হিসেবে ফতেহপুর চাকলার অর্ধাংশ কোচ মহারাজার নিকট থেকে লাভ করেন যা বামনডাঙ্গা পরগণা হিসেবে খ্যাত। রামেশ্বরের পর তাঁর পুত্র বিশ্বেশ্বর, তারপর তাঁর পুত্র কাশিশ্বর বামনডাঙ্গা জমিদারির ৪.৫০/১৬ আনা লাভ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর পুত্র রামচন্দ্র ও কৃষ্ণচন্দ্র জমিদারি লাভ করেন। বুকাননের তথ্যমতে ১৭৭৯ থেকে ১৮০৭ পর্যন্ত প্রায় তিন পুরুষ উত্তরাধিকারীর অভাবে তাঁদের দত্তক পুত্রের বিধবা স্ত্রীগণ কোর্ট অব ওয়ার্ডসের অধীনে জমিদারি পরিচালনা করেন। তাঁদের মধ্যে পবিত্রাদেবী অন্যতম ছিলেন। তিনি দক্ষতার সাথেই জমিদারি পরিচালনা করেছেন। পরবর্তী জমিদার ছিলেন তাঁরই দত্তকপুত্র কার্তিকচন্দ্র। কার্তিকচন্দ্রের মৃত্যুর পর (১৮৪২) জমিদারি কোর্ট অব ওয়ার্ডসে ন্যস্ত হয় এবং ১৮৫৬ এপ্রিলে সদ্য বয়োপ্রাপ্ত পুত্র নবীনচন্দ্রকে জমিদারি ফেরত দেয়া হয়। তিনি ১৮৮০ সালে রায়চৌধুরী উপাধি লাভ করেন। তাঁর সময়ে বামনডাঙ্গা সরোবর খনন করা হয় এবং অনেক শিব মন্দিরও নির্মিত হয়। নবীনচন্দ্রের অবর্তমানে (১৮৯০) তাঁর দু’পুত্র শরৎচন্দ্র রায়চৌধুরী এবং বিপিনচন্দ্র রায়চৌধুরী জমিদারি লাভ করেন। ১৯০১ সালে শরৎচন্দ্র মারা গেলে বিপিনচন্দ্র সমগ্র জমিদারি লাভ করেন এবং ১৯২৩ সালে তাঁর মৃত্যুর পর দু’পুত্র মনীন্দ্রচন্দ্র রায়চৌধুরী এবং জগৎচন্দ্র রায়চৌধুরী বামনডাঙ্গার জমিদারি ভোগ করেন। তাঁরাই ছিলেন এ বংশের শেষ জমিদার। মনীন্দ্রচন্দ্র ছিলেন রংপুর জমিদার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক (১৯৪৫-১৯৫০)। [মুহম্মদ মনিরুজ্জামান]