শিখা

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২৩:০২, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

শিখা  ১৯২৬ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত মুসলিম সাহিত্য-সমাজের মুখপত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিভাগের অধ্যাপক আবুল হুসেন ছিলেন শিখা পত্রিকার প্রথম সংখ্যার সম্পাদক। শিখা বছরে একবার প্রকাশিত হত। প্রথম সংখ্যার প্রকাশকাল চৈত্র ১৩৩৩ (৮ এপ্রিল ১৯২৭)। পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৪৪, দাম আট আনা, মুদ্রণ সংখ্যা ১০০০। পত্রিকাটি মুসলিম সাহিত্য-সমাজের পক্ষে আবদুল কাদির কর্তৃক মুসলিম হল থেকে প্রকাশিত এবং মুন্সি আহমদ আলী কর্তৃক সাত রওজার (ঢাকা) ইসলামিয়া প্রেস থেকে মুদ্রিত। শিখার পাঁচটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সংখ্যার সম্পাদক ছিলেন কাজী মোতাহার হোসেন। প্রকাশকাল আশ্বিন ১৩৩৫ (অক্টোবর ১৯২৮) ও ১৩৩৬ (১৯২৯) সাল। চতুর্থ ও পঞ্চম সংখ্যার সম্পাদক ছিলেন যথাক্রমে মোহাম্মদ আবদুর রশিদ ও আবুল ফজল। প্রকাশকাল ১৩৩৭ (১৯৩০) ও ১৩৩৮ (১৯৩১) বঙ্গাব্দ। দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম সংখ্যা সৈয়দ ইমামুল হোসেন কর্তৃক নবাবপুরের (ঢাকা) মডার্ন লাইব্রেরি থেকে প্রকাশিত। সংখ্যাগুলোর দাম ছিল যথাক্রমে আট আনা, এক টাকা, আট আনা ও বারো আনা।

শিখা ছিল সমকালের অন্যান্য সাময়িকপত্র থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ধরনের। তাই প্রথম সংখ্যা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই পত্রিকাটি বুদ্ধিজীবী সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মুসলিম সাহিত্য-সমাজের সারা বছরের কর্মকান্ডের পরিচয় বহন করত শিখা। তাই স্বাভাবিকভাবেই সমকালের পাঠক সমাজের তীব্র কৌতূহল ছিল পত্রিকাটির প্রতি। শিখার প্রতিটি সংখ্যার শিরোদেশে ‘জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব’ কথাটি মুদ্রিত থাকত। এ উক্তিকেই শিখা পত্রিকার লেখকগোষ্ঠী তাদের মটো বা আদর্শবাণী হিসেবে বিবেচনা করত।

মুসলিম সাহিত্য-সমাজ দশ বছর ধরে তাদের সাময়িক ও বার্ষিক অধিবেশনের কর্মকান্ড চালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও পাঁচটি সংখ্যার পর আর শিখার প্রকাশ সম্ভব হয়নি। এর প্রধান কারণ ১৯৩২ সালের মার্চ মাসে আবুল হুসেনের ঢাকা ত্যাগ। সম্পাদক হিসেবে শিখায় যার নামই মুদ্রিত হোক না কেন পত্রিকা প্রকাশনার সামগ্রিক দায়িত্ব পালন করতেন আবুল হুসেন। দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম সংখ্যার প্রকাশক সৈয়দ ইমামুল হোসেন ছিলেন তাঁর কনিষ্ঠ ভ্রাতা। আর এ পত্রিকার প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মডার্ন লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন আবুল হুসেন। শিখা প্রকাশনা-ব্যয়ের একটি বড় অংশও তিনি বহন করতেন। মোট কথা, শিখা মুসলিম সাহিত্য-সমাজের মুখপত্র হলেও এর প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন আবুল হুসেন।  [খোন্দকার সিরাজুল হক]

গ্রন্থপঞ্জি  আবদুল হক, সাহিত্য ঐতিহ্য মূল্যবোধ, ঢাকা ১৯৬৮, আনিসুজ্জামান, মুসলিম বাংলার সাময়িক পত্র, ঢাকা, ১৯৬৯; খোন্দকার সিরাজুল হক, মুসলিম-সাহিত্য সমাজ : সমাজচিন্তা ও সাহিত্যকর্ম, ঢাকা ১৯৮৪ ও ২০০৬; মুস্তাফা নূর-উল ইসলাম, শিখা সমগ্র, ঢাকা ২০০৩।