অনিশ্চিত কূপ
অনিশ্চিত কূপ (Wildcat Well) তেল ও গ্যাস (হাইড্রোকার্বন) অনুসন্ধানের জন্য খননকৃত পরীক্ষামূলক কূপ যা আদৌ উৎপাদনশীল হবে কিনা তা এখনও প্রমাণিত হয় নি। আবার অপ্রমাণিত কোনো অঞ্চলে অর্থাৎ কখনই তেল বা গ্যাস পাওয়া যায় নি এমন কোনো অবস্থানে খননকৃত কূপকেও অনিশ্চিত কূপ বলা হয়।
বাংলাদেশে ১৯১৪ সালে প্রথম অনিশ্চিত কূপ খনন করা হয় চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড ঊর্ধ্বভাঁজে। ওই কূপ ৭৬২ মিটার গভীর পর্যন্ত খোঁড়া হয়। প্রথম উপকূলীয় অনিশ্চিত কূপটি খনন করা হয় বঙ্গোপসাগরের সোপান অঞ্চলে ১৯৭৪-৭৫ সালে। বিদেশি ৬টি তেল কোম্পানি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে উৎপাদন অংশীদারি চুক্তির ভিত্তিতে কূপটি খনন করে। এ পর্যন্ত দেশের ভূভাগে ৫৩টি এবং উপকূলীয় অঞ্চলে ১৩টি অনিশ্চিত কূপ খনন করা হয়েছে। যার ফলাফলস্বরূপ দেশের ভূভাগে ২২টি এবং উপকূলীয় অঞ্চলে দু’টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। দেশিয় কোম্পানি অয়েল অ্যান্ড গ্যাস ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন, পেট্রোবাংলা, বাপেক্স এবং বিদেশি কোম্পানি শেল, বেঙ্গল অয়েল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন, ইউনিয়ন অয়েল, ইনা নাপথালিন, অক্সিডেন্টাল, মবিল, কেয়ার্ন এনার্জি, ইউনোকল প্রভৃতি উৎপাদন অংশীদারি চুক্তির অধীনে বাংলাদেশে অনিশ্চিত কূপ খননের সঙ্গে জড়িত। একটি পরীক্ষামূলক কূপ খননের মাধ্যমে যেমন একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হতে পারে তেমনি আবার সেটি শুষ্কও হতে পারে। কিন্তু এ ধরনের এক একটি পরীক্ষামূলক কূপ খনন করতে বিশাল অংকের অর্থের প্রয়োজন হয় তাই আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ অনেকটা জুয়ার বাজির মতো তবে সৌভাগ্যক্রমে এইসব খনন থেকে তেল ও গ্যাস আবিষ্কারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের অনুপাত বিশ্বে সর্বোচ্চ। সারা বিশ্বে সাফল্যের অনুপাত যেখানে ১:১০, বাংলাদেশে তা ১:৩.০৪। [কাজী মতিন উদ্দিন আহমেদ]
আরও দেখুন কূপ।