গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট
গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট ১৯৬৭ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত মুদ্রণ প্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রধান উদ্যোক্তা তৎকালীন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. ওয়াকার আহমেদ ও পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর আযম খান। এ ব্যাপারে তৎকালীন সরকার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে একটি ট্রেনিং স্কিম চালু করে। এ স্কিমের চিফ ইন্সট্রাক্টর পদের জন্য নির্বাচিত ড. আর. কে মোল্লাকে যুক্তরাষ্ট্রের South Dokota University-তে মুদ্রণের উপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য পাঠানো হয় এবং অন্যান্য ইন্সট্রাক্টরদের প্রশিক্ষণ সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেসে চলতে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে ট্রেনিং শেষে আর. কে মোল্লা গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউটের প্রথম অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন। শুরুতে ইনস্টিটিউট এর আসন সংখ্যা ছিল ২৫।
গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট বর্তমানে একটি পূর্ণাঙ্গ মুদ্রণ প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে পরিণত হয়েছে। এখানে মুদ্রণের প্রাথমিক স্তরের মুভেবল টাইপ, লাইনো টাইপ মেশিন এবং লেটার প্রেস, গ্যালারি টাইপ ক্যামেরা থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তির অফসেট লিথোগ্রাফি, গ্র্যাভিউর, স্ক্রিন প্রিন্টিং, অত্যাধুনিক প্রসেস ক্যামেরা (হরাইজন্টাল এবং ভার্টিক্যাল) অটোপ্লেট প্রসেসর, লিথো ফিল্ম, প্যানক্রোমাটিক ফিল্ম প্রযুক্তিসহ এখন উন্নত ধরনের মেকানিজম সংযোগ করা হয়েছে। আধুনিক বিশ্বের সাথে বাংলাদেশের মুদ্রণ শিল্প প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে ১৯৯৫-৯৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন পাঠ্যক্রম কম্পিউটার গ্রাফিক পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে।
স্থাপিত হয়েছে অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব যেখানে ইমেজ সেন্টার, ড্রাম স্ক্যানার, ফ্লাটবেড স্ক্যানার, লেজার প্রিন্টার, ইন্ক জেট প্রিন্টারসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে।
১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ছয়টি সেমিস্টারে তিন বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা-ইন-প্রিন্টিং টেকনোলজিতে ডিগ্রি প্রদান করে আসছে। ২০০১-২০০২ শিক্ষাবর্ষ থেকে আটটি সেমিস্টারে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা-ইন-প্রিন্টিং টেকনোলজি কোর্স চালু করা হয়েছে। ইনস্টিটিউটে বর্তমানে ৫০টি আসন রয়েছে, এর মধ্যে মেয়েদের জন্য ১০% এবং উপজাতীয়দের জন্য ৫% আসন সংরক্ষিত। পঞ্চাশ জন ছাত্রছাত্রীকে চতুর্থ সেমিস্টার থেকে দু’টি বিভাগে ভাগ করা হয়। একটি হল গ্রাফিক রিপ্রোডাকশন (২৫ জন), অপরটি অফসেট প্রিন্টিং (২৫ জন)। ইনস্টিটিউটে ১ জন অধ্যক্ষ ও ১৬ জন শিক্ষকসহ মোট ৪০ জন কর্মকর্তাকর্মচারী কর্মরত রয়েছে।
ইন্সটিটিউটের মূল ভবন ছাড়াও, ছাত্রদের জন্য ১৫০ আসন বিশিষ্ট একটি ছাত্রাবাস রয়েছে। এ ছাড়া অধ্যক্ষের জন্য একটি আবাসিক ভবন, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য তিনটি স্টাফ কোয়ার্টার ও একটি মসজিদ রয়েছে।
[মো জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মো জহির উদ্দিন]