ভাঙ্গা উপজেলা
ভাঙ্গা উপজেলা (ফরিদপুর জেলা) আয়তন: ২১৫.৩০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°১৭´ থেকে ২৩°২৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৫´ থেকে ৯০°০৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সদরপুর ও নগরকান্দা উপজেলা, দক্ষিণে মুকসুদপুর ও রাজৈর উপজেলা, পূর্বে শিবচর ও সদরপুর উপজেলা, পশ্চিমে নগরকান্দা ও মুকসুদপুর উপজেলা।
জনসংখ্যা ২৫৯০৩২; পুরুষ ১২৫৩২৪, মহিলা ১৩৩৭০৮। মুসলিম ২৩৯৬৪৮, হিন্দু ১৯৩৭১, বৌদ্ধ ২ এবং খ্রিস্টান ১১।
জলাশয় প্রধান নদী: আড়িয়াল খাঁ, কুমার, শীতলক্ষ্যা।
প্রশাসন ভাঙ্গা থানা গঠিত হয় ১৯০৮ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১২ | ১৩১ | ২০৬ | ৪৬৪৭৭ | ২১২৫৫৫ | ১২০৩ | ৪৬.৮ (২০০১) | ৪৫.০ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গকিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার(%) | |||
১৮.৩০ (২০০১) | ৯ | ২৬ | ৩৪১৪৮ | ১৫৩৩ (২০০১) | ৬১.৫ |
পৌরসভার বাইরে উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
১৭.০৩ (২০০১) | ২ | ১২৩২৯ | ৬৮৬ (২০০১) | ৪১.৭ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
আজিমনগর ১৫ | ৩৯৯৬ | ৮০০৭ | ৮৭৭৫ | ৪০.৫ | ||||
আলগী ১৩ | ৬৮১৮ | ১৩৭৫০ | ১৪৮২৩ | ৪১.১ | ||||
কাউলীবেড়া ৬৩ | ৫১২২ | ১০০২২ | ১১০৯২ | ৪৪.৯ | ||||
কালামৃধা ৫৫ | ৩৭৮৪ | ৮২২০ | ৯১৩৪ | ৪০.৩ | ||||
ঘারুয়া ৩৯ | ৬১১৩ | ১৩৫০৪ | ১৪৫৭২ | ৪৪.৮ | ||||
চন্দ্রা ৩১ | ২৬৯৬ | ৮১২৬ | ৮৮১২ | ৪৮.৭ | ||||
চুমুরদি ২৫ | ২২৮৩ | ৪৫৭৮ | ৫১১১ | ৪২.৯ | ||||
তুজারপুর ৯৪ | ৩৫৭৫ | ৭১৬১ | ৭১৬৬ | ৪৪.৩ | ||||
নাসিরাবাদ ৭৯ | ৩২২৭ | ৬৫৭৪ | ৭৪৪১ | ৪৭.০ | ||||
নুরুল্লাগঞ্জ ৮৭ | ৪৪১২ | ৯৩৩২ | ৯৬০৮ | ৪৬.৫ | ||||
মানিকদহ ৭১ | ৪৬০৫ | ৯৭৩২ | ১০০৮১ | ৪৭.৭ | ||||
হামিরদি ৪৭ | ৩৫২০ | ৯৩৮৪ | ৯৮৭৯ | ৪৯.৭ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ পাতরাইল মসজিদ (১৪৯৩-১৫১৯), পাতরাইল দীঘি, মজলিশ আবদুল্লাহ খানের মাযার, রায়নগর মসজিদ (মুগল আমলে নির্মিত), খাটরার বাসুদেব মন্দির, ভাঙ্গার সিদ্ধেশ্বরী নাট্যমঞ্চ।
মুক্তিযুদ্ধ ভাঙ্গা উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যেসব যুদ্ধ হয় সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল পাতরাইল যুদ্ধ। এই যুদ্ধে ৩৯ জন পাকসেনা হতাহত হয়; জাহাঙ্গীর নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীন হন। উপজেলার নওয়াপাড়ায় ১টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে।
বিস্তারিত দেখুন ভাঙ্গা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৮৪, মন্দির ৩৯, তীর্থস্থান ১ (খাটরা)। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: পাতরাইল মসজিদ, রায়নগর মসজিদ, ঘারুয়া জামে মসজিদ, ভাঙ্গা বাজার জামে মসজিদ, বাসুদেব মন্দির।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৭.০%; পুরুষ ৪৮.৪%, মহিলা ৪৫.৮%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৩, মাদ্রাসা ১০, এতিমখানা ৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ভাঙ্গা পাইলট স্কুল (১৮৮৯), সদরদী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), কালামৃধা গোবিন্দ হাইস্কুল (১৯২৭)।
পত্র-পত্রিকাওসাময়িকী সাপ্তাহিক: ভাঙ্গাখবর।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ২, সিনেমা হল ১, মহিলা সংগঠন ১, নাট্যদল ১, শিল্পকলা একাডেমি ১।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৫.৫১%, অকৃষি শ্রমিক ২.৭৯%, শিল্প ১.৩৬%, ব্যবসা ২০.৩২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৭৭%, চাকরি ৬.১২%, নির্মাণ ১.২২%, ধর্মীয় সেবা ০.২২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.৫০% এবং অন্যান্য ৭.১৯%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৮.৬৬%, ভূমিহীন ৪১.৩৪%। শহরে ৪৮.৩৬% এবং গ্রামে ৬০.৭৫% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, পিঁয়াজ, সরিষা, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, কাউন।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, তাল, পেঁপে, সফেদা, নারিকেল।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২৪৫, গবাদিপশু ৬০, হাঁস-মুরগি ৬৪।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৬৯ কিমি, আধাপাকা রাস্তা ৮০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩১৯ কিমি; নৌপথ ৪ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা চালকল, আটাকল, তেলকল, বরফকল, সার কারখানা, বিস্কুট কারখানা।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, ছাতাশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৪৫, মেলা ৪। ভাঙ্গা হাট, দেওড়া হাট, চৌকিঘাটা হাট, মালীগ্রাম হাট, কাউলীবেড়া হাট, মনসুরাবাদ হাট, ঘারুয়া হাট, পুকুরিয়া হাট এবং মুকডোবা মেলা, ভাঙ্গা চৈত্র সংক্রান্তি মেলা ও ভাদ্র মেলা, খাটরা মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, গম, তালের গুড়, পিঁয়াজ বীজ, শাকসবজি, নারিকেল, সফেদা।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৩.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৬%, ট্যাপ ১.০% এবং অন্যান্য ৩.৪%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮২.৪% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৫.১% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২.৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৩, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৮, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, কমিউনিটি ক্লিনিক ২৭, ক্লিনিক ৪।
এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা, এসইডিপি। [প্রফুল্ল কুমার নন্দী]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভাঙ্গা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।