মানিকছড়ি উপজেলা
মানিকছড়ি উপজেলা (খাগড়াছড়ি জেলা) আয়তন: ১৬৮.৩৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৪১´ থেকে ২২°৫৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩৫´ থেকে ৮৯°৫২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে রামগড় উপজেলা, দক্ষিণ ও পশ্চিমে ফটিকছড়ি উপজেলা, পূর্বে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা।
জনসংখ্যা ৬১৫৮৯; পুরুষ ৩০৯৩৯, মহিলা ৩০৬৫০। মুসলিম ৪০৫৩৬, হিন্দু ৬২৭৭, বৌদ্ধ ১৪৩০৮, খ্রিস্টান ৪৩২ এবং অন্যান্য ৩৬।
জলাশয় প্রধান নদী: ধুরং।
প্রশাসন মানিকছড়ি থানা গঠিত হয় ১০ ডিসেম্বর ১৯৮০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৫ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ৪ | ১২ | ১৬০ | ৩৪৭৭৬ | ২৬৮১৩ | ৩৬৬ | ৪৪.৯ | ৩৫.২ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
৭৫.১১ | ২ | ৩৪৭৭৬ | ৪৬৩ | ৪৪.৯ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
বাটনাতলী ১৯ | ১৬০০০ | ৬৩২৩ | ৬৩৫৮ | ৩৭.১ | ||||
মানিকছড়ি ৬৩ | ২৫৬০০ | ১১০২১ | ১০৫৭৭ | ৪৮.৭ | ||||
যোগ্যাছোলা ৪২ | - | ৫৭০১ | ৫৬৫৫ | ৩৭.৪ | ||||
তিনট্যহরী ৮৭ | - | ৭৮৯৪ | ৮০৬০ | ৩৫.১ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ মং রাজবাড়ি, সিন্দুক ছড়ি পুকুর, সুন্দর শাহ মাযার।
মুক্তিযুদ্ধ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা মানিকছড়িতে পাকবাহিনীর প্রবেশ ঠেকাতে যোগ্যছালা বাজারে প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তোলে। যোগ্যছালার নোনাবিল নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ সংঘটি হয়।
বিস্তারিত দেখুন মানিকছড়ি উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৮।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪০.৭%; পুরুষ ৪৪.১%, মহিলা ৩৭.৩%। কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: রানী নিহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৬)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: চাবুক।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, সিনেমা হল ১।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৭.৩২%, অকৃষি শ্রমিক ৬.৬৮%, শিল্প ০.২৭%, ব্যবসা ১০.৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৮%, চাকরি ৫.৬৯%, নির্মাণ ০.৪৬%, ধর্মীয় সেবা ০.৩২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৭% এবং অন্যান্য ৭.১৯%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫০.০১%, ভূমিহীন ৪৯.৯৯%। শহরে ৫২.০৭% এবং গ্রামে ৪৭.৩৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, ভুট্টা, সরিষা, আলু, আদা, হলুদ, শাকসবজি।
প্রধান ফল-ফলাদি কলা, কাঁঠাল, লেবু, আনারস।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার হাঁস-মুরগি ১০।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৪০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৫৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩০০ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা রাইসমিল, ফ্লাওয়ারমিল, স’মিল।
কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, সুচিশিল্প, দারুশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৭, মেলা ২। মানিকছড়ি বাজার, মহামুনি বাজার, গচ্ছাবিল বাজার, তিনট্যাহরি বাজার এবং মহামুনি মন্দির সংলগ্ন মাঠে চৈত্র সংক্রান্তির মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য কলা, কাঁঠাল, আদা, হলুদ, ফুলের ঝাড়ু, বাঁশ, বেত, কাঠ।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৪.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
প্রাকৃতিক সম্পদ প্রাকৃতিক গ্যাস (যুইগ্যা ছড়া চিমুথং গ্যাস ফিল্ড)।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৬৭.৩%, ট্যাপ ০.৪% এবং অন্যান্য ৩২.৩%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৯.৩% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৫.৪% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৫.৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ১১.৪২% (গ্রামে ৪.৬৯% এবং শহরে ১৬.৬৭%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬৫.১% (গ্রামে ৬৫.৭% এবং শহরে ৬৪.৬৩%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২৩.৪৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ১, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ২। [আতিকুর রহমান]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মানিকছড়ি উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।