দীঘিনালা উপজেলা

Banglapedia admin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১০:০৮, ৬ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

দীঘিনালা উপজেলা (খাগড়াছড়ি জেলা)  আয়তন: ৬৯৪.১১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০৪´ থেকে ২৩°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫৬´ থেকে ৯২°১১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে লংগদু উপজেলা, পূর্বে বাঘাইছড়ি উপজেলা, পশ্চিমে পানছড়ি ও খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা এবং ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। এ উপজেলায় গলামুন, কারমি মুড়া, লুটিবান, কুরাদিয়া পাহাড় উল্লেখযোগ্য।

জনসংখ্যা ১০৩৩৯২; পুরুষ ৫৩০৫৪, মহিলা ৫০৩৩৮। মুসলিম ৩৪৬৪১, হিন্দু ৯৬৫০, বৌদ্ধ ৫৮৬৭৯, খ্রিস্টান ৪১৬ এবং অন্যান্য ৬। এ উপজেলায় চাকমা, ত্রিপুরা, মারমা  প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় প্রধান নদী: মাইনী।

প্রশাসন দীঘিনালা থানা গঠিত হয় ১৯১৬ সালে এবং থানা উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ২২ ২৪৫ ১৫৬১০ ৮৭৭৮২ ১৪৯ ৬২.৪ ৪৩.২
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১০.৩৬ ১৫৬১০ ১৫০৭ ৬২.৪
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কাবাখালী ৬৩ ১১৫২০ ৮০৪৮ ৭৫৭৩ ৪৯.২
দীঘিনালা ৪৭ ১০৮৮০ ৬৬৬০ ৬৫৩৩ ৪৬.২
বাবুছড়া ১৫ ৫৩১২০ ৭৩১১ ৬৭৯৫ ৪০.১
বোয়ালখালী ৩১ ৭৬৮০ ১০৬২০ ৯৮৬৩ ৫৬.৬
মিরং ৭৯ ৫৬৩২০ ২০৪১৫ ১৯৫৭৪ ৪১.৫

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সরাসরি কোনো যুদ্ধ ঘটে নি। তবে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশের সর্বত্র পাকসেনাদের বিপর্যস্ত অবস্থার সময়ে বিলাইছড়ি ও বোয়ালখালিতে মিজো, রাজাকার ও মুজাহিদ বাহিনীদের সঙ্গে যুদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের এলাকা থেকে বিতাড়িত করে।

বিস্তারিত দেখুন দীঘিনালা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৬.২%; পুরুষ ৫২.৯%, মহিলা ৩৯.১%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: দীঘিনালা সরকারি কলেজ, দীঘিনালা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, দীঘিনালা মডেল বালিকা বিদ্যালয়, হাসিনপুর উচ্চ বিদ্যালয়, অনাথ আশ্রম আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়, বাবুছড়া উচ্চ বিদ্যালয়, উদালবাগান উচ্চ বিদ্যালয়, রসিক নগর দাখিল মাদ্রাসা।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৫.৫৩%, অকৃষি শ্রমিক ৮.৫১%, ব্যবসা ৯.৭০%, চাকরি ৫.০১%, নির্মাণ ০.৪২%, ধর্মীয় সেবা ০.২০%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১০% এবং অন্যান্য ১০.৫৩%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪৬.৯৬%, ভূমিহীন ৫৩.০৪%। শহরে ২৫.৮৫% এবং গ্রামে ৫০.৫৭% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আদা, সরিষা, বাদাম, তিল, পাহাড়ি আলু, শাকসবজি।

প্রধান ফল-ফলাদি  কলা, কাঁঠাল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার হাঁস-মুরগির ৬।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১০৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১০৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৮০ কিমি; নৌপথ ৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন গরুর গাড়ি।

শিল্প  ও কলকারখানা  রাইসমিল, স’মিল।

কুটিরশিল্প  তাঁতশিল্প, দারুশিল্প বাঁশ ও বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা দীঘিনালা বাজার, বাবুছড়া বাজার ও কল্যাণপুর বাজার উল্লেখযোগ্য।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩১.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৬৫.৯%, ট্যাপ ০.৫% এবং অন্যান্য ৩৩.৬%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৩.৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬১.২% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫.২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১।  [আতিকুর রহমান]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; দীঘিনালা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।