সুবর্ণচর উপজেলা

Banglapedia admin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৯:২৫, ৬ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

সুবর্ণচর উপজেলা (নোয়াখালী জেলা)  আয়তন: ৫৭৫.৪৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২৮´ থেকে ২২°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৯´ থেকে ৯১°২০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নোয়াখালী সদর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে হাতিয়া উপজেলা, পূর্বে কোম্পানীগঞ্জ ও সন্দ্বীপ উপজেলা, পশ্চিমে রামগতি উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৮৯৫১৪; পুরুষ ১৪৩৫৩২, মহিলা ১৪৫৯৮২। মুসলিম ২৭২৪৭৬, হিন্দু ১৭০০৪, বৌদ্ধ ১, খ্রিস্টান ২৯ এবং অন্যান্য ৪।

জলাশয় ভুলুয়া নদী ও সন্দ্বীপ চ্যানেল।

প্রশাসন ২০০৫ সালের ২ এপ্রিল নোয়াখালী সদর উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে সুবর্ণচর উপজেলা গঠন করা হয়েছে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৫২ ৫৩ ৬৬৫১ ২৮২৮৬৩ ৫০৩ ৪৪.৯ ৩২.৪
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৮.৪২ ৬৬৫১ ৭৯০ ৪৪.৯
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
চর আমানুল্লাহ ২৯ ১০৮৫৬ ৯৭৯৪ ১০১৪৯ ৩৩.০
চর ওয়াপদা ৩৭ ১৪২৬৮ ১২০৮৩ ১২৩৬১ ৩৩.৭
চর ক্লার্ক ৩৩ ১৬৪২০ ২৪৬৯৩ ২৪০৪০ ২৬.৭
চর জব্বার ৩৫ ২৪৩৬৮ ২৬৬৭২ ২৭১৬৯ ৩০.৪
চর জুবলি ৩৬ ২২১৪০ ২২৯৮৪ ২৪৬৪৪ ৩৪.৫
চর বাটা ৩১ ১০৪৯০ ১৪৪৫৯ ১৫০০৫ ৪৩.৫
পূর্ব চরবাটা ১২৫৩০ ১৭৮১২ ১৭৯১১ ৩৬.৫
মোহাম্মদপুর ৩১১৩০ ১৫০৩৫ ১৪৭০৩ ২৬.৫

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় এবং মুক্তিযোদ্ধা এবং স্থানীয় জনগণ মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকেই বেড়িবাঁধ কেটে ফেলায় পাকবাহিনী প্রবেশ করতে পারে নি। তবে মুক্তিযোদ্ধারা স্থানীয় রাজাকারদের বিরুদ্ধে মাঝে মাঝেই অপারেশন পরিচালনা করত। উপজেলার আট কোপালিয়া বাজারে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীনের নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন সুবর্ণচর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৪১, মন্দির ৭।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩২.৭%; পুরুষ ৩৪.০%, মহিলা ৩১.৩%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬০, কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩, মাদ্রাসা ১২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সৈকত ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৬), চর জববার ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৬), শহীদ জয়নাল আবেদীন উচ্চ বিদ্যালয়, খাসের হাট উচ্চ বিদ্যালয়, আরজি উচ্চ বিদ্যালয়, চর জুবলি রববানিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, চর বাটা ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১।

দর্শনীয় স্থান চর বাটা স্টিমার ঘাট।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭০.৭২%, অকৃষি শ্রমিক ৬.০১%, শিল্প ০.৪১%, ব্যবসা ৯.৫৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৭৫%, চাকরি ৩.৯১%, নির্মাণ ০.৬৬%, ধর্মীয় সেবা ০.২৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭৫% এবং    অন্যান্য ৫.৯১%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৪.০১%, ভূমিহীন ৪৫.৯৯%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, সয়াবিন, চীনাবাদাম, শাকসবজি।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, নারিকেল, খেজুর, সুপারি।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৭, গবাদিপশু ২২, হাঁস-মুরগি ১৮।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১১৯.২৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৫৫.২১ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৮৪.৭০ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা চালকল, তেলকল, আটাকল, বরফকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, বুননশিল্প, শীতল পাটি, হাতপাখা।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৪৯, মেলা ১। খাসের হাট, ভূঁঞার হাট, থানার হাট, ছমির হাট ও হারিছ চৌধুরীর বাজার, ওয়াপদা বাজার, রাম গোবিন্দ বাজার এবং বৈশাখী মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  নারিকেল, সুপারি, মাদুর, শুটকি, দধি, বিভিন্ন জাতের মাছ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৩.২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮২.২%, ট্যাপ ০.১% এবং অন্যান্য ১৭.৭%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪৭.৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৭.৯% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৪.৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৭।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর জলোচ্ছ্বাসে এবং ১৯৮৫, ১৯৯১ ও ১৯৯৮ সালের বন্যায় উপজেলার ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও আশা, ব্র্যাক, প্রশিকা।  [তাহেরা বেগম রীতা]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সুবর্ণচর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।