শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ব্যক্তি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক। ব্যাংকিং কোম্পানি অ্যাক্ট ১৯৯১-এর অধীনে নিবন্ধিত এই ব্যাংকটি ২০০১ সালের ১০ মে ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে। এ ব্যাংকের সকল কার্যক্রম ইসলামি শরীয়াাহ্ মোতাবেক পরিচালিত হয় এবং ইসলামি শরীয়াহ্ অনুমোদিত বিভিন্ন পদ্ধতিতে বিনিয়োগ করে থাকে। বিনিয়োগলব্ধ মুনাফা থেকে আনুপাতিক হারে আমানতকারীদের মুনাফা প্রদান করা হয়।
ক্রমবর্ধমান চাহিদার ভিত্তিতে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড আকর্ষণীয় কিছু প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে টাকা দ্বিগুণ/তিনগুণ বৃদ্ধি প্রকল্প, মাসিক উপার্জন প্রকল্প, মাসিক আমানত প্রকল্প, হজ্ব ডিপোজিট প্রকল্প, মিলিনিয়র প্রকল্প, হাউজিং ডিপোজিট প্রকল্প, ক্যাশ ওয়াাক্ফ ডিপোজিট প্রকল্প, লাখপতি ডিপোজিট প্রকল্প, মোহর ডিপোজিট প্রকল্প, শিক্ষা ডিপোজিট প্রকল্প, বিবাহ ডিপোজিট প্রকল্প, কিস্তিতে গৃহসামগ্রী ক্রয় প্রকল্প, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিনিয়োগ কর্মসূচি, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিনিয়োগ কর্মসূচি, মাঝারি উদ্যোক্তা বিনিয়োগ কর্মসূচি, হাউজিং বিনিয়োগ প্রকল্প, গ্রামীণ বিনিয়োগ কর্মসূচি, গাড়ী ক্রয় বিনিয়োগ প্রকল্প এবং মহিলা উদ্যোক্তা বিনিয়োগ প্রকল্প, সিএনজি কনভারশন প্রকল্প, বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিনিয়োগ প্রকল্প, বিবাহ বিনিয়োগ প্রকল্প, শিক্ষা বিনিয়োগ প্রকল্প এবং এক্সিকিউটিভ বিনিয়োগ প্রকল্প অন্যতম।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড পল্লী বিনিয়োগ কর্মসূচির আওতায় পল্লী শাখার মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন ও কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপনে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আসছে। শিল্প ক্ষেত্রে বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আয়ের নতুন ক্ষেত্র তৈরি করে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নেও ব্যাংকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড দুঃস্থ ও সহায় সম্বলহীন মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান, দুর্গত এলাকায় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, মেধাবী অথচ দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং অন্যান্য জনহিতকর কাজ করে থাকে। আর এ দিকগুলি বিবেচনায় সামাজিক দায়বদ্ধতার অনুপ্রেরণায় ‘শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ দ্রুত ও স্বল্প সময়ে তাদের স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন-এর সঙ্গে একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
২০২০ সালে ব্যাংকের শাখা ১৩২, এটিএম বুথ ৪৫, এসএমই শাখা ১০ এবং অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট ১। ২০২০ সালের মার্চ মাসের শেষে ব্যাংকের অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন দাঁড়ায় যথাক্রমে ১৫,০০০ ও ৯,৮০১ মিলিয়ন টাকা।
মৌল তথ্য ও পরিসংখ্যান (মিলিয়ন টাকায়)
বিবরণ | ২০১৮ | ২০১৯ | ২০২০ | |
অনুমোদিত মূলধন | ১০০০০ | ১০০০০ | ১৫০০০ | |
পরিশোধিত মূলধন | ৮৪৮৬ | ৯৩৩৪ | ৯৮০১ | |
রিজার্ভ | ৬৩০৩ | ৭১৮৯ | ৮১৪৮ | |
আমানত | ১৭৬৮৬২ | ২০৩৩৮৪ | ২১৮৪৪৩ | |
ক) তলবি আমানত | ২৭০৯৮ | ৩৫৩৩৪ | ৪১০৫১ | |
খ) মেয়াদি আমানত | ১৪৯৭৬৪ | ১৬৮০৫০ | ১৭৭৩৯২ | |
ঋণ ও অগ্রিম | ১৮৬০৯০ | ১৯৭২৮৬ | ১৯৬৫১৩ | |
বিনিয়োগ | ১২৩২১ | ১৫৬৩৯ | ২৭৬১০ | |
মোট পরিসম্পদ | ২৪৩৬৬০ | ২৬৫৬৮৮ | ২৯৩৫১৮ | |
মোট আয় | ১৯৯৪৮ | ২৩৬১৮ | ২০২২৪ | |
মোট ব্যয় | ১৫৩৭২ | ১৭৭৩৭ | ১৬১২৯ | |
বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবসা পরিচালনা | ২৭১৯১৩ | ৩১১৯৬১ | ২৮৯৮০৫ | |
ক) রপ্তানি | ১২৫৪০২ | ১৪৭০৫২ | ১৩৩৫৮০ | |
খ) আমদানি | ১৪০৩৮২ | ১৫৭০৬০ | ১৪৮৪৬৯ | |
গ) রেমিট্যান্স | ৬১২৯ | ৭৮৪৯ | ৭৭৫৫ | |
মোট জনশক্তি (সংখ্যায়) | ২৩৯৫ | ২৬৫২ | ২৬৫৭ | |
ক) কর্মকর্তা | ১৯২৭ | ২১৬১ | ২১৬৮ | |
খ) কর্মচারি | ৪৬৮ | ৪৯১ | ৪৮৯ | |
বিদেশি প্রতিসংগী ব্যাংক (সংখ্যায়) | ৪২৮ | ৪১৬ | ৪১২ | |
শাখা (সংখ্যায়) | ১২২ | ১৩২ | ১৩২ | |
ক) দেশে | ১২২ | ১৩২ | ১৩২ | |
খ) বিদেশে | ০ | ০ | ০ | |
কৃষিখাতে | ||||
ক) ঋণ বিতরণ | ২৪২০ | ১৯০৫ | ৩৮০৩ | |
খ) আদায় | ৩২৮০ | ৪৭৯৫ | ১৪৮৩ | |
শিল্পখাতে | ||||
ক) ঋণ বিতরণ | ৫৩৭১৪ | ৫৯১৯৮ | ৬৪০৩৬ | |
খ) আদায় | ৩৯৪৬০ | ৫৫১৭০ | ৭৩০১০ | |
খাতভিত্তিক ঋণের স্থিতি | ||||
ক) কৃষি ও মৎস্য | ৪৭৪১ | ১৮০৮ | ৪৪২৮ | |
খ) শিল্প | ২৬৬২০ | ৩২৫৬৮ | ৩৬১২১ | |
গ) ব্যবসা বাণিজ্য | ৩৭২৩৫ | ৩৫৪০৫ | ৩৩৮৪২ | |
ঘ) দারিদ্র্য বিমোচন | ০ | ০ | ০ | |
সি.এস.আর | ১৫১ | ২২০ | ৩২৪ |
উৎস আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার, বার্ষিক প্রতিবেদন, ২০১৯-২০২০ ও ২০২০-২১।
একটি পরিচালক পর্ষদ কর্তৃক এই ব্যাংক পরিচালিত হয়। এ পর্ষদে রয়েচেন একজন চেয়ারম্যান, একজন ভাইস চেয়ারম্যান ও ১৮ জন পরিচালক। ৯ জন সদস্য এবং একজন সদস্য সচিব নিয়ে শরীয়াহ্ বোর্ড গঠিত। ব্যাংক পরিচালনায় শরীয়াহ্ ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব এই বোর্ডের উপর ন্যস্ত। ২০১৯ সালে ব্যাংকের আমানত ও ঋণ অগ্রিমের স্থিতির অংশ ছিল ব্যাংকিং খাতের মোট আমানত ও ঋণ অগ্রিমের স্থিতির যথাক্রমে ১.৬ এবং ১.৮ শতাংশ এবং আমানত ও ঋণ অগ্রিমের গড় সুদহার ব্যবধান দাঁড়ায় ৪.০ শতাংশ। [মো. আশিক ইকবাল এবং মোহাম্মদ আবদুল মজিদ]