মান্দা উপজেলা
মান্দা উপজেলা (নওগাঁ জেলা) আয়তন: ৩৭৫.৯৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৩৭´ থেকে ২৪°৫৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৩৫´ থেকে ৮৮°৫১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মহাদেবপুর উপজেলা, দক্ষিণে বাগমারা ও মোহনপুর উপজেলা, পূর্বে নওগাঁ সদর, রানীনগর ও আত্রাই উপজেলা, পশ্চিমে নিয়ামতপুর ও তানোর উপজেলা।
জনসংখ্যা ৩৬৩৮৫৮; পুরুষ ১৮০০২৩, মহিলা ১৮৩৮৩৫। মুসলিম ৩২৯৫৯২, হিন্দু ৩১৭৯১, বৌদ্ধ ১, খ্রিস্টান ১৭৮ এবং অন্যান্য ২২৯৬।
জলাশয় প্রধান নদী: আত্রাই, শিব। মান্দা বিল ও উথরাইল বিল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন মান্দা থানা গঠিত হয় ১৯৪৩ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৭ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ১৪ | ২৯৯ | ২৯৩ | ১২৪৭১ | ৩৫১৩৮৭ | ৯৬৮ | ৬৭.৫ | ৪৫.৫ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
৭.৪৩ | ৫ | ১২৪৭১ | ১৬৭৮ | ৬৭.৫ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
কাশব ৪৭ | ৩৯৪৪ | ৯৬৯১ | ১০৪৫৬ | ৪৮.৪ | ||||
কালিকাপুর ৩৩ | ৭০৪৯ | ১১৭৭৭ | ১১৭৮৭ | ৪৪.০ | ||||
কংশপাড়া ৪০ | ৫৪৩৩ | ১২০২০ | ১২২৮২ | ৪৩.৬ | ||||
কুসুম্বা ৫৪ | ৭১১৫ | ১৮৪৩৮ | ১৮৭৫২ | ৬২.১ | ||||
গনেশপুর ২৭ | ৬৪৮১ | ১৩৩৮৫ | ১৩৮০০ | ৪১.৫ | ||||
তেঁতুলিয়া ৯৪ | ৯৫৭৩ | ১২৭২২ | ১৩০২০ | ৪৬.৯ | ||||
নূরুল্লাবাদ ৭৪ | ৭১৩৮ | ১৩৭৪৩ | ১৩৭৯৩ | ৪২.৭ | ||||
পরানপুর ৮১ | ৬৬৬৩ | ১২৯০৬ | ১৩২৩৭ | ৪০.৬ | ||||
প্রসাদপুর ৮৮ | ৫৬০৮ | ১১৬৫৬ | ১১৮২৪ | ৪৬.৭ | ||||
বিষ্ণুপুর ২০ | ৭০৩৫ | ৯৮২৬ | ৯৯০৯ | ৪৮.৫ | ||||
ভারশোঁ ১৩ | ১২৮৬৫ | ১৬৯৯৬ | ১৭৩২৪ | ৪২.৯ | ||||
ভালাইন ১২ | ৭৫৮৪ | ১১৩৮৯ | ১১৬১২ | ৪২.৮ | ||||
মান্দা ৬৭ | ৫৩০৯ | ১৪৫০১ | ১৪৯৩৫ | ৪৯.৪ | ||||
মৈনম ৬১ | ৬৩৩৮ | ১০৯৭৩ | ১১১০৪ | ৪১.৫ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ ৬ গমু^জ বিশিষ্ট কুসুম্বা শাহী মসজিদ (১৫৫৮), ঠাকুর মান্দার রঘুনাথ মন্দির, সতীহাটের নীলকুঠি।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে এ উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের পাকুরিয়া গ্রামে পাকবাহিনী ১২৮ জন লোককে হত্যা করে মাটি চাপা দেয়। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের সময় এ এলাকায় ব্যাপক লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও গণহত্যা সংঘটিত হয়। উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা সেন উচ্চ বিদ্যালয় ও কালিকাপুর গ্রামে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে অপারেশন পরিচালনা করে। মনোহরপুর গ্রামে ১টি গণকবর এবং পাকুরিয়ায় ১টি বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে।
বিস্তারিত দেখুন মান্দা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৮।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৯২২, মন্দির ২১, গির্জা ২, তীর্থস্থান ১।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৬.৩%; পুরুষ ৫১.৫%, মহিলা ৪১.২%। কলেজ ১৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০৭, কিন্ডার গার্টেন ২, মাদ্রাসা ১৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মান্দা মোমিন শাহানা ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), মৈনম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৫), মান্দা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), পাঁজর ভাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০১), মজিদপুর ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৭০)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ৪১, সিনেমা হল ৪, খেলার মাঠ ১৪৬।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৮.৭৫%, অকৃষি শ্রমিক ২.২৮%, শিল্প ০.৬৮%, ব্যবসা ৮.৯৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৮৬%, চাকরি ২.৬৯%, নির্মাণ ০.৪৯%, ধর্মীয় সেবা ০.০৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৮% এবং অন্যান্য ৪.০৯%।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, সরিষা, আলু, আখ, তিল, কলাই, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, যব, তিসি, অড়হর।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, লিচু, কলা, কাঁঠাল, পেয়ারা, পেঁপে।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৬, গবাদিপশু ৭৯, হাঁস-মুরগি ৯৫।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৩১১ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৭২ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩০, মেলা ৫। চৌবাডিয়া হাট, সাবাই হাট, দেলুয়াবাড়ি হাট, সতিহাট, প্রসাদপুর হাট উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, গম, আখের গুড়, কলা, পেঁপে, শাকসবজি।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩২.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৩.৯%, ট্যাপ ১.৩% এবং অন্যান্য ৪.৮%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩২.৪% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৬.৫% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২১.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৭৭০ (১১৭৬ সালের মন্বন্তর) সালের দুর্ভিক্ষে এবং ১৯৬২ ও ১৯৯৫ সালের বন্যার অব্যবহিত পরে মহামারিতে উপজেলার বেশসংখ্যক লোক প্রাণ হারায়।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৯, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১২, কমিউনিটি ক্লিনিক ৪৯।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, কেয়ার, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ। [মো. আবু রাশেদ]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মান্দা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।