শিবগঞ্জ উপজেলা (বগুড়া)
শিবগঞ্জ উপজেলা (বগুড়া জেলা) আয়তন: ৩১৪.৯২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫৫´ থেকে ২৫°০৭´ উত্তর আংশ এবং ৮৯°১১´ থেকে ৮৯°২৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা (গাইবান্ধা), দেিণ বগুড়া সদর, কাহালু ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা, পূর্বে সোনাতলা ও গাবতলী উপজেলা, পশ্চিমে কালাই ও তেলাল উপজেলা।
জনসংখ্যা ৩৭৮৭০০; পুরুষ ১৯০৩৭৬, মহিলা ১৮৮৩২৪। মুসলিম ৩৬১৬১৪, হিন্দু ১৬৮১১, বৌদ্ধ ২, খ্রিস্টান ৭৩ এবং অন্যান্য ২০০।
জলাশয় প্রধান নদী: করতোয়া, নাগর, গানী, গজারিয়া, নুনগালার, ভিমতি। শব্দল দিঘি, দীঘার বিল, ভাটিমর্চ বিল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন এ উপজেলা গঠিত হয় ২৪ মার্চ ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১২ | ২৩৭ | ৪০৯ | ২১৬৪৩ | ৩৫৭০৫৭ | ১২০৩ | ৪৪.৬ | ৪৪.১ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
১৩.৬৭ | ৯ | ৩১ | ২১৬৪৩ | ১৫৮৩ | ৪৪.৬ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
আটমূল ১১ | ৭৮৪৩ | ১৫৮৯৩ | ১৫৮৯৩ | ৪১.০ | ||||
কিচক ৩৯ | ৬২৮২ | ১৬৯০৬ | ১৬৯০৬ | ৪০.৭ | ||||
দেউলি ৩১ | ৬৫০০ | ১৪৯২৮ | ১৪৯২৮ | ৫৩.৯ | ||||
পিরব ৭১ | ৫৯৭৩ | ১২২৪৭ | ১২২৪৭ | ৪৩.৯ | ||||
বিহার ১৫ | ৪২২৯ | ১০২৬৯ | ১০২৬৯ | ৪০.৯ | ||||
বুড়িগঞ্জ ২৩ | ৫৩২২ | ১১৭৭৬ | ১১৭৭৬ | ৪৩.১ | ||||
ময়দানহাটা ৪৭ | ৭৬০২ | ১৬১১৭ | ১৬১১৭ | ৩৯.২ | ||||
মাঝিহট্ট ৫৫ | ৬৫০৫ | ১২০৫১ | ১২০৫১ | ৪৮.৫ | ||||
মোকামতলা ৬৩ | ৫৫৬১ | ১৭৭৫৫ | ১৭৭৫৫ | ৪২.৩ | ||||
রায়নগর ৭৯ | ৪৬১৫ | ১৫৮৮২ | ১৫৮৮২ | ৪১.৫ | ||||
শিবগঞ্জ ৯৪ | ৭৩৪৫ | ১৯০৮৬ | ১৯০৮৬ | ৪০.৫ | ||||
সৈয়দপুর ৮৭ | ৬৬১৫ | ১৬৫৫০ | ১৬৫৫০ | ৫৪.১ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ মহাস্থানগড় (রায়নগর ইউনিয়ন), ভাসুবিহার, হযরত শাহ সুলতান বলখী মাহীসওয়ারের (র:) মাযার ও মসজিদ, বিহারহাট জামে মসজিদ।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল পাকবাহিনী ময়দানহাটার একটি পরিবারের ১৬ জন সদস্যকে হত্যা করে। তাছাড়া পাঁচপীর সরলপুর গ্রামে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সম্মুখ লড়াইয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
বিস্তারিত দেখুন শিবগঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৯।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৫৯১, মন্দির ৩০, মাযার ২, তীর্থস্থান ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মহাস্থান মাযার জামে মসজিদ, বিহার হাট জামে মসজিদ, শিবগঞ্জ চৌধুরীবাড়ী জামে মসজিদ, হযরত শাহ সুলতান বলখী মাহীসওয়ারের (র:) মাযার, দেউলী চাকীবাড়ী সার্বজনীন কাত্যায়নী পূজা মন্দির।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৪.১%; পুরুষ ৪৭.৯%, মহিলা ৪০.২%। কলেজ ৭, কারিগরি ও ব্যবসা প্রশাসন কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬৩, মাদ্রাসা ৩৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শিবগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩১)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাময়িকপত্র: সোনালী উপহার; অনিয়মিত: ভোর হলো দোর খোলো; অবলুপ্ত: নাগর।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, কাব ৭৩, মহিলা সংগঠন ১, সিনেমা হল ৫, খেলার মাঠ ৩২।
দর্শনীয় স্থান মহাস্থানগড় জাদুঘর।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৫.৪৭%, অকৃষি শ্রমিক ২.৯২%, শিল্প ২.২১%, ব্যবসা ১২.৭৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.০১%, চাকরি ১১.৩৯%, নির্মাণ ১.৬৭%, ধর্মীয় সেবা ০.২২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.৫৫% এবং অন্যান্য ৭.৮২%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৯.৯%, ভূমিহীন ৪০.১%।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, ভুট্টা, আলু, আদা, পান, পাট, আখ, হলুদ, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি ডাল, ছোলা, তিল, কাউন, অড়হর, তিসি।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, ফুটি, নারিকেল, তাল, বেল, বাতাবিলেবু।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার গবাদিপশু ৩৬, হাঁস-মুরগি ৬১।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২৩২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১১ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৬৭ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, সোয়ারী, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা হিমাগার ৭, ওয়েল্ডিং কারখানা ১৫।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প ৩০, লৌহশিল্প ৪০, মৃৎশিল্প ৮০, তাঁতশিল্প ২৯৪, দারুশিল্প ১৫০, বাঁশের কাজ ৭০, সেলাই কাজ ৪৫০।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৫৫, মেলা ৫। মোকামতলা হাট, মহাস্থান হাট, চণ্ডিহারা হাট, শিবগঞ্জ হাট, শিহালী হাট, কিচক হাট এবং গাংনগর মেলা, শিলাদেবীর ঘাটের মেলা, মহাস্থান শেষ বৈশাখের মেলা, বরিয়ারহাট মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য কলা, আলু, ধান, হলুদ, গম, শাকসবজি।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৫.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৮%, ট্যাপ ১.১% এবং অন্যান্য ৩.১%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪৬.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩০.৪% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২৩.৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, হাসপাতাল ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার কেন্দ্র ৮, দাতব্য চিকিৎসালয় ৫, কমিউনিটি ক্লিনিক ৪৮, ক্লিনিক ২, পশু হাসপাতাল ১, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, ইউনিয়ন হেলথ সেন্টার ১১।
এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ, পল্লী উন্নয়ন সংস্থা। [মো. সহিদুল ইসলাম]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; শিবগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।