চিরিরবন্দর উপজেলা
চিরিরবন্দর উপজেলা (দিনাজপুর জেলা) আয়তন: ৩১২.৬৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°৩১´ থেকে ২৫°৪৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৪২´ থেকে ৮৮°৫৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে খানসামা ও সৈয়দপুর উপজেলা, দক্ষিণে ফুলবাড়ী উপজেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, পূর্বে পার্বতীপুর উপজেলা, পশ্চিমে দিনাজপুর সদর উপজেলা।
জনসংখ্যা ২৯২৫০০; পুরুষ ১৪৬৬১৯, মহিলা ১৪৫৮৮১। মুসলিম ২২২৪০৮, হিন্দু ৬৭০৩৭, খ্রিস্টান ৭০৬ এবং অন্যান্য ২৩৪৯। এ উপজেলায় সাঁওতাল আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
জলাশয় প্রধান নদী: ছোট যমুনা ও আত্রাই।
প্রশাসন চিরিরবন্দর থানা গঠিত হয় ১৯১৪ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ১২ | ১৪২ | ১৪২ | ৮৬৮৩ | ২৮৩৮১৭ | ৯৩৫ | ৬৫.৬ | ৫২.৫ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
৫.৫৮ | ১ | ৮৬৮৩ | ১৫৫৬ | ৬৫.৬ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
অমরপুর ২৩ | ৭৭৫১ | ১২৭৭২ | ১২৫২৬ | ৫৩.৮ | ||||
আউলিয়াপুকুর ৩১ | ৮৪২৩ | ১৩১৭৯ | ১৩০৮১ | ৪৭.২ | ||||
আব্দুলপুর ১৩ | ৮৫৩৯ | ২০১২৭ | ১৯৪০৪ | ৫৫.৬ | ||||
আলোকডিহি ১৫ | ২৬৬৫ | ৬৩৪১ | ৬২৮০ | ৫৮.১ | ||||
ইসবপুর ৫৫ | ৬৫৯৬ | ১৩৪৮৩ | ১৪১৩০ | ৪৮.৫ | ||||
তেতুঁলিয়া ৯৪ | ৩৫৫৬ | ৭০১১ | ৭২৩৩ | ৫০.৩ | ||||
নশরতপুর ৬৩ | ২৮৪৭ | ১১৫৭৯ | ১১৫১৪ | ৪৮.৯ | ||||
পুনাট্টি ৭১ | ৯৩১৪ | ১৩৮২৮ | ১৩৩৩৯ | ৫৮.৯ | ||||
ফতেজংপুর ৪৭ | ৬৩৬৪ | ১৩৭৪৫ | ১৪২৯৪ | ৫০.০ | ||||
ভিয়াইল ৩৯ | ৯৬৭৮ | ১২০০৮ | ১১৫৭৮ | ৫১.৮ | ||||
সাইনতারা ৭৯ | ৭৬২৭ | ১৩৮৫৯ | ১৩৫৫৬ | ৫৮.৭ | ||||
সাতনালা ৮৭ | ৩৯০৯ | ৮৬৮৭ | ৮৯৪৬ | ৫২.০ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বারদুয়ারী মসজিদ।
ঐতিহাসিক ঘটনা ১৯৪৭ সালের ৪ জানুয়ারি তেভাগা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্রিটিশ সৈন্যদের গুলিতে মুসলিম বর্গাদার সমির উদ্দিন ও সাঁওতাল শিবুরাম মাঝি নিহত হয়।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় দশ মাইল নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। উপজেলায় রানী বন্দর জে.বি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বধ্যভূমি ও গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে।
বিস্তারিত দেখুন চিরিরবন্দর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৩।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫২.৯%; পুরুষ ৫৬.২%, মহিলা ৪৯.৫%। কলেজ ৯, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৮৩, মাদ্রাসা ৩৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: চিরিরবন্দর ডিগ্রি কলেজ, ইছামতি ডিগ্রি কলেজ, কারেন্টের হাট কলেজ, চিরিরবন্দর মহিলা কলেজ, দক্ষিণ পলাশবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯), আলোকডিহি কে. বি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৭), বিন্যাকুড়ী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৮), নখৌড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫১), জে.বি উচ্চ বিদ্যালয়, ইছামতি ফাজিল মাদ্রাসা।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ৪৫, সিনেমা হল ১, লাইব্রেরি ১।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭০.৪৩%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৬৬%, শিল্প ১.১৩%, ব্যবসা ১২.৪৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.০৭%, চাকরি ৪.৮৮%, নির্মাণ ০.৬০%, ধর্মীয় সেবা ০.১৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৮% এবং অন্যান্য ৩.৪০%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫০.০৪%, ভূমিহীন ৪৯.৯৬%। শহরে ৪৫.৯১% এবং গ্রামে ৫০.১৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, আখ, আলু, ডাল, তৈলবীজ।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আউশ ধান, পান, তামাক।
প্রধান ফল-ফলাদি লিচু, আম, কলা, কাঁঠাল।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এবং হ্যচারি রয়েছে।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১০২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৬ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬০২ কিমি; রেলপথ ২০কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা রাইস মিল, হাসকিং মিল, স‘মিল, অয়েল মিল।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৫৩, মেলা ৮। রানী বন্দর হাট, ভূষিবন্দর হাট, চাম্পাতলী হাট, বিন্যাকুড়ী হাট, চিরিরবন্দর হাট, কুতুবডাঙ্গার হাট, ঘন্টাঘর হাট এবং দুর্গাডাঙ্গা মেলা, পীরগঞ্জ মেলা ও কালীগঞ্জ মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, চাল, তাঁতের কাপড়।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৩.৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৫%, ট্যাপ ০.৪% এবং অন্যান্য ২.১%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৪.৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪১.৬% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২৩.৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১১, স্যাটেলাইট ক্লিনিক ২।
এনজিও ব্র্যাক, আইটিসিএল, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ, বাংলাদেশ যুব ঐক্য কল্যাণ সংস্থা, সাসটেইন। [রেজাউল করিম]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; চিরিরবন্দর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।