নালিতাবাড়ী উপজেলা

Banglapedia admin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৫:৫৫, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

নালিতাবাড়ী উপজেলা (শেরপুর জেলা)  আয়তন: ৩২৭.৬০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°০১´ থেকে ২৫°১৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০৪´ থেকে ৯০°১৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে শেরপুর সদর ও নকলা উপজেলা, পূর্বে হালুয়াঘাট উপজেলা, পশ্চিমে ঝিনাইগাতী উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৫১৩৬১; পুরুষ ১২৪৬৪৯, মহিলা ১২৬৭১২। মুসলিম ২৩৭৯৩০, হিন্দু ৯৫০৮, বৌদ্ধ ৫, খ্রিস্টান ৩৬৭৯ এবং অন্যান্য ২৩৯। এ উপজেলায়  গারো, হাজং, হদি, মন্দাই, কোচ প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় ভোগাই, কংস, মালঝী ও থালং নদী এবং খুসকি বিল, পাইকল বিল, কাস্তি বিল, বড় বিল, কুলা বিল ও দুবলাকুড়ি বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন নালিতাবাড়ী থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১২ ১০৭ ১৪০ ২৭১৪২ ২২৪২১৯ ৭৬৭ ৫৫.০ ৩৭.০
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৯.২৫ ১৭ ২৭১৪২ ২৯৩৪ ৫৫.০
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) (আদমশুমারি ২০০১) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কলসপুর ৪১ ৯৫৮০ ১৪০২৫ ১৩৮২১ ৩২.২
কাঁকড়কান্দি ৩৮ ৬৪২২ ৭৮৩৬ ৮১৪৯ ৪১.৫
নুন্নী ৬৯ ১২৯৫৯ ৮৯৪৮ ৯১৮৮ ৪০.২
নয়াবিল ৫৫ ৭৬৯৯ ৮১৭৮ ৮৪১৪ ৪২.১
নালিতাবাড়ী ৫১ ১২০৭৯ ৭০৭৩ ৭১৭৮ ৩৮.১
পোড়াগাঁও ৭৫ ৭০০৫ ৭৫৫৬ ৭৮৯৮ ৩৯.৪
বাঘবেড় ৩০ ১৬৩০১ ৯৯৮৭ ৯৯৬৪ ৩৮.৮
মরিচপুড়া ৭২ ৫৫৯৯ ৯২২৩ ৯৩৮৩ ৩৮.৫
যোগানিয়া ৩৪ ৭৩৮০ ১০৬৫১ ১০৬২৫ ৩২.০
রূপনারায়ণকুড়া ৯৪ ১১৯৩৪ ৭৩২২ ৭৬৪৪ ৩২.২
রাজনগর ৭৭ ৬১৩৪ ১২১৪৫ ১২৭২১ ৩৬.১
রামচন্দ্রকুড়া-মণ্ডলিয়া ৮৬ ১৪১৬৭ ৮০৫৩ ৮২৩৭ ৩৬.৭

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ  কমলারানীর দীঘি বা সুতানলী দীঘি (নালিতাবাড়ী)।

tjumb
tjumb

ঐতিহাসিক ঘটনা ১৯৩৭ সালে এ উপজেলায় অবিভক্ত ভারতের পূর্বাঞ্চলের কৃষক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ৬ জুলাই এ উপজেলার চেল্লাখালিতে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে কমান্ডার নাজমুল আহসান সহ বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২৭ জুলাই সোহাগপুর গ্রামে পাকসেনারা ১৮৫ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। উপজেলার নাকুগাঁওতে ১টি গণকবর রয়েছে; ১টি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন নলিতাবাড়ী উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৬৪, মন্দির ২০, গির্জা ১৯, মাযার ১০।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৯.০%; পুরুষ ৪০.৫%, মহিলা ৩৭.৫%। কলেজ ৪, কারিগরি কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৬, মাদ্রাসা ৫২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নাজমুল স্মৃতি মহাবিদ্যালয় (১৯৭২), নালিতাবাড়ী শহীদ আবদুর রশিদ মহিলা কলেজ (১৯৯৬), হিরন্ময়ী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), তারাগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৭), তারাগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৯), তারাগঞ্জ ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৫০), গড়কান্দা মহিলা আলিম মাদ্রাসা (১৯৯৪)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ২০, থিয়েটার গ্রুপ ২, সিনেমা হল ২, সামাজিক সংগঠন ১০, খেলার মাঠ ২০।

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, 'দর্শনীয় স্থান মধুটিলার ইকোপার্ক, ভোগাই নদীর উপর নির্মিত রাবার ড্যাম।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭০.০৬%, অকৃষি শ্রমিক ৬.২৫%, শিল্প ০.৫৭%, ব্যবসা ৮.৫৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১৫%, চাকরি ২.৯৩%, নির্মাণ ০.৬৪%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৩% এবং অন্যান্য ৮.৫১%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৫.০২%, ভূমিহীন ৪৪.৯৮%। শহরে ৪২.৪৫% এবং গ্রামে ৫৬.৫১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, আলু, সরিষা, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি মিষ্টি আলু, কাউন, তিসি, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৫, গবাদিপশু ২১, হাঁস-মুরগি ১৫, হ্যাচারি ২, নার্সারি ৪।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১২৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫০৮ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা রাইসমিল ৭০, আইসমিল ২, ওয়েল্ডিং কারখানা ২০।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশ, বেত ও কাঠের কাজ, সেলাই কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৪১। নালিতাবাড়ী বাজার, আড়াইআনী বাজার, নয়আনী ঘাটপাড়া বাজার, কোটের বাজার ও বারমারি বাজার উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  চাল, কলা, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৪.৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

প্রাকৃতিক সম্পদ সাদা মাটি, নুড়ি পাথর ও বোল্ডার ও সাদা বালি।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯১.৪%, ট্যাপ ০.৮% এবং অন্যান্য ৭.৮%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬২.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩০.৮% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬.৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬, কমিউনিটি ক্লিনিক ১৩, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার বহু লোক প্রাণ হারায়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, কেয়ার, কারিতাস।  [জ্যোতি পোদ্দার]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নালিতাবাড়ী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।