কেন্দুয়া উপজেলা

Banglapedia admin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৮:৩১, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

কেন্দুয়া উপজেলা (নেত্রকোনা জেলা)  আয়তন: ৩০৩.৫৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৩৪´ থেকে ২৪°৪৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৪১´ থেকে ৯০°৫৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নেত্রকোনা সদর ও আটপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে নান্দাইল ও তাড়াইল উপজেলা, পূর্বে মদন উপজেলা, পশ্চিমে নান্দাইল, ঈশ্বরগঞ্জ ও গৌরীপুর উপজেলা।

জলাশয় বাউরী, পাতকুরা ও সাতা নদী এবং বাইনপুর, কিলা ও চিকনী বিল উল্লেখযোগ্য।

জনসংখ্যা ৩০৪৭২৯; পুরুষ ১৫০০৫৭, মহিলা ১৫৪৬৭২। মুসলিম ২৯৩০১৪, হিন্দু ১১৩৩২, বৌদ্ধ ১, খ্রিস্টান ১০ এবং অন্যান্য ৩৭২।

প্রশাসন কেন্দুয়া থানা গঠিত হয় ১৮৯০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১৩ ২১৭ ২৮৯ ২২৩৬৩ ২৮২৩৬৬ ১০০৪ ৫৩.৪ ৩৬.৩
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১০.৬৪ ৩২ ২২৩৬৩ ২১০২ ৫৩.৪
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আশুজিয়া ১১ ৫৬৬৯ ৯২৭৫ ৯৪১৪ ৩৮.৩
কান্দিউরা ৪৭ ৪২৮১ ৭৭৪৬ ৭৯১৯ ৩৪.৬
গড়াডোবা ৩৩ ৬২৫৭ ১১৬৯৭ ১২০৬২ ৩৮.৪
গেণ্ডা ৪০ ৪৩২৫ ১০৩৯৪ ১০৮০৪ ৪০.৫
চিরাং ২০ ৫১৯৫ ১০৭৪২ ১০৯২০ ৩৬.৪
দলপা ২৭ ৫৪৫৯ ১০০২৫ ১০৩১৬ ৪১.২
নোয়াপাড়া ৭৪ ৫৩১১ ৯৩৪০ ৯৫২৯ ৩২.৩
পাইকুড়া ৮১ ৬২৫১ ১১৮০১ ১২২৩৩ ৩৫.০
বলাইশিমুল ১৩ ৭১৫৪ ১১৩৭১ ১১৫৪২ ৩৯.৭
রোয়াইলবাড়ি ৮৮ ৫৯১১ ১২৪৪৩ ১৩০২৬ ৩৪.২
মাশকা ৬১ ৫০৯৩ ১০৫৪৫ ১১২৮৩ ৩৫.৬
মোজাফ্ফরপুর ৬৭ ৬৩৯৯ ১২২৬৫ ১২৫৫৯ ২৯.৩
সান্দিকোনা ৯৪ ৫১০১ ১১২১০ ১১৯০৫ ৩৬.৭

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ রোয়াইলবাড়ি জালাল মসজিদ, প্রাচীনদূর্গ (রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়ন), ধানচাপুরের কালিমন্দির ও বিশালায়তন দিঘি, জাফরপুর খোয়াজ মসজিদ।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে মুক্তিবাহিনী কেন্দুয়া থানা আক্রমণ করে বিপুলসংখ্যক অস্ত্র ও গোলাবারুদ হস্তগত করে। ১৩ নভেম্বর মুক্তিবাহিনী কেন্দুয়ার বোসের বাজার এলাকা থেকে ১২টি রাইফেল হস্তগত করে এবং ৮ জন রাজাকারকে গ্রেফতার করে। ২০ নভেম্বর মুক্তিবাহিনী এ উপজেলার পাতকুড়া নদীর ব্রিজের ওপর অবস্থিত পাকবাহিনীর ক্যাম্প আক্রমণ করলে বেশসংখ্যক রাজাকার নিহত হয় এবং ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

বিস্তারিত দেখুন কেন্দুয়া উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৯০, মন্দির ১২, তীর্থস্থান ২।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৭.৬%; পুরুষ ৩৯.১%, মহিলা ৩৬.১%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কেন্দুয়া জয়হরি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৩২), আশুজিয়া জেএনসি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), নওয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), সান্দিকোনা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২২), বেখৈরহাটি নরেন্দ্রকান্ত উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২২), রওশন ইজদানী একাডেমি (১৯৬৫), জনতা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৫), গেন্ডা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৮), গগডা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৯), মজলিশপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৩), কেন্দুয়া ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৯)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দেশের ডাক (বর্তমান)  ও নবনূর (অবলুপ্ত)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ২০, লাইব্রেরি ১, মহিলা সংগঠন ১, খেলার মাঠ ১২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৪.১৯%, অকৃষি শ্রমিক ৩.১২%, শিল্প ০.৫৪%, ব্যবসা ৮.৬৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৩৬%, চাকরি ৩.৭৯%, নির্মাণ ০.৮৯%, ধর্মীয় সেবা ০.২৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৬% এবং অন্যান্য ৬.০৩%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬২.২১%, ভূমিহীন ৩৭.৭৯%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, গম, সরিষা, তামাক, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসল  তিল, তিষি, মিষ্টিআলু, কলাই, মটরশুটি, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, জাম, লিচু, কলা, কাঁঠাল, কূল, জলপাই, পেঁপে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৮২ কিমি, আধাপাকা রাস্তা ১ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৩৬ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা ময়দা কল, বরফ কল, বেকারি, বিড়িকারখানা, ওয়েল্ডিং উল্লেখযোগ্য।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, সূচিশিল্প, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ উল্লেখযোগ্য।

হাটবাজার, মেলা   হাটবাজার ২৫, মেলা ৫। রোয়াইলবাড়ি বাজার, চিরাং বাজার, রায়ের বাজার, বসুর বাজার ও বেকুরহাটী বাজার এবং সঠিই মেলা, বৈরাটির মেলা, অষ্টমী স্নানের লোকজ মেলা ও কেন্দুয়ার মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   সরিষা, কলা, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৭.৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয় জলের উৎস নলকূপ ৯২.৯%, ট্যাপ ০.৪% এবং অন্যান্য উৎস ৬.৭%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে সহনীয় মাত্রার আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৭.৩% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪০.৪% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২২.৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ২, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৩, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র ১৩।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, কারিতাস।  [মোঃ আবুল হাশেম খান]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কেন্দুয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন  ২০০৭।