প্রকোপ

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৫:৩৩, ১৭ জুলাই ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

প্রকোপ (Virulence) ভিরুলেন্স বা প্রকোপ শব্দটি উদ্ভুত হয়েছে বিশেষ্য ভিরুলেন্ট থেকে, যার অর্থ রোগের তীব্রতা। ভিরুলেন্সকে সংক্রমণের বেগ, তীব্রতাবা প্রাবল্য ইত্যাদি সমার্থক শব্দ দিয়েও নির্দেশ করা যেতে পারে। ভিরুলেন্ট শব্দটি মূল ল্যাটিন ভিরুলেন্টাস শব্দ থেকে যার অর্থ ‘বিষাক্ত ক্ষত’ বা ‘বিষে ভরা’ । ভিরুলেন্স হলো কোনো প্যাথোজেনের বা রোগ-বীজাণুর ঐ তুলনামূলক ক্ষমতা যা দ্বারা সে আক্রান্ত হোস্ট বা পোষকদেহের (প্রাণী, উদ্ভিদ বা অণুজীব) রোগ প্রতিরোধ সুরক্ষাকে অকেজো করে রোগ বা কোনো ক্ষতি সাধন করতে পারে। প্রাণী জগতে প্রকোপ বলতে বোঝায় অণুজীব বা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত পোষকদেহে ক্ষতির মাত্রা।

প্যাথোজেনের রোগ সৃষ্টির ক্ষমতা বা তার বিষাক্ততার মাত্রা (প্যাথোজেনিসিটি) নির্ধারিত হয় ‘ভিরুলেন্স ফেক্টর’ বা প্রকোপ মাত্রা দ্বারা। ‘ভিরুলেন্স ফেক্টর’-এর একটি উদাহরণ হলো পোষক কোষে রোগ-বীজাণুর বংশ-বিস্তারের ক্ষমতা। অণুজীব বিজ্ঞানে ‘ভিরুলেন্স ফেক্টর’ এপিডেমিওলজি বা রোগ বিস্তার কিংবা মহামারী সংক্রান্তবিদ্যায় বিশেষ করে একটি নতুন প্যাথজেনিক স্ট্রেইন বা ধরণকে অনুসরণ ও অন্বেষণে অত্যাবশ্যকীয় বলে বিবেচিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, করোনাভাইরাস-এর ডেল্টা স্ট্রেইনটি অত্যন্ত ভিরুলেন্ট ও পোষকদেহের জন্য তুলনামূলকভাবে বেশী ক্ষতিকর। জীববিজ্ঞানে প্রকোপ বলতে রোগ সৃষ্টিকারি অণুজীব বা ভাইরাসের রোগ সৃষ্টির ক্ষমতাকে বোঝায়। উদ্ভিদের ক্ষেত্রে প্রকোপ বলতে রোগ-বীজাণু দ্বারা একটি রোগ প্রতিরোধী উদ্ভিদ প্রজাতিকে আক্রান্ত করার সক্ষমতাকে বোঝানো হয়। জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জীব ও তার পারিপার্শ্বিক জড় পরিবেশের সম্পর্ক বিষয়ে অধ্যয়ন করা হয়, সেই বাস্তুবিদ্যা বা ‘ইকোলজি’ এর দৃষ্টিকোণ থেকে রোগ-বীজাণু দ্বারা আক্রান্ত পোষকের বেঁচে থাকার সক্ষমতা বা ‘ফিটনেস’ হারিয়ে ফেলাকে প্রকোপ বলা হয়। এই শাখায় ভিরুলেন্সের দ্বিবিধ কারণ আছে। প্রাথমিক কারণ হিসেবে রোগ-জীবাণুর সেই নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যসমূহ যা দ্বারা পোষক আক্রান্ত হয়, তাকে বোঝানো হয়। অন্যদিকে চূড়ান্ত কারণ হলো দীর্ঘ বিবর্তনের চাপ, যার ফলে পোষকদেহে জমা হতে থাকা ভিরুলেন্ট বৈশিষ্ট্যসমূহকে বোঝানো হয়। ভিরুলেন্স ও প্যাথোজিনিসিটির অর্থ পরস্পর সম্পর্কিত কিন্তু এক নয়। যেখানে প্যাথোজিনিসিটিকে রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী প্যাথোজেনের সামর্থকে ধরা হয়, সেখানে ভিরুলেন্স বলতে নির্দিষ্ট প্যাথোজেনে প্যাথোজেনিসিটির মাত্রাকে বোঝানো হয়ে থাকে। [এম আনোয়ার হোসেন]