সিটি ব্যাংক লিমিটেড
সিটি ব্যাংক লিমিটেড দেশের বেসরকারি খাতে সর্বপ্রথম অনুমোদনপ্রাপ্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক। প্রতিটি ১০০ টাকা মূল্যের ২ মিলিয়ন সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত ২০০ মিলিয়ন টাকা অনুমোদিত এবং ৩.৪ লক্ষ সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত ৩৪ মিলিয়ন টাকা পরিশোধিত মূলধন নিয়ে সিটি ব্যাংক লিমিটেড ২৭ মার্চ ১৯৮৩ সালে ব্যাংকিং ব্যবসায় আরম্ভ করে। মোট পরিশোধিত মূলধনের মধ্যে ৩০ মিলিয়ন টাকা ব্যাংকটির উদ্যোক্তাগণ এবং ৪ মিলিয়ন টাকা বাংলাদেশ সরকার পরিশোধ করে। বিভিন্ন ধাপে বৃদ্ধি করার ফলে এ ব্যাংকের অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ২০২০ সালের মার্চ শেষে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১৫০০০ মিলিয়ন ও ১০১৬৪ মিলিয়ন টাকা।
চেয়ারম্যান ও একজন ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিচালক পর্ষদ এ ব্যাংকের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও নীতি নির্ধারণের দায়িত্বে নিয়োজিত। ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী। ৩ জন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ৭ জন বিভাগীয় প্রধান সমন্বয়ে এ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা টিম গঠিত। দেশের ৮ট বিভাগীয় শহরে এ ব্যাংকের ৮টি আঞ্চলিক অফিস রয়েছে।
দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড মৌল তথ্য ও পরিসংখ্যান (মিলিয়ন টাকায়)
বিবরণ | ২০১৮ | ২০১৯ | ২০২০ |
অনুমোদিত মূলধন | ১৫০০০ | ১৫০০০ | ১৫০০০ |
পরিশোধিত মূলধন | ৯৬৭৯.৯ | ১০১৬৩.৯ | ১০১৬৪ |
রিজার্ভ | ১৪৭৫০.১ | ১৬৪২৭.১ | ১৮৬৫৪.৫ |
আমানত | ২০৫১৭০.২ | ২৪৬৭০৩.৭ | ২৫৪৭৮১.১ |
ক) তলবি আমানত | ৩৩০৯৫.৮ | ৪৬৮৪৭.৬ | ৫২৬৭০.৭ |
খ) মেয়াদি আমানত | ১৭২০৭৪.৪ | ১৯৯৮৫৬.১ | ২০২১১০.৪ |
ঋণ ও অগ্রিম | ২৩১৩৯১.৫ | ২৪৬৯৪৩.৭ | ২৬৮২০১.৫ |
বিনিয়োগ | ২৭৮৮২ | ৩৯৪৫১.৫ | ৪৬২৫১.৪ |
মোট পরিসম্পদ | ৩২৪৭৮০.৩ | ৩৫৪৬০২.৬ | ৩৮২৯২৫.৮ |
মোট আয় | ২৯৬৭০ | ৩৪২৭১.৯ | ৩১৫০৮.৪ |
মোট ব্যয় | ২২৯৯০.৮ | ২৫৯৮৪.৮ | ২৪৪৬৮.৬ |
বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবসা পরিচালনা | ৩২৩১৭৬ | ৩৬৫০৯৫.২ | ৩৩৫০৯৫.৫ |
ক) রপ্তানি | ১২০৬৯৮ | ১৯৭৫৯০.১ | ১১৯৯৮৭ |
খ) আমদানি | ১৭৩৮৪৭ | ১৩০২৪০.৮ | ১৮০৮১৭.৫ |
গ) রেমিট্যান্স | ২৮৬৩১ | ৩৭২৬৪.৩ | ৩৪২৯১ |
মোট জনশক্তি (সংখ্যায়) | ৩৮৫৮ | ৪৪৯৩ | ৪৩৫৬ |
ক) কর্মকর্তা | ৩৫১৬ | ৪১৬৬ | ৪০৪২ |
খ) কর্মচারি | ৩৪২ | ৩২৭ | ৩১৪ |
বিদেশি প্রতিসংগী ব্যাংক (সংখ্যায়) | ৪৯১ | ৪৬৬ | ৪৬৯ |
শাখা (সংখ্যায়) | ১৩১ | ১৩২ | ১৩২ |
ক) দেশে | ১৩১ | ১৩২ | ১৩২ |
খ) বিদেশে | ০ | ০ | ০ |
কৃষিখাতে | |||
ক) ঋণ বিতরণ | ২৭৭৪.১ | ২৪৩৬.৬ | ৪৩৬৭.১ |
খ) আদায় | ৪৫৮৫.৯ | ৩২৯৬.৭ | ৪৫২২.৭ |
শিল্প খাতে | |||
ক) ঋণ বিতরণ | ১৯৫৬২৬.৭ | ১৭৮৩০১.৬ | ১২৮০০২.২ |
খ) আদায় | ১৬৮২৭৮.৯ | ১৭১৮২৪.৪ | ১০৯৫১১.৮ |
খাত ভিত্তিক ঋণের স্থিতি | |||
ক) কৃষি ও মৎস্য | ১০২১.৫ | ৮৯৯.৪ | ৭৫৯.৮ |
খ) শিল্প | ৪৫১৬৭.৯ | ৫০৪৬৮.৬ | ৬০৯১৭.৮ |
গ) ব্যবসা বাণিজ্য | ৩১৩৩১.৩ | ৩৪১৩৪.৮ | ২৯৮৭১.৪ |
ঘ) দারিদ্র্য বিমোচন | ৪২.৬ | ৩৭.৫ | ৪০ |
সি.এস.আর | ৭৫.৩ | ১৪৪.৩ | ২৪৯.৩ |
উৎস আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার, বার্ষিক প্রতিবেদন, ২০১৯-২০২০ ও ২০২০-২১।
সিটি ব্যাংক লিমিটেড সর্বপ্রকার বাণিজ্যিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে। প্রধান ব্যবসায় হিসেবে ব্যাংকটি আমানত সংগ্রহ, ঋণদান এবং বৈদেশিক বাণিজ্যের ওপর অধিকতর গুরুত্বারোপ করে আসছে।
সিটি ব্যাংক লিমিটেড প্রধান কার্যালয়ের চারটি ব্যবসায়িক বিভাগ থেকে দেশের সকল শাখার কার্যক্রম কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। বিভাগগুলি হলো (১) কর্পোরেট এবং বিনিয়োগ ব্যাংকিং; (২) রিটেইল ব্যাংকিং; (৩) এসএমই ব্যাংকিং; এবং (৪) ট্রেজারি এবং মার্কেট রিস্ক। সার্বক্ষণিক ব্যাংকিং প্লাটফরম হিসেবে শক্তিশালী প্রযুক্তি উৎকর্ষতার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় এই চার বিভাগ থেকে সকল কার্যক্রম এমনভাবে সমন্বয় সাধিত হয় যে, গ্রাহকদেরকে সুচারুরূপে সর্বোচ্চ সেবা প্রদান নিশ্চিত করা হয়ে থাকে।
সিটি ব্যাংক বাংলাদেশে দ্বৈত মুদ্রায় ক্রেডিট কার্ড ইস্যুকারী প্রথম ব্যাংক। ব্যাংকাটি বাংলাদেশে ভিসা ইন্টারন্যাশন্যাল-এর প্রধান সদস্য এবং স্থানীয় মুদ্রা (টাকা) এবং বিদেশি মুদ্রা (মার্কিন ডলার) সুবিধা সম্বলিত একক প্লাস্টিকের কার্ড ইস্যু করেছে। ভিসা ডেবিট কার্ড ইস্যুর মাধ্যমে লাইনে দাঁড়িয়ে ব্যাংক সুবিধা গ্রহণের বিড়ম্বনাকে দূর করতে সহায়ক হয়েছে।
২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে সিটি ব্যাংক আমেরিকান এক্সপ্রেস ক্রেডিট কার্ড এবং আমেরিকান এক্সপ্রেস গোল্ড কার্ড ইস্যু করে। বাংলাদেশের আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ডের বিপণন, নগদায়ন, হিসাবায়ন, প্রত্যাবসনসহ সকল বিষয় ব্যববস্থাপনার দায়িত্ব পেয়েছে সিটি ব্যাংক। সিটি ব্যাংক বাংলাদেশে আমেরিকান এক্সপ্রেসের কার্ড হোল্ডারদের বিশেষ সেবাসহ নানান সুযোগ সুবিধারও ব্যবস্থা করেছে।
সিটি ব্যাংক লিমিটেড বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্স প্রত্যাবসনসহ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য লেনদেনে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে ফরেন একচেঞ্জ ব্যবসায় অনলাইন ব্যবস্থায় অনেকগুলি সংযোগ চুক্তিতে আবদ্ধ।
২০১৯ সালে ব্যাংকের আমানত ও ঋণ অগ্রিমের স্থিতির অংশ ছিল ব্যাংকিং খাতের মোট আমানত ও ঋণ অগ্রিমের স্থিতির যথাক্রমে ১.৯ এবং ২.৩ শতাংশ এবং আমানত ও ঋণ অগ্রিমের গড় সুদহার ব্যবধান দাঁড়ায় ৪.০ শতাংশ। [মোহাম্মদ আবদুল মজিদ]