বান্দরবান জেলা
বান্দরবান জেলা (চট্টগ্রাম বিভাগ) আয়তন: ৪৪৭৯.০১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°১১´ থেকে ২২°২২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°০৪´ থেকে ৯২°৪১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে রাঙ্গামাটি জেলা, দক্ষিণে আরাকান (মায়ানমার), পূর্বে চিন প্রদেশ (মায়ানমার) এবং রাঙ্গামাটি জেলা, পশ্চিমে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা। জেলার মারমিয়ানা তাং, বথিল তাং, কেওক্রাডং, লাংফি তাং, লাকপাং ডং, থাইংকিয়াং তাং, মৌডাক তাং, মুরাংজা তাং, রুংরাং তাং, নাপরাই তাং, মুরিফা তাং, বুসি তাং ও সারা তাং পাহাড় উল্লেখযোগ্য।
জনসংখ্যা ৩৮৮৩৩৫; পুরুষ ২০৩৩৫০, মহিলা ১৮৪৯৮৫। মুসলিম ১৯৭০৮৭, হিন্দু ১৩১৩৭, বৌদ্ধ ১২৩০৫২, খ্রিস্টান ৩৯৩৩৩ এবং অন্যান্য ১৫৭২৬। এ জেলায় মারমা, চাকমা, বম, মুরং, ত্রিপুরা, খ্যাং, খুমি, লুসাই প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
জলাশয় প্রধান নদী: সাঙ্গু ও মাতামুহুরী।
প্রশাসন বান্দরবান জেলা গঠিত হয় ১০ অক্টোবর ১৯৮১ সালে। চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার মধ্যে বান্দরবান জেলার অবস্থান তৃতীয়। জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে থানচি উপজেলা সর্ববৃহৎ (১০২০.৮২ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা রোয়াংছড়ি (৪৪২.৮৯ বর্গ কিমি)।
জেলা | |||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | উপজেলা | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
শহর | গ্রাম | ||||||||
৪৪৭৯.০১ | ৭ | ২ | ৩০ | ৯৬ | ১৫৫৪ | ১০০৪২৩ | ২৮৭৯১২ | ৮৭ | ৩৫.৯ |
জেলার অন্যান্য তথ্য | |||||||||
উপজেলার নাম | আয়তন(বর্গ কিমি) | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
আলীকদম | ৮৮৫.৭৭ | - | ২ | ৭ | ১৬৮ | ৪৯৩১৭ | ৫৬ | ৩১.৩ | |
থানচি | ১০২০.৮২ | - | ৪ | ১১ | ১৭৮ | ২৩৫৯১ | ২৩ | ২৬.৯ | |
নাইক্ষ্যংছড়ি | ৪৬৩.৬০ | - | ৪ | ১৭ | ২৩৭ | ৬১৭৮৮ | ১৩৩ | ৩১.৩ | |
বান্দরবান সদর | ৫০১.৯৮ | ১ | ৫ | ১৬ | ২২৫ | ৮৮২৮২ | ১৭৬ | ৪৯.৩ | |
রুমা | ৪৯২.০৯ | - | ৪ | ১৪ | ২২৫ | ২৯০৯৮ | ৫৯ | ২৮.৯ | |
রোয়াংছড়ি | ৪৪২.৮৮ | - | ৪ | ১৩ | ১৭৮ | ২৭২৬৪ | ৬২ | ৩১.০ | |
লামা | ৬৭১.৮৩ | ১ | ৭ | ১৮ | ৩৪৩ | ১০৮৯৯৫ | ১৬২ | ৩৪.০ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলায় পাকবাহিনী ব্যাপক গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও নির্যাতন চালায়। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমক্রু পাড়া ও সোনাইছড়ি জুমখোলাপাড়াতে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্থায়ী ক্যাম্প ছিল। বান্দরবান জেলায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে ২টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন স্মৃতিস্তম্ভ ২।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৫.৯%; পুরুষ ৪০.৩%, মহিলা ৩০.৯%। কলেজ ৫, কারিগরি কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩০২, কমিউনিটি বিদ্যালয় ২৮, কিন্ডার গার্টেন ৭, মাদ্রাসা ১০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বান্দরবান টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বান্দরবান সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, আলীকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, আলীকদম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নাইক্ষ্যংছড়ি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, রুমা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, থানচি উচ্চ বিদ্যালয়, বান্দরবান আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬১.৯৫%, অকৃষি শ্রমিক ৭.০০%, শিল্প ০.৪৮%, ব্যবসা ৯.৯২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.১১%, নির্মাণ ১.০৮%, ধর্মীয় সেবা ০.২৬%, চাকরি ৮.১২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৭% এবং অন্যান্য ৯.৭১%।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: নতুন বাংলাদেশ, সচিত্র; পাক্ষিক: সাংগু; মাসিক: বান্দরবান, নীলাচল, চিম্বুক।
লোকসংস্কৃতি রথযাত্রা, থালা নৃত্য, জুম উৎসব, বাঁশ নৃত্য, বৈসুক, সাংগ্রাই, বিঝু, জারিগান, সারিগান, কবিগান উল্লেখযোগ্য।
দর্শনীয় স্থান মেরাইনডং পাহাড় (আলিকদম), স্বর্ণমন্দির (বান্দরবান সদর), বি এল আর আই (নাইক্ষ্যংছড়ি), তজিনডং, কেওক্রাডং (রুমা)। [আতিকুর রহমান]
আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বান্দরবান জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; বান্দরবান জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।