অঙ্কুরোদগম
অঙ্কুরোদগম (Germination) বীজের অঙ্কুরোদগম হলো সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে বিভিন্ন উদ্ভিদ প্রজাতি একটি একক বীজ থেকে উদ্ভিদে পরিণত হয়। বীজের অঙ্কুরোদগমের একটি সাধারণ উদাহরণ হলো একটি এঞ্জিওস্পার্ম বা জিমোনস্পার্মের বীজ থেকে একটি চারা অঙ্কুরিত হওয়া। বীজের অঙ্কুরোদগম প্রক্রিয়ায় তিনটি ধাপ রয়েছে, যেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে বীজ দ্রুত পানি গ্রহণ করে এবং এর ফলে বীজ আবরণ ফুলে যায় এবং নরম হয়। বীজ তার অভ্যন্তরীণ শারীরবৃত্তিকে সক্রিয় করে এবং শ্বাস-প্রশ্বাস শুরু করে এবং প্রোটিন উৎপাদন করে এবং সঞ্চিত খাদ্যকে বিপাক করে। দ্বিতীয় ধাপে বীজ আবরণ ফেটে যাওয়ার মাধ্যমে মূল শিকড় গঠনের জন্য রেডিকেল বের হয়। বীজ ভূগর্ভস্থ পানি শোষণ শুরু করে। পরবর্তীতে রেডিকেল এবং প্লুমূলের উত্থানের পরে অঙ্কুর উপরের দিকে বাড়তে শুরু করে। চূড়ান্ত পর্যায়ে বীজের অঙ্কুরোদগম ঘটে যেখানে বীজের কোষ বিপাকীয়ভাবে সক্রিয় হয়, লম্বা হয় এবং চারা জন্ম দিতে বিভাজিত হয়।
বীজের অঙ্কুরোদগমের জন্য পানি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি প্রোটোপ্লাজমের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়াকলাপের জন্য প্রয়োজনীয় পানিযোজন সরবরাহ করে, ক্রমবর্ধমান ভ্রুণের জন্য দ্রবীভূত অক্সিজেন সরবরাহ করে, বীজের আবরণ নরম করে এবং বীজের ব্যাপ্তিযোগ্যতা বৃদ্ধি করে। এটি বীজের আবরণ ফেটে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সাহায্য করে এবং অদ্রবণীয় খাদ্যকে দ্রবণীয় আকারে রূপান্তরিত করে ভ্রুণে স্থানান্তর করে থাকে। মাটির কণার ছিদ্রগুলিতে অক্সিজেন অবস্থান করে এবং অক্সিজেন বীজের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য উৎস। এটি অঙ্কুরিত বীজের জন্য বিপাকীয় কাজে প্রয়োজনীয় এবং এডিট বায়বীয় শ্বাস-প্রশ্বাসের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয় যতক্ষণ না এটি নিজের সবুজ পাতা জন্মাতে সক্ষম হয়। বীজ অঙ্কুরিত হওয়ার জন্য প্রায় ২৫-৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। এটি সত্য যে বিভিন্ন বীজের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। আলো একটি পরিবেশগত ট্রিগার হিসেবে কাজ করে যেখানে অনেক বীজ অঙ্কুরিত হয় না যতক্ষণ না সূর্যের আলো তাদের উপর পড়ে। [মো. জসিম উদ্দিন]