ফুড টক্সিকোলজি
ফুড টক্সিকোলজি (Food Toxicology) আলোচনা করে কীভাবে বিভিন্ন খাদ্য পণ্যে প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম বিষ এবং বিষাক্ত পদার্থ জীবন্ত প্রাণীর জন্য ক্ষতিকারক, ক্ষতিকর বা প্রতিক‚ল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। খাদ্য বিষাক্ত বিদ্যা/বিষ-বিজ্ঞান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয় কারণ খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলটি আরও বহুজাতিক হয়ে উঠছে, এবং যে কোনো দূষণ বা বিষাক্ত প্রাদুর্ভাব গুরুতর ও বিস্তৃত বিরূপ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। ফুড টক্সিকোলজি খাদ্য নিরাপত্তা এবং বিষাক্ততার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে, যার মধ্যে প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য, প্রভাব, এবং খাদ্যে বিষাক্ত পদার্থের সনাক্তকরণ এবং মানুষের মধ্যে তাদের রোগের বহিঃপ্রকাশের অধ্যয়ন অন্তর্ভুক্ত। এই আলোচনায় ভোক্তা-পণ্য নিরাপত্তার অন্যান্য দিকও অন্তর্ভুক্ত থাকে। নিম্নলিখিত বিষয়গুলি খাদ্যে উপস্থিত বিষাক্ত পদার্থের তিনটি প্রধান শ্রেণীবিভাগকে তুলে ধরে: ১. প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত বিষাক্ত পদার্থ ২. অণুজীব থেকে আসা বিষাক্ত পদার্থ ৩. বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ও কীটনাশক।
প্রাকৃতিক টক্সিন একজাতীয় বিষাক্ত যৌগ যা প্রাকৃতিকভাবে জীবিত জীব দ্বারা উৎপাদিত হয়। এই বিষাক্ত পদার্থগুলি ঐ জীবের জন্য ক্ষতিকর নয়, তবে এগুলি মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীর জন্য বিষাক্ত হতে পারে। উদাহরণ- বিষাক্ত মাশরুম, লেকটিন ইত্যাদি।
মাইক্রোবিয়াল টক্সিন বা অণুজীবঘটিত বিষাক্ত পদার্থ হলো ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক দ্বারা উৎপাদিত টক্সিন। মাইক্রোবিয়াল টক্সিন সরাসরি টিস্যুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং ইমিউন সিস্টেমকে অক্ষম করে সংক্রমণ এবং রোগ সৃষ্টি করে। কিছু ব্যাকটেরিয়াল টক্সিন, যেমন বোটুলিনাম নিউরোটক্সিন, সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাকৃতিক টক্সিন হিসেবে পরিচিত।
কীটনাশকের বিষাক্ততা তার কার্যকারিতা এবং অন্যান্য কারণের উপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, কীটনাশক (insecticides) মানুষের প্রতি হার্বিসাইডের (herbicides) চেয়ে বেশি বিষাক্ত হতে পারে। একই রাসায়নিকের বিভিন্ন মাত্রায় বিভিন্ন প্রভাব থাকতে পারে (একজন ব্যক্তি কতটা রাসায়নিকের সংস্পর্শে এসেছে)। এটি যেভাবে সংস্পর্শে আসে, তার উপরও নির্ভর করতে পারে (যেমন গিলে ফেলা, শ্বাস নেওয়া বা ত্বকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ)। [হোসাইন উদ্দীন শেখর]