ডেনটিফ্রিস
ডেনটিফ্রিস (Dentifrice) একটি পাউডার, পেস্ট বা তরল পদার্থ, যা টুথব্রাশের সহায়তায় ব্যবহার করে দাঁতের দাগ ও দাঁতের ফাঁকে লেগে থাকা খাদ্যকণা পরিষ্কার করা হয়, প্ল্যাক বা দাঁতের উপর সাদা পদার্থের জমে ওঠা কমানো যায়, দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করে দাঁত মজবুত রাখা যায়, দাঁতের সংবেদনশীলতা উপশম করা যায় এবং মুখ দুর্গন্ধমুক্ত, সতেজ ও পরিষ্কার করা যায়।
রোমানরা ঐতিহাসিকভাবে টুথ পাউডারকে ডেনটিফ্রিস হিসেবে ব্যবহার করতো। তারা বিভিন্ন ধরনের বস্তু যেমন পশুর হাড় ও শিং, কাঁকড়া, ঝিনুকের খোলস এবং ডিমের খোসা পুড়িয়ে তা দিয়ে টুথ পাউডার তৈরি করত। বাংলাদেশ ও ভারতের গ্রাম অঞ্চলে কাঠকয়লা, ইট ও লবন দিয়ে তৈরি পাউডার জাতীয় পদার্থ দাঁত পরিষ্কারের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আধুনিক যুগে টুথ পাউডার হিসেবে বেকিং সোডার ব্যবহার অতি প্রচলিত।
টুথপেস্ট বহুল ব্যবহৃত একটি ডেনটিফ্রিস যা মুখের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় বহুবিধ কাজ করে। টুথপেস্টের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হচ্ছে abrasive, humectant, binder এবং surfactant । Abrasive একটি কঠিন পরিষ্কারক উপাদান যা দাঁতের উপর জমে ওঠা সাদা পদার্থ, দাঁতের ফাঁকে লেগে থাকা খাদ্যকণা এবং দাঁতের দাগ অপসারণে সহায়তা করে। Humectant এক বা একাধিক তরল পদার্থ দ্বারা গঠিত হয় যাতে ডেনটিফ্রিসের অন্যান্য উপাদান দ্রবীভুত থাকে। Binder ডেনটিফ্রিস সংরক্ষণকালীন এর তরল ও কঠিন উপাদানসমূহকে আলাদা হয়ে যাওয়া রোধে সহায়তা করে। Surfactant ডেনটিফ্রিস ব্যবহারকালীন ফোম তৈরি ও আরামদায়ক অনুভ‚তি প্রদান করে। ডেনটিফ্রিসে Flavor বা সুগন্ধি ব্যবহার করা হয় যা সুন্দর স্বাদ প্রদান করে এবং মুখের সতেজতা প্রদানে ভূমিকা রাখে। এছাড়া আরও কিছু উপাদান ডেনটিফ্রিস প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হয়, যেমন দাঁতের ক্ষয় কমাতে ফ্লোরাইড, মাড়ির প্রদাহ উপশমে জিংক সাইট্রেট এর সহিত ট্রাইক্লোসান, দাঁতে পাথুরি সৃষ্টি কমাতে পাইরোফসফেট এবং ঝকঝকে দাঁতের জন্য পারঅক্সাইড। কিছু কিছু ডেনটিফ্রিসে পটাশিয়াম নাইট্রেট যোগ করা হয় যা সংবেদনশীল দাঁতের জন্য উপকারী। একটি ভালো ডেনটিফ্রিস অনেকভাবে উপকার করে। মুখ ও দাঁতের সমস্যাসমূহ সমাধানে সহায়ক এমন একটি ভালো মানের ডেনটিফ্রিস প্রত্যেকের ব্যবহার করা উচিত। [হুসাইন মো. শাহজালাল]