ময়নাতদন্ত
ময়নাতদন্ত (Autopsy) বলতে বোঝায় মৃতদেহের এক বিশেষ ধরনের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা, যা রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে ও আইনগত অনুমতি সাপেক্ষে করা হয়ে থাকে। অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক মৃত্যুর ক্ষেত্রে মৃত্যুর প্রক্রিয়া, কারণ শনাক্তকরণ ও সময় নির্ধারণের জন্য এবং রাষ্ট্রের নাগরিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। ময়নাতদন্তকে ‘পোস্টমর্টেম পরীক্ষা’ বা ‘নেক্রোপসি’ও বলা হয়। Autopsy: Autos (স্বয়ং) Opis (দর্শন); তাই আক্ষরিক অর্থে ময়নাতদন্ত মানে প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ। Post-mortem examination: Post (পরবর্তী) + mortem (মৃত্যু) + examination (পরীক্ষা)। সুতরাং এর অর্থ মৃত্যু-পরবর্তী পরীক্ষা। Necropsy: Necros (মৃত্যু) + Opis (দর্শন)।
বাংলাদেশে আইনি কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শুধুমাত্র medico-legal ধরনের ময়নাতদন্ত করা হয়। অস্বাভাবিক এবং সন্দেহজনক মৃত্যুর আংশিক বা সমস্ত তথ্য উদঘাটন করা এই পদ্ধতির মূল লক্ষ্য। তদন্ত হতে প্রাপ্ত তথ্য বিচার প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য আইনি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। ভুল ময়নাতদন্ত মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এটি ন্যায়বিচারকে বাধাগ্রস্ত করে।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ৩টি অংশ রয়েছে: (১) প্রস্তাবনা- এতে ময়নাতদন্ত আদেশকারী কর্তৃপক্ষ এবং মৃত ব্যক্তির আনুষঙ্গিক বিবরণ উল্লেখ থাকে; (২) প্রতিবেদনের মূল অংশ- এটি বর্ণনাসমেত সম্পূর্ণ বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ ফলাফল নিয়ে গঠিত; (৩) উপসংহার- ময়নাতদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে মৃত্যুর কারণ এতে উল্লেখ থাকে। মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ততা এবং স্পষ্ট ভাষার ব্যবহার অনিবার্য। বাংলাদেশে ময়নাতদন্ত শুধুমাত্র সরকারি মেডিকেল কলেজ এবং জেলা পর্যায়ে অনুমোদিত কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে অনুমোদিত নয়। [মো. হুমায়ুন কবির]