সংক্রমণ-প্রতিরোধক
সংক্রমণ-প্রতিরোধক (Anti-infection) শরীরের অভ্যন্তরে কোনো অণুজীব যেমন ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস এবং পরজীবির অনুপ্রবেশ ও বংশবৃদ্ধিকে সংক্রমণ বলে। সংক্রমণ-বিরোধী বা সংক্রমণ-প্রতিরোধক হল এমন কিছু দ্রব্য বা সামগ্রী যা কোনো সংক্রামকের বিরুদ্ধে কাজ করে, তার সংক্রমণ বিস্তার রোধ করে অথবা তাকে সরাসরি ধ্বংস করে দেয়। এর প্রতিশব্দ হল এন্টিসেপটিক, জৈবনাশক, স্যানিটাইজার, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল এবং এন্টিফাঙ্গাল। সর্বাধিক ব্যবহৃত সংক্রমণ-প্রতিরোধক হল অ্যান্টিবায়োটিক যা অণুজীব থেকে উৎপন্ন (কোন অণুজীব অপর কোনো অণুজীবকে ধ্বংস বা প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে এগুলো তৈরি করে); পেনিসিলিন, স্ট্রেপটোমাইসিন, ক্লোরামফেনিকোল ইত্যাদি অ্যান্টিবায়োটিকের উদাহরণ। কিছু আধা-কৃত্রিম বা অমৌলিক (ব্যুৎপন্ন) অ্যান্টিবায়োটিক প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক থেকে পরীক্ষাগারে উৎপন্ন করা হয়, যেগুলো মূল অ্যান্টিবায়োটিক থেকে অধিক কার্যকর (যেমন, অ্যাম্পিসিলিন)।
সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক মুখ দিয়ে খাওয়া, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শিরায় প্রবেশ করানো বা ত্বকে প্রয়োগ করা হয়। এদের কোনো কোনোটিকে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে জীবনরক্ষাকারী ঔষধ হিসেবে গণ্য করা হয়। অবশ্য কিছু সংখ্যক অণুজীব বহুবিধ অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ করার সক্ষমতা অর্জন করার মধ্য দিয়ে মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যান্য সংক্রমণ-বিরোধী বা সংক্রমণ-প্রতিরোধক সামগ্রী হতে পারে পরীক্ষাগারে উৎপন্ন যৌগ, রাসায়নিক পদার্থ বা ঔষধ। জৈবনাশক হচ্ছে এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থ যা কোনো কিছুর উপর প্রয়োগ করে জীবাণুমুক্ত করা হয়, এবং এন্টিসেপটিক ত্বকের উপরিভাগে প্রয়োগ করে জীবানু ধ্বংস করা হয়, আর স্যানিটাইজার দিয়ে সাধারণত হাত বা কাপড় জীবাণুমুক্ত করে পরিষ্কার করা হয়। অ্যান্টিভাইরাল ও এন্টিফাঙ্গালগুলো সচরাচর এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থ যেগুলো যথাক্রমে ভাইরাস এবং ফাঙ্গাস এর বিরুদ্ধে কার্যকর। অতএব, সংক্রমণ-বিরোধী বলতে সর্বোত্তমভাবে এক কথায় বোঝানো হয় এমন কিছু দ্রব্য যা সংক্রমণ প্রতিরোধের কাজে ব্যবহার করা হয়। [লায়লা নূর ইসলাম]