খান, আবদুর রশিদ
খান, আবদুর রশিদ (? -১৯৪৪) রাজনীতিবিদ, প্রকাশক। সুভাষচন্দ্র বসু যখন কলকাতা কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা তখন আবদুর রশিদ খান কর্পোরেশনের উপ-নির্বাহি কর্মকর্তা পদে রাজনৈতিক দীক্ষা পান। এ সময়ে কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ছিলেন চিত্তরঞ্জন দাশ। আবদুর রশিদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯১৭ সালে তিনি বি.এ পাস করেন এবং পুস্তক প্রকাশক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। তখন খুব কম সংখ্যক মুসলমানকে এ পেশায় দেখা যেত। তিনি বেঙ্গল প্রভিন্সিয়াল লাইব্রেরি নামে কলকাতায় তাঁর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। কংগ্রেস সমর্থক হিসেবে তিনি অসহযোগ আন্দোলন ও খিলাফত আন্দোলনএ অংশ নেন। এ সময়ে তিনি জাতীয়তাবাদী মুসলিম নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কাজ করেন। এ নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন আবুল কালাম আজাদ, মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ আকরম খাঁ, ওয়াজেদ আলী খান পন্নী ও পীর বাদশা মিয়া প্রমুখ। রাজনৈতিক তৎপরতার কারণে তিনি একবার গ্রেফতার হন। বাংলার কংগ্রেসকর্মী হিসেবে তিনি ছিলেন চিত্তরঞ্জন দাশের স্বরাজ্য পার্টির সদস্য। ১৯২৩ সালে বেঙ্গল প্যাক্ট সম্পাদনে আবদুর রশিদের বেশ অবদান ছিল।
কংগ্রেস থেকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার উদ্দেশ্যে তিনি অন্যান্য স্বরাজ্য নেতা মুজিবুর রহমান, হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী, আকরম খাঁ ও মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর সঙ্গে মিলে বেঙ্গল মোসলেম কাউন্সিল পার্টি নামে আরেকটি দল গঠন করেন। মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষায় কংগ্রেসের ব্যর্থতার প্রতিবাদে ১৯২৬ সালের শেষের দিকে তিনি বেঙ্গল প্রাদেশিক কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন এবং কংগ্রেস কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। আবদুর রউফ দানাপুরী ও এইচ.এস সোহ্রাওয়ার্দী দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট মুসলিম পার্টি গঠন করলে আবদুর রশিদ এ দলের নির্বাহি কমিটির সদস্য হন। কৃষক প্রজা পার্টিরও তিনি অন্যতম সংগঠক ছিলেন। ১৯৩৭ সালের নির্বাচনের সময় তিনি এ পার্টির নির্বাচনী বোর্ডের সহ-সভাপতি ছিলেন। ১৯৪০ সালে আবদুর রশিদ খান বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৪ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। [গোলাম কিবরিয়া ভূইয়া]