ইডেন, স্যার অ্যাশ্লি
ইডেন, স্যার অ্যাশ্লি (১৮৩১-১৮৮৭) বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর (১৮৭৭-৮২)। জন্ম ১৮৩১ সালের ১৩ নভেম্বর। তিনি রাগবি, উইনচেস্টার ও হেলিবেরিতে শিক্ষালাভ করেন। বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসের সদস্য হিসেবে অ্যাশ্লি ইডেন ১৮৫২ সালে কলকাতা পৌঁছেন। তিনি ভারতের গভর্নর জেনারেল লডট্ট অকল্যান্ড-এর (১৮৩৬-৪২) ভ্রাতুষ্পুত্র।
চাকরি জীবনে ১৮৫৫ সালে বাংলার সাঁওতাল বিদ্রোহ দমনের ক্ষেত্রে তিনি দক্ষতার পরিচয় দেন। বাংলা সরকারের সচিব (১৮৬০-৭১) নিযুক্ত হওয়ার পূর্বে তিনি জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিভিন্ন উচ্চপদে আসীন ছিলেন। বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নরের পদ অলঙ্কৃত করার পূর্বে তিনি ব্রিটিশ বার্মার (১৮৭১-৭৭) চিফ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্যার ইডেন এর প্রশাসনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল, দুর্ভিক্ষ (১৮৭৭), ব্যবসায়-বাণিজ্য ও শিল্প কারখানার ওপর লাইসেন্স ফি ধার্যকারী বঙ্গীয় লাইসেন্স আইন (১৮৭৮), সিভিল সার্ভিসকে নির্বাহী ও বিচার-সংক্রান্ত শাখায় পৃথকীকরণ (১৮৭৮), দার্জিলিংয়ে বাষ্পীয় ট্রামপথ চালু করা, রেলপথের সম্প্রসারণ, খাজনা কমিশন (১৮৮০), শিক্ষা বিভাগকে পুনর্বিন্যস্ত করা, শিবপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠা (১৮৭৮), ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট (১৮৭৮), রাইটার্স বিল্ডিংয়ে নতুন বঙ্গীয় সচিবালয় স্থাপন এবং স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনকে জোরদার করার উদ্যোগ। ১৮৭৮ সালে তাঁর নামানুসারে ‘ঢাকা ফিমেল স্কুল’-এর নতুন নামকরণ হয় ইডেন গার্লস স্কুল।
স্যার অ্যাশ্লি ইডেনকে ১৮৭৪ সালে সি.এস.আই ও ১৮৭৮ সালে কে.সি.এস.আই পদবীতে ভূষিত করা হয়। অবসর গ্রহণের পর তিনি ১৮৮২ সালে ইন্ডিয়া কাউন্সিলে সদস্য হিসেবে যোগদান করেন। ১৮৮৭ সালের ৮ জুলাই তারিখে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি উক্ত পদে বহাল ছিলেন। [সিরাজুল ইসলাম]