শৈলকূপা উপজেলা
শৈলকূপা উপজেলা (ঝিনাইদহ জেলা) আয়তন: ৩৭৩.৪২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৩৪´ থেকে ২৩°৪৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০৭´ থেকে ৮৯°২৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে খোকসা ও কুমারখালী উপজেলা, দক্ষিণে ঝিনাইদহ সদর ও মাগুরা সদর উপজেলা, পূর্বে পাংশা ও শ্রীপুর (মাগুরা) উপজেলা, পশ্চিমে হরিণাকুন্ড এবং কুষ্টিয়া সদর উপজেলা।
জনসংখ্যা ৩৩১৮০৯; পুরুষ ১৭০৮৬১, মহিলা ১৬০৯৪৮। মুসলিম ২৯২৫২৮, হিন্দু ৩৯২৪১, বৌদ্ধ ১৫ এবং অন্যান্য ২৫।
জলাশয় প্রধান নদ-নদী: গড়াই, কুমার, ডাকুয়া, কালীগঙ্গা।
প্রশাসন শৈলকূপা থানা গঠিত হয় ১৮৬৩ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১৪ | ১৬৮ | ২৬৫ | ৩১৫১৫ | ৩০০২৯৪ | ৮৮৯ | ৪৭.২ | ৪৩.৪ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
২০.৯৩ | ৯ | ২৪ | ৩১৫১৫ | ১৫০৬ | ৪৭.৩ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
আবাইপুর ১০ | ৫৪৪৬ | ৯২৬৯ | ৯০৭৭ | ৪৭.৪৯ | ||||
উমেদপুর ৯৪ | ৮০০২ | ১৩৬৮৭ | ১২৫৫৬ | ৪৯.০৭ | ||||
কাঁচেরকোল ৫৬ | ৫২৯৫ | ১০৯০৯ | ১০৩৬২ | ৪১.০৯ | ||||
ত্রিবেনী ৮৮ | ৪৭৫০ | ১০২২৯ | ৯৩৪৮ | ৪৬.২১ | ||||
দিগনগর ২৫ | ৪৯৩৬ | ৯৩০২ | ৮৮৬৭ | ৪২.৮৭ | ||||
দুধসার ৩১ | ৭০৬৯ | ১২৪৭৮ | ১১৫১০ | ৪১.৯৬ | ||||
ঢালহারা চন্দ্র ১৮ | ৬৪৭৮ | ১২৭২৯ | ১২১৩১ | ৪৪.৬৪ | ||||
নিত্যানন্দপুর ৬৯ | ৮০৮১ | ১০৮৯৫ | ১০৩৯২ | ৪১.৮৭ | ||||
ফুলহরি ৪৪ | ৫১৯৫ | ১০৬১৪ | ৯৬৭৮ | ৪২.৬৬ | ||||
বগুড়া ১২ | ৫৯৩৮ | ৯৪২৬ | ৯০২৮ | ৪৬.১৬ | ||||
মনোহরপুর ৩৭ | ৪৯৭৬ | ৭৬৮৮ | ৭২৮৪ | ৪৭.৪৫ | ||||
মির্জাপুর ৬৩ | ৮৬১৭ | ১৪৭৪৬ | ১৩৬৭৯ | ৩৯.৭০ | ||||
সারুটিয়া ৭৫ | ৬৬৫১ | ১১৮০১ | ১১৬২৩ | ৪০.৭০ | ||||
হাকিমপুর ৫০ | ৫৬৭১ | ১০৬৫৫ | ১০৩৩১ | ৩৭.৪২ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ শৈলকূপা শাহী মসজিদ (১৫১৯-১৫৩১), হরিহরার গড় (হাকিমপুর ইউনিয়ন), রাম গোপাল মন্দির (বল্লাল সেনের শাসনামলে নির্মিত)।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল গাড়াগঞ্জে, ৪ আগস্ট আলফাপুরে, ১৩ অক্টোবর আবাইপুরে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই হয়। এসব অঞ্চলে পাকসেনারা নির্বিচারে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। মুক্তিযোদ্ধারা ৪ বার (৮ এপ্রিল, ৬ ও ১৭ আগস্ট এবং ১১ নভেম্বর) শৈলকূপা থানা আক্রমণ করে। ২৬ নভেম্বর কামান্না মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১ (কামান্না); স্মৃতিস্তম্ভ ২ (কবিরপুর)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩১২, মন্দির ১৬১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: শৈলকূপা শাহী মসজিদ, রাম গোপাল মন্দির।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৩.৭৩%; পুরুষ ৪৭.৭%, মহিলা ৩৯.৫%। কলেজ ১০, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৯, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫৬, স্যাটেলাইট প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩, স্বল্পব্যয়ী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১, মাদ্রাসা ৩৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শৈলকূপা সরকারি ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৩), শৈলকূপা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৩), নাগেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৮১), বেণিপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯০৬), ফলিয়া এস মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২২), ফুলহরি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৯), আবাইপুর রামসুন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৮৯), কাঁচেরকোল ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, ক্লাব ৪৫, মহিলা সংগঠন ১, সিনেমা হল ৩।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৫.০১%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৫৮%, শিল্প ২.৭২%, ব্যবসা ১৫.১৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪%, চাকরি ৪.৩৭%, নির্মাণ ০.৭৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৯% এবং অন্যান্য ৪.১০%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৪.১০%, ভূমিহীন ৩৫.৯০%। শহরে ৪৯.৪৭% এবং গ্রামে ৬৫.৬২% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পান, পাট, আখ, তুলা, ডাল, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি চীনা, তিল, তিসি, অড়হর।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, নারিকেল।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৬, গবাদিপশু ৪১, হাঁস-মুরগি ৪৮, নার্সারি ৫৪।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৪৩০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১২০ কিমি, কাঁচারাস্তা ১১২০ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, বরফকল, করাতকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, সূচিশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩০, মেলা ১। শৈলকূপা বাজার, ত্রিবেনী হাট, দিগনগর হাট, নিত্যানন্দপুর হাট, ফুলহরি হাট এবং রামগোপালের আড়ং মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য কলা, শাকসবজি।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২০.৫২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.৪১%, পুকুর ০.২৩%, ট্যাপ ০.৮৬% এবং অন্যান্য ৪.৫০%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৩.৬৮% (গ্রামে ২৩.১২% ও শহরে ২৯.০৬%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৬.৭৫% (গ্রামে ৪৬.৯৮% ও শহরে ৪৪.৫৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২৯.৫৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১৪।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, সৃজনী। [মো. মহেববুল্লাহ]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; শৈলকূপা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।